গভীর রাতে ঘরের বাইরে থেকে দরজা তালাবন্ধ করে পেট্রোল ঢেলে বাবা-মা ও ভাই-বোনকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সৎ ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আগুনে পুড়ে মৃত্যুও হয়েছে একজনের। ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের উদয়কৃষ্ণপুরের পশ্চিমপাড়ার। এতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে সৎ ছেলে এই হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। অভিযুক্ত বাবুল মিস্ত্রিকে আটক করেছে পুলিশ। সেও অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। তাকেও বর্ধমান মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর আজকাল ইন্ডিয়া।
দগ্ধ কৃষ্ণপদ মিস্ত্রি (৫০), তার দুই সন্তান বাদল মিস্ত্রি (১৩) ও কন্যা সুমিত্রা মিস্ত্রি (১০)। মারা গেছেন কৃষ্ণপদের স্ত্রী সন্ধ্যা মিস্ত্রী (৪২)। জানা গেছে, কৃষ্ণপদ মিস্ত্রি তার পরিবারকে নিয়ে ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। এরপর ভোর রাতে কৃষ্ণপদ মিস্ত্রির প্রথম পক্ষের ছেলে বাবুল মিস্ত্রি সেই সময় বাড়িতে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে পালায়। এই ঘটনায় সেও অগ্নিগ্ধ হয়।
স্থানীয়রা জানান, বাইরে তালা দিয়ে রাখার ফলে পরিবারের সদস্যরা কেউ ঘর থেকে বের হতে পারেননি। আগুন এবং পোড়া গন্ধ পেয়ে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। গ্রামের লোকজনই পুলিশকে খবর দেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে পাঠায় চিকিৎসার জন্য।
হাসপাতালে কৃষ্ণপদ মিস্ত্রির স্ত্রী সন্ধ্যা মিস্ত্রির মৃত্যু হয়। কৃষ্ণপদ ও তার ছেলে বাদলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জমি-জমা সংক্রান্ত পারিবারিক অশান্তির কারণেই প্রথম পক্ষের ছেলে বাবুল মিস্ত্রি এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
প্রতিবেশী সুব্রত মন্ডল জানান, ‘রাত পোনে তিনটা নাগাদ চিৎকার ও পোড়া গন্ধ পেয়ে আমরা ছুটে যাই। গিয়ে দেখি সকলে অগ্নিদদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। আমরা তাদের হাসপাতালে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করি। অন্যদিকে আর এক প্রতিবেশী সুবল মন্ডল জানান, প্রথমে ঘটনার কারণ বোঝা যাচ্ছিল না। পুলিশ এসে অনুসন্ধান শুরু করে। পুলিশের কাছেই বাবুল স্বীকার করে তাকে জায়গা কম দেওয়ায় তার ক্ষোভ ছিল। তাই সেই রাগে সে আগুন দিয়েছে।’
মৃতের ভাই হরিদাস সরকার জানান, ‘আমার বোন আর দুলাভাই বাইরে শুয়ে ছিল। তারা মারাত্মকভাবে পুড়ে যায়। বোন মারা গেছে। অন্যদিকে জামাইবাবু আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি আছেন। বাবুল মিস্ত্রি পেট্রোল ঢেলে সবাইকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল। সম্ভবত আগুন লাগাতে গিয়ে কোনোভাবে সেও আহত হয়েছে। তার হাত ও পা পুড়ে গেছে।’