ফিলিস্তিনে এখনো তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েলিরা। পশ্চিম গাজায় একটি ক্যাফে, স্কুল এবং খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে বোমা হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৯৫ জনকে হত্যা করেছে ইহুদিরা।
নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৬২ জন গাজা শহর এবং ভূখণ্ডের উত্তরে ছিলেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ।
আলজাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সোমবার (৩০ জুন) রাতে এমন ভয়ংকর হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সমুদ্র তীরবর্তী ‘আল-বাকা’ ক্যাফেটি অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যবহার করতেন। ক্যাফেটি সৈকতের ধারে তাঁবু দিয়ে তৈরি একটি খোলা জায়গায় ছিল। নিহতদের মধ্যে সাংবাদিক ইসমাইল আবু হাতাবসহ ক্যাফেতে জড়ো হওয়া নারী ও শিশুরাও উপস্থিত ছিলেন।
গাজার হামাস শাসিত সিভিল ডিফেন্সের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, উদ্ধারকারী দলগুলো আল-বাকা ক্যাফেটেরিয়া থেকে ২০ জনের লাশ এবং কয়েক ডজন আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে। পরবর্তীতে আরও ১৯ জন মারা গেছেন।
তিনি বলেন, বিমান হামলায় একটি গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।
ইয়াহিয়া শরীফ বলেন, ‘আমরা মানুষদের ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পেয়েছি। এই জায়গাটি কারো সাথে সম্পর্কিত ছিল না। কোনো রাজনীতি বা কোনো সামরিক সংস্থার সাথে সম্পর্কিত ছিল না। জন্মদিনের পার্টিতে শিশুসহ লোকজনে এটি পরিপূর্ণ ছিল।’
স্থানীয় একটি প্রোডাকশন কোম্পানির ক্যামেরাম্যান আজিজ আল-আফিফি বিবিসিকে বলেন, আমি ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ক্যাফেটির দিকে যাচ্ছিলাম, মাত্র কয়েক মিটার দূরে থাকতেই প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। আমি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। আমার সহকর্মীরা, যাদের সঙ্গে প্রতিদিন দেখা হতো, তারা সেখানে ছিলেন। দৃশ্যটি ছিল ভয়াবহ। চারদিকে শুধু লাশ, রক্ত আর চিৎকার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাক্টিভিস্টদের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র এলাকাটিতে আঘাত হানছে, যা একটি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ফুটেজে হামলার পরের দৃশ্য ধরা পড়েছে, যেখানে মাটিতে লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, আল-বাকা ক্যাফেটেরিয়া গাজার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে ইন্টারনেট, বসার জায়গা এবং কাজের পরিবেশ দেওয়ায় সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট এবং দূরবর্তী কর্মীদের জন্য একটি সুপরিচিত স্থান হয়ে উঠেছিল।