ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫

হারেৎজের প্রতিবেদন

ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ১ লাখ ফিলিস্তিনি নিহত

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম
জিএইচএফের বিতরণ কেন্দ্রের কাছে নিহতদের জানাজা নামাজ আদায় করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি- সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যা অঞ্চলটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ শতাংশ। ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎজ-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এই সংখ্যা হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ৫৬ হাজার ৩০০ নিহতের হিসাবের তুলনায় অনেক বেশি। হারেৎজ জানিয়েছে, সরাসরি বোমা হামলার পাশাপাশি অপুষ্টি, ঠান্ডা ও চিকিৎসা অভাবে পরোক্ষভাবে আরও বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধের কারণে গাজার স্বাস্থ্যখাত কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মৃত্যু সংখ্যাকে অতিরঞ্জিত বলে দাবি করে আসলেও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশ এ তথ্যকে ‘নির্ভরযোগ্য ও বরং সংযত হিসাব’ বলে মনে করছেন।

হারেৎজের প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের হোলোওয়ে কলেজের অর্থনীতিবিদ ও সংঘাত বিশ্লেষক অধ্যাপক মাইকেল স্পাগাট-এর এক জরিপ গবেষণার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গাজায় ২ হাজার পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করে চালানো ওই জরিপ অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৭৫ হাজার ২০০ জন সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই ইসরায়েলি হামলায় মারা যান।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলো নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু। এই অনুপাত বিশ্বের অন্যান্য সাম্প্রতিক সংঘাতের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। যেমন- কসোভোতে ২০ শতাংশ, সিরিয়ায় ২০ শতাংশ, সুদানে ২৩ শতাংশ এবং উত্তর ইথিওপিয়ায় ৯ শতাংশ।

অধ্যাপক স্পাগাট বলেন, ‘আমার ধারণা, গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ শতাংশ ইতোমধ্যে নিহত হয়েছে, যা একবিংশ শতাব্দীর কোনো সংঘাতে সবচেয়ে ভয়াবহ হার।’

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। যদিও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল বহুবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে, তবুও সহিংসতা বন্ধ হয়নি।

গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে।