দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান এক অদৃশ্য সীমারেখা ঘিরে নীরব উত্তেজনায় আবদ্ধ ছিল, যে রেখা অতিক্রম করলেই তা রূপ নিতে পারত সরাসরি সামরিক সংঘর্ষে।
পারস্য উপসাগর অঞ্চলে নতুন এক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক প্রেসিডেন্ট সবসময়ই এ সংঘর্ষ এড়িয়ে চলেছেন।
এবার সেই রীতি ভেঙে দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘শান্তির প্রতিশ্রুতিতে’ নির্বাচিত এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার দ্বিতীয় মেয়াদে এক অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সরাসরি হামলা চালিয়ে তিনি সেই বহু আলোচিত সীমারেখা অতিক্রম করলেন।
পুরোনো সব কূটনৈতিক নিয়ম-কানুন ভাঙার অভ্যাসে অভ্যস্ত ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে বিশ্লেষকেরা বলছেন, তার শাসনামলের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটি। এ হামলার মাধ্যমে শুধু মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, বরং বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি ও কৌশলগত স্থিতিশীলতায় এক ধরনের কম্পন সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে- কূটনৈতিক মঞ্চে উত্তেজনা, পেট্রোলিয়াম বাজারে অস্থিরতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভারসাম্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এ হামলার পরিণতিতে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে আরও গোপন, আরও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নেওয়ার প্রেরণা পেতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে বিপজ্জনক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে। এই আঘাত কি আসলে ইরানকে দুর্বল করল, না কি পারমাণবিক শক্তি হওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে আরও বেগবান করল?
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এক বিশ্লেষণে দাবি করেছিল, ইরান এখনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্রিয় চেষ্টা করছে না এবং একটি সম্পূর্ণ অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জনে তারা এখনো প্রায় তিন বছর দূরে।
তবে প্রাক্তন মার্কিন কূটনীতিক ও বিশ্লেষক ব্রেট ম্যাকগার্ক মনে করেন, ‘ইসরায়েলের এই আংশিক হামলা ইরানকে আরও আগ্রহী করে তুলতে পারে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনে।’