ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

অনাহারে গাজায় যুবকের মৃত্যু, ৫০ কেজি ওজন নেমেছিল ১৫ কেজিতে

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ১০:৪৮ এএম
অনাহারে মৃত্যুর আগে আদেল ফাওজি মাদি। ছবি-সংগৃহীত

গাজায় খাদ্য সংকট এখন দুর্ভিক্ষে রুপ নিয়েছে। উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে এ সপ্তাহে অপুষ্টিতে মারা গেছেন ২৭ বছর বয়সী আদেল ফাওজি মাদি। তাঁর শরীর এতটাই শুকিয়ে গিয়েছিল, মনে হচ্ছিল শুধু চামড়া আর হাড় অবশিষ্ট রয়েছে।

মৃত্যুর সময় আদেলের শরীর ছিল শীর্ণ, পেট ছিল ভেতরের দিকে ঢোকানো, হাড়গুলো বেরিয়ে এসেছিল আর মুখ ছিল ফ্যাকাশে। তাঁর এই দুর্বল দেহ গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর চলা ক্ষুধার যুদ্ধের এক করুণ সাক্ষী। ইসরায়েলের অবিরাম হামলার কারণে সেখানে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

আদেলের পরিবার জানায়, তারা কখনো ভাবেনি যে ২৭ বছর বয়সে আদেল এমন ‘কঙ্কালে’ পরিণত হবেন। তাঁর ওজন হবে মাত্র ১৫ কেজি!

আদেলের চাচাতো ভাই ইসমাইল মাদি তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদুলুকে জানান, তাঁর ওজন প্রায় ৫০ কেজি (১১০ পাউন্ড) ছিল, যা কমে মাত্র ১৫ কেজি (৩৩ পাউন্ড) হয়ে গিয়েছিল।ইসমাইলের মতে, ‘যদি সীমান্তগুলো খোলা থাকত এবং চিকিৎসা পাওয়া যেত, তাহলে আদেলের এমন পরিণতি হতো না। তাঁর ওজন ক্রমাগত কমছিল। কিন্তু আমাদের কিছুই করার ছিল না। কোনো ওষুধ ছিল না, পরিষ্কার পানি ছিল না। আমাদের কোনো আবেদনেই কেউ সাড়া দেয়নি।’

জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) গত সপ্তাহে সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলি অবরোধ অব্যাহত থাকায় গাজায় প্রতি তিনজনে একজন ফিলিস্তিনি অনাহারে দিন কাটাচ্ছে ।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, সবশেষ ২৪ ঘন্টায় ২ জনসহ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৫৯  ফিলিস্তিনি অনাহারে ও অপুষ্টিতে মারা গেছে।এদের মধ্যে কমপক্ষে ৯০ জন শিশু বলে জানায় মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় এক নৃশংস আক্রমণ শুরু করে, যেখানে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অবিরাম বোমা হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে।

গত সোমবার (২৮ জুলাই) ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা বিসেলেম ও ফিজিশিয়ান্স ফর হিউম্যান রাইটস-ইসরায়েল ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগ করেছে’। তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনে পদ্ধতিগত ধ্বংস ও ওই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্যসেবা-ব্যবস্থা ইচ্ছাকৃতভাবে ভেঙে ফেলার কথা উল্লেখ করেছে।