ঢাকা রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫

আমেরিকার বিরুদ্ধে ইরানের সঙ্গে যোগ দেবে না হিজবুল্লাহ

নিউজউইক
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৫, ০৫:৪৭ পিএম
সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইরানের পতাকা হাতে মিছিল করছেন কিছু লোক। ছবি- সংগৃহীত

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সরাসরি মার্কিন হামলার পর তেহরানের সঙ্গ ছাড়ছে লেবানন-ভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ইরানপন্থি গোষ্ঠীটির মুখপাত্র শনিবার এ বার্তা দিলেও আজ সোমবার সেটি প্রকাশ করেছে নিউজউইক। 

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এখনই কোনো প্রতিশোধমূলক হামলার পরিকল্পনা করছে না গোষ্ঠীটি। হিজবুল্লাহর মুখপাত্র বলেন, ‘ইরান একটি শক্তিশালী দেশ, যা নিজের নিরাপত্তা রক্ষা করতে সক্ষম। প্রয়োজনে আমেরিকা ও ইসরায়েলের মুখোমুখি হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির পর যেসব বিষয়ে সম্মতি হয়েছে, হিজবুল্লাহ সেগুলোর প্রতিশ্রুতি বজায় রেখেছে।’

গত নভেম্বরে ইসরায়েলের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হিজবুল্লাহ। এর আগের বছর ফিলিস্তিনের হামাস হঠাৎ ইসরায়েলের ওপর আক্রমণ চালালে ইরান-সমর্থিত প্রতিরোধ জোটের মাধ্যমে পুরো অঞ্চলে সংঘাত শুরু হয়।

তবে যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ একে অপরকে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ করে আসছে। সম্প্রতি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) লেবাননে হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব, বিশেষ বাহিনী ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।

তাদের দাবি, গোপন গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে ‘হিজবুল্লাহ আবারও তাদের সামরিক শক্তি গড়ে তুলতে চাইছে’,  থেকে এমনটিই জানা গেছে।

তবুও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ শুক্রবার (২০ জুন) সতর্ক করে বলেছেন, হিজবুল্লাহর মহাসচিব নাইম কাসেম ‘তার পূর্বসূরীদের কাছ থেকে শিক্ষা নেননি এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন’

তিনি বলেন, ‘লেবাননের প্রক্সিদের সতর্ক থাকতে ও বুঝতে হবে যে, ইসরায়েল তাদের হুমকিদাতা সন্ত্রাসীদের প্রতি ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছে।’

পরের দিন নিউজউইক-এর সঙ্গে কথা বলেন হিজবুল্লাহ মুখপাত্র। তিনি জোর দিয়েছেন যে, গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার পর কাসেম ইরানকে ‘সমর্থন’ করেছেন এবং ভবিষ্যতের পদক্ষেপগুলো গোষ্ঠীর গণনাকে প্রভাবিত করতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিজবুল্লাহর এই মুখপাত্র বলেন, ‘অতএব, বিষয়টি উন্নয়নের সাপেক্ষে রয়ে গেছে। তবে, ইরানের অবশ্যই নিজস্ব সামরিক ক্ষমতা রয়েছে।’

ট্রাম্প প্রথম ট্রুথ সোশ্যালের মাধ্যমে রোববার ভোরে (ইরানের স্থানীয় সময়) ঘোষণা করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনার উপর অত্যন্ত সফল আক্রমণ সম্পন্ন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ফোর্ডো, নাতানজ এবং ইস্ফাহান’।

ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন অভিযানের ওই ঘোষণা দেওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পরে আইডিএফ ইসরায়েলে উচ্চ সতর্কতা জারি করে। এবং জনসাধারণকে ‘প্রয়োজনীয় কার্যকলাপ’ ছাড়া অন্য কোনো কাজে জড়িত না হতে নির্দেশ দেয়।

মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে জাতিসংঘে ইরানি মিশন নিউজউইক-কে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি বিবৃতি শেয়ার করে। যেখানে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাইদ ইরাভানি জাতিসংঘের নেতৃত্বের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অপ্ররোচনামূলক ও পূর্বপরিকল্পিত আগ্রাসনে’র নিন্দা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইরানি মিশন জানিয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক আইনের এই সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও রক্তপিপাসু ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী করা হবে এবং এর গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে।’