যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত এক ভারতীয় পেশাজীবী অভিযোগ করেছেন, তার ইংরেজি উচ্চারণ বোঝা যাচ্ছে না এমন অজুহাতে এক সহকর্মী তাকে অফিস মিটিংয়ে কথা বলা বন্ধ করতে বলেন। ৩২ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডিট-এ শেয়ার করে জানান, এতে তিনি অপমানিত ও হতাশ বোধ করেছেন।
রেডিটে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, “আমি ভারতের নাগরিক, এখন যুক্তরাষ্ট্রে একটি ক্লায়েন্ট টিমে কাজ করছি। আজ মিটিংয়ের সময় নিয়মিত দায়িত্বের অংশ হিসেবে আমি এক সহকর্মীকে একটি প্রজেক্ট আপডেটের জন্য জিজ্ঞেস করি। তিনি আমাকে বলেন, ‘তুমি দয়া করে কথা বলা বন্ধ করো, কারণ আমি তোমার উচ্চারণ বুঝতে পারছি না।’”
ওই সহকর্মীর বয়স আনুমানিক ৫৫ বছর বলে উল্লেখ করেছেন ভারতীয় কর্মীটি। তিনি জানান, এক বছরের বেশি সময় ধরে তিনি এই টিমের সঙ্গে কাজ করছেন, এর আগে কখনো কেউ তার উচ্চারণ নিয়ে এমন মন্তব্য করেননি।
তিনি লেখেন, ‘আমি সবসময় স্পষ্ট ও পেশাদারভাবে কথা বলার চেষ্টা করি। আজকের ঘটনায় আমি খুব অপমানিত বোধ করেছি। এই পরিস্থিতিতে পেশাগতভাবে কীভাবে নিজেকে সামলানো যায় সেটাই এখন বড় প্রশ্ন, যাতে আত্মবিশ্বাস বা কর্মদক্ষতায় ক্ষতি না হয়।’
ঘটনাটি রেডিটে শেয়ার করার পর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অনেকে ওই সহকর্মীর আচরণকে ‘অভদ্র’ ও ‘অপেশাদার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন, আবার কেউ কেউ উচ্চারণ উন্নয়নের পরামর্শও দিয়েছেন।
একজন মন্তব্যকারী লেখেন, “এটা সত্যিই খারাপ ব্যবহার। যদি কারও কথা বুঝতে অসুবিধা হয়, তাহলে তাকে ধীরে ও স্পষ্টভাবে বলার অনুরোধ করা যায়। কিন্তু সরাসরি ‘চুপ’ করে যেতে বলা অপমানজনক।”
অন্যদিকে, কিছু ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আপনাকে স্পোকেন ইংলিশের ক্লাস করা উচিত। নিরপেক্ষ উচ্চারণের অভ্যাস করলে কাজের পরিবেশে সুবিধা হবে।’
একজন পরামর্শ দেন, ‘এটা কর্মক্ষেত্রে বুলিংয়ের মতো আচরণ। আপনি এই ঘটনা এইচআর-কে জানাতে পারেন, কারণ এর প্রভাব আপনার মানসিক স্বস্তি ও আত্মবিশ্বাসে পড়তে পারে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈচিত্র্যপূর্ণ কর্মপরিবেশে ভাষাগত পার্থক্য থাকতেই পারে, তবে পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। উচ্চারণ বুঝতে অসুবিধা হলে সহকর্মীরা ধৈর্যের সঙ্গে শুনতে পারেন কিংবা সহায়তামূলক পরামর্শ দিতে পারেন, কিন্তু সরাসরি কথা থামিয়ে দেওয়া পেশাগতভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
একজন মানবসম্পদ (এইচআর) পরামর্শক বলেন, ‘এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রথমে নিজের পক্ষ থেকে শান্তভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা উচিত। যদি তা বারবার ঘটে, তবে এইচআর বিভাগের সহযোগিতা চাওয়া যুক্তিযুক্ত।’
আপনার মতামত লিখুন :