যুক্তরাষ্ট্র যদি তার বৈদেশিক সাহায্য কার্যক্রম (ইউএসএইড) বন্ধ করে দেয় তাহলে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে কয়েক কোটি মানুষ মারা যেতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ল্যানসেট। সোমবার (৩০ জুন) প্রকাশিত এক গবেষণায় এই ভয়াবহ পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়।
ডাভিদে রাসেলা, ল্যানসেট গবেষণার একজন লেখক ও বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথের গবেষক বলেন, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের বহু দেশের জন্য এই সহায়তা হারানো হবে একপ্রকার বৈশ্বিক মহামারি বা বড় ধরনের যুদ্ধের মতো ধ্বংসাত্মক।
প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএইড-র বাজেটে ব্যাপক কাটছাঁট শুরু হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি ব্যয় কমানোর কৌশলের একটি হলো এই মার্কিন সহায়তা বন্ধ। মানবাধিকার কর্মীরা তখন থেকেই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এর সম্ভাব্য ভয়াবহ ফল নিয়ে সতর্ক করে আসছিলেন।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত দুই দশকে ইউএসএইডের অর্থায়নে পরিচালিত স্বাস্থ্য উদ্যোগগুলো প্রায় ৯ কোটি মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করেছে, যার মধ্যে ৩ কোটির বেশি শিশু রয়েছে। বিশেষ করে আফ্রিকা ও অন্যান্য নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে এই সহায়তার প্রভাব ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে এই অর্থসাহায্য হ্রাস ও ভবিষ্যতে ইউএসএইডের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে, যার মধ্যে ৪৫ লাখ শিশু ৫ বছরের নিচে।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে সবচেয়ে বড় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ। বর্তমানে বৈশ্বিক সাহায্যের প্রায় ৩৮ শতাংশ আসে ওয়াশিংটন থেকে। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ৬১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক অনুদান দিয়েছে, যার অধিকাংশই ইউএসএইডের মাধ্যমে ব্যয় হয়েছে।