ইসরায়েলি হামলায় ইরানের আরও একজন পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানি গণমাধ্যম । এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১০ জন বিজ্ঞানী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানি কতৃপক্ষ।
নতুন নিহত বিজ্ঞানী ইসার তাবাতাবেই ঘোমশেহ । তাঁর মৃত্যুর খবর প্রথম প্রকাশ করে তেহরানের শরীফ ইউনিভার্সিটির নিউজলেটার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই নিউজলেটারে বলা হয়েছে, তিনি ‘গত সপ্তাহের শেষের দিকে নিজ বাড়িতে’ নিহত হন। হামলায় তাঁর স্ত্রী মানসুরেহ হাজিসালেম-ও নিহত হয়েছেন।
এর আগে ইরান সরকার আরও ৯ জন পারমাণবিক বিজ্ঞানীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন: ফেরেইদুন আব্বাসি , মোহাম্মদ মেহদি তেহরাঞ্চি ,আব্দুলহামিদ মিনোচেহর, আহমাদ রেজা জোলফাঘারি, আমিরহোসেন ফেঘ্ঘি, আকবর মোতাল্লেবিজাদে,আলি বাকাঈ কারিমি মানসুর,আসগারি, সাঈদ বোরজি ।
এদিকে, ইসরায়েলের টেলিভিশন চ্যানেল চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, সামরিক অভিযানে ইসরায়েলি বাহিনী একযোগে ৯ জন ইরানি পারমাণবিক বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে। এর কিছুক্ষণ পর নিহত হন দশম বিজ্ঞানী ইসার তাবাতাবেই ঘোমশেহ।
এদিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পরমাণুবিজ্ঞানীদের টার্গেট করে ইসরায়েলের অভিযানের নাম ছিল ‘নারনিয়া’। পুরো অভিযানে ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের নির্মূলের জন্য চারটি ভাগে ভাগ করেছিলেন। তাদের সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন অগ্রাধিকারে তালিকা করা হয়েছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সামরিক দক্ষতা সম্পন্ন এবং তাদের প্রতিস্থাপনে সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হবে, এমন ৯ বিজ্ঞানীকে হত্যায় তালিকার শীর্ষে স্থান দেওয়া হয়েছিল। এরপর ইসরায়েল গুরুত্ব অনুসারে একটি হিট লিস্ট তৈরি করেছিল। গোয়েন্দাদের সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই এই তালিকা করা সম্ভব হয়। হত্যার শিকার বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞরা পরমাণু কর্মসূচি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
জানা গেছে, এই অভিযানের পরিকল্পনা করতে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিমান বাহিনীর ১২০ জন সদস্যকে ‘ইউনিট ৮২০০’-এর একটি স্থাপনায় আনা হয়েছিল। জানুয়ারির মধ্যে কোনো সমাধান না পাওয়ায় চাপ বাড়তে থাকে। ঐকমত্য হয়েছিল যে, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়েই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
ইসরায়েলি এক সামরিক কর্মকর্তা বলেন, গত বছর আমরা একটি ‘টার্গেট ব্যাংক’ তৈরি শুরু করেছিলাম। সাফল্য আসে যখন আমরা একটি গোয়েন্দা ঘাঁটি এবং একটি বিমান বাহিনীর ঘাঁটি আবিষ্কার করি। তবে টার্গেট ব্যাংকে পর্যাপ্ত লক্ষ্যবস্তু ছিল না। প্রতিটি দলের নিজস্ব লক্ষ্য ছিল। পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যা করা এবং কমান্ড সেন্টার ও রাডার সিস্টেম ধ্বংস করা। তখনই অপারেশন ‘রাইজিং লায়ন’ শুরু হয়।
এ হামলার আগে ইরানিদের কাছে একটি বার্তা দিয়েছিল ইসরায়েল। বার্তাটিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয় যে , শাসনব্যবস্থার কিছু সদস্য ইসরায়েলকে অনুরোধ করছেন যেন ইরানকে আরেকটি গাজা বা লেবাননে পরিণত না করা হয়।