দখলদার ‘ইসরায়েল’-এর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধের’ ডাক দিয়েছে হারেদি (অতি গোঁড়া) সংবাদপত্র ইয়েতেড নে'ইমান।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে প্রকাশিত পত্রিকার প্রথম পাতায় এই ‘যুদ্ধ’ আহ্বান করা হয়েছে।
জেরুজালেম পোস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পত্রিকাটির প্রথম পাতার মাঝখানে বড় অক্ষরে লেখা ছিল ‘যুদ্ধ’ শব্দটি, যার নিচে লেখা ছিল ‘যখন ইসরায়েল লাল রেখা অতিক্রম করে, তখন তাকে তোরাহর জগতের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে।’
‘ইসরায়েলি’ প্রতিরক্ষা বাহিনীতে (আইডিএফ) হারেদি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সরকার ও অতি-অর্থোডক্স দলগুলোর মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে পত্রিকাটির এমন প্রতিবেদন আগুনে ঘি ঢালার মতো।
ইয়েতেড নে'ইমান পত্রিকাটি লিথুয়ানিয়ান হারেদি দল দেগেল হাতোরাহ-এর মুখপত্র, যা ইউনাইটেড তোরাহ জুডাইজম (ইউটিজে) দলের অংশ। হারেদি নিয়োগ আইন সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ইউটিজে গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি সরকার ও জোট ত্যাগ করেছিল।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দুই ইয়েশিভা শিক্ষার্থীকে ড্রাফট ফাঁকির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরই শীর্ষস্থানীয় হারেদি ধর্মগুরু রাব্বি ডোভ ল্যান্ডাউ তার বাড়িতে এক ‘জরুরি পরামর্শ সভা’ আহ্বান করেন। তার পরদিনই এ ধরনের ‘আগ্রাসী’ শিরোনাম প্রকাশিত হয়।
এই গ্রেপ্তারের জেরে আজ বৃহস্পতিবার হারেদি সম্প্রদায়ের বড় ধরনের বিক্ষোভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ইউনাইটেড তোরাহ জুডাইজম (ইউটিজে) দলের এমকে মেইর পোরুশ আহ্বান জানান, ‘আমরা তোরাহের জগৎকে রক্ষায় হাতে থাকা সব আইনি পথ ব্যবহার করে সবচেয়ে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই সমগ্র হারেদি সম্প্রদায়ের মধ্যে (ব্যক্তিগত ও সম্মিলিতভাবে) এ নিয়ে আলোচনা চলছে, কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার যাতে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া যায়- ইসরায়েলের তোরাহ শিক্ষার ক্ষতি মানেই ১৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন হারেদি ইহুদির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল।’
ইয়েতেড নে'ইমানের বক্তব্যের প্রতি রাজনীতিবিদদের প্রতিক্রিয়া
ইয়েশ আতিদ দলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিড পত্রিকার ‘যুদ্ধ’ শিরোনামের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ইয়েতেড নে'ইমান-এর পাঠকদের জন্য আপডেট হলো ইসরায়েলে সত্যিই একটি যুদ্ধ চলছে, তবে তা অন্যত্র, যেখানে মানুষ বাস্তবে প্রাণ হারাচ্ছে।’
রিলিজিয়াস জায়োনিস্ট পার্টির (আরজেডপি) এমকে জভি সুক্কোট বলেন, ‘হারেদি সমাজের মধ্যে বিভাজনের আগুনে ঘি ঢালার ক্ষেত্রে ইয়েতেড নে'ইমান সম্পাদক ইয়িসরায়েল ফ্রিডম্যানের জুড়ি নেই। অথচ তিনিই ভালো জানেন, দেশের বাইরে ভয়াবহ একটি বাস্তব যুদ্ধ চলছে, যার মাশুল দিতে হচ্ছে অনেক মানুষকে।’
ইয়িসরায়েল বেইতেনু দলের এমকে আভিগডোর লিবারম্যান আবারও হারেদিদের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘যারা সামরিক বা বেসামরিক কাজে অবদান রাখবে না, তারা কোনো সুবিধা পাবে না। যদি কেউ দায়িত্ব না নেয়, সে কিছুই পাবে না।’
তিনি বৃহস্পতিবার সকালে এক্স-এ আরও লেখেন, ‘কোনো তালিকাভুক্তি নয়, কোনো ভোটও নয়।’
আপনার মতামত লিখুন :