ইরানে হামলায় সমর্থন ও অংশ নেওয়ায় জর্ডান, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রকে বৈধ সামরিক লক্ষ্য হিসেবে গণ্য করবে তেহরান। আত্মরক্ষার অধিকার অনুযায়ী তারা হামলায় জড়িত দেশগুলোকে পাল্টা জবাব দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে শাফাক নিউজ এজেন্সি।
ইরান বলছে, অমানবিক ও অপরাধমূলক এ হামলা শুরু হওয়ার পর স্পষ্ট হয়েছে, অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক পক্ষ প্রকাশ্যে এবং গোপনে ইসরায়েলকে সমর্থন ও সহায়তা দিয়েছে।
দেশটি বলছে , জর্ডান, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র জেট বিমান, আকাশ প্রতিরক্ষা ও জাহাজ সরবরাহ করে এ হামলায় অংশ নিয়েছে।
ইরান বলছে, যেসব দেশ ও গোষ্ঠী এই ষড়যন্ত্রে জড়িত রয়েছে, তারা সবাইকে আত্মরক্ষার অংশ হিসেবে টার্গেট করা হতে পারে।
অন্যদিকে, আজারবাইজানে ও পারস্য উপসাগর এলাকায় মোসাদ ও অপরাধচক্রের কার্যক্রম এবং ইরানে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় গুপ্তচর ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর ভূমিকাও প্রকাশ্যে এসেছে।
এদিকে, এবার ইরানকে প্রতিহত করতে দেশটির ফরদো পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালানোর কথা ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ওই পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী বোমা ‘ব্যাংকার বাস্টার’ প্রয়োজন। আর এ কাজে ব্যবহার হতে পারে আমেরিকান বি-২ বোমারু বিমান।
নিউইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক ডেভিড ই সাঙ্গার এবং জনাথন সোয়ান লিখেছেন, ট্রাম্প যদি এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে আগান তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র নতুন একটি সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে। যদিও ট্রাম্প তার দুটি নির্বাচনি প্রচারে এ ধরনের সংঘাতে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে এ হামলা এড়ানো যেত বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘কী লজ্জাজনক এবং মানবজীবনের অপচয়। সহজভাবে বলতে গেলে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না।’
চলমান পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিনি সবাইকে একযোগে ও অবিলম্বে ইরানের রাজধানী তেহরান ত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন।
নিজস্ব মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি বারবার বলেছি! সবার অবিলম্বে তেহরান ছেড়ে যাওয়া উচিত!’
উল্লেখ্য, ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর ব্যর্থতার পর ওই অঞ্চল থেকে মার্কিন সেনা ও দূতাবাস থেকে কর্মী সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কারণ হিসেবে প্রকাশ্যে ‘আঞ্চলিক সহিংসতা’র কথা জানানো হয়। চলতি সপ্তাহের শুক্রবার ইরানে অতর্কিত হামলা করে ইসরায়েল। তারপরই ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়। ইসরায়েলকে হামলা চালানো থেকে বিরত রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধও জানায় ইরান।
আপনার মতামত লিখুন :