ইরান পূর্বে তিনটি স্থানে গোপন পারমাণবিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে বলে এক গোপন প্রতিবেদনে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। সংস্থাটির মতে, এই স্থানগুলো ২০০০ সালের শুরুর দিকে পরিচালিত একটি অঘোষিত পারমাণবিক কর্মসূচির অংশ ছিল এবং সেখানে অঘোষিত পারমাণবিক উপাদান ব্যবহারের প্রমাণও মিলেছে।
এই সংবেদনশীল প্রতিবেদনটি বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) হাতে এসেছে, যা আইএইএ’র বোর্ড অব গভর্নরদের অনুরোধে তৈরি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘এই তিনটি স্থান ও অন্যান্য সম্ভাব্য সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলো ইরানের একটি গোপন কাঠামোগত কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেখানে পারমাণবিক উপাদান ব্যবহৃত হয়েছে কিন্তু ঘোষণা করা হয়নি।’
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৭ মে পর্যন্ত ইরান ৪০৮.৬ কিলোগ্রাম (৯০০.৮ পাউন্ড) ইউরেনিয়াম অর্থাৎ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করেছে। ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত আগের প্রতিবেদনে এই পরিমাণ ছিল ২৭৪.৮ কিলোগ্রাম (৬০৫.৮ পাউন্ড)। অর্থাৎ, মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে ১৩৩.৮ কিলোগ্রাম ইউরেনিয়াম যুক্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হওয়া মানে এটি অস্ত্র-গ্রেড স্তরের ৯০ শতাংশ থেকে খুব অল্প একটি কারিগরি ধাপ দূরে। এটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ঝুঁকিকে আরও প্রকট করে তুলেছে।
আইএইএ মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি এই পরিস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে বলেন, ‘ইরানই একমাত্র অ-পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র যা এত উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে।’ তিনি তেহরানের প্রতি সংস্থার সঙ্গে ‘সম্পূর্ণ ও কার্যকর সহযোগিতা’ করার জন্য আবারও জোরালো আহ্বান জানান।
বিশ্ব পরমাণু নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই প্রতিবেদন নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদসহ আন্তর্জাতিক মহলে এ নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে।