ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত, লাখো মানুষকে সরালো পাকিস্তান

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৯:১২ এএম
ভারত থেকে বাঁধের পানি ছাড়ার পর পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ছবি- সংগৃহীত

ভারত থেকে উপচেপড়া বাঁধের পানি ছাড়ার পর সীমান্তবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কায় লাখো মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান। মঙ্গলবার পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত গত সোমবার সম্ভাব্য সীমান্তবর্তী বন্যার বিষয়ে পাকিস্তানকে সতর্ক করেছিল। কয়েক মাস পর এটাই দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে প্রথম প্রকাশ্য কূটনৈতিক যোগাযোগ।

পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, তারা পাঞ্জাব প্রদেশের স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছে এবং ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

সংস্থাটির দেওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, পাঞ্জাবের কাসুর জেলা থেকে অন্তত ১৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বাহাওয়ালনগর শহর থেকে ৮৯ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের নদী, খাল ও নিম্নাঞ্চল থেকে দূরে থাকতে, অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে এবং গণমাধ্যম, মোবাইল ফোন ও এনডিএমএ’র দুর্যোগ সতর্কতা অ্যাপের মাধ্যমে প্রচারিত বার্তাগুলো অনুসরণ করতে আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বুনের জেলায় আকস্মিক পাহাড়ি ঢল ও মেঘভাঙা বৃষ্টিতে এ মাসের শুরুর দিকে অন্তত ৩০০ জনের মৃত্যু হয়। অনেক বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন, তারা কোনো সতর্কবার্তা পাননি। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, হঠাৎ মেঘভাঙা বর্ষণে এ বিপর্যয় তৈরি হয়।

এদিকে, দেশব্যাপী মৌসুমি বন্যা ও বৃষ্টিপাতে ২৬ জুন থেকে এখন পর্যন্ত ৮ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে প্রবল বর্ষণে অন্তত ৬৫ জন নিহত এবং শত শত মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে কাশ্মীরের ভয়াবহ বন্যায় পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছিলেন। তবে এবার সতর্কবার্তাটি পাকিস্তানকে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ায় বৃষ্টিপাত বেড়েছে। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল এবং প্রায় ১ হাজার ৭৩৯ জন নিহত হয়েছিলেন।