ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকের মার্কিন কার্যক্রম বিক্রির অনুমোদন দিয়ে এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে দেশটিতে জনপ্রিয় এই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপটি চালু থাকবে। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছেন, চুক্তির ফলে টিকটকের মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ট্রাম্প স্বাক্ষর করেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষরিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, টিকটককে তার মার্কিন ব্যবসা বিক্রি করতে হবে অথবা নিষিদ্ধ হতে হবে। তবে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগ প্রেসিডেন্টের কাছে পরিকল্পনা উপস্থাপন না করা পর্যন্ত ১২০ দিন এই আইন কার্যকর হবে না।
টিকটকের মালিক বাইটড্যান্স সরাসরি চুক্তি বা নির্বাহী আদেশ নিয়ে মন্তব্য না করলেও, ১৯ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আমেরিকান ব্যবহারকারীদের জন্য টিকটক চালু রাখতে তারা আইনের নিয়ম মেনে কাজ করবে।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং অনুমোদন পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ভালো আলোচনা হয়েছে’।
আদেশ অনুযায়ী, টিকটকের মার্কিন কার্যক্রম নতুন পরিচালনা পর্ষদের অধীনে যাবে। সুপারিশ অ্যালগরিদম, সোর্স কোড ও কনটেন্ট মডারেশন সিস্টেমও নতুন মালিকদের হাতে যাবে। নিরাপত্তা কার্যক্রম তদারকি করবে ওরাকল, পাশাপাশি তারা কম্পিউটিং পরিষেবাও দেবে।
ট্রাম্প বলেন, ‘এটি আমেরিকানদের মালিকানাধীন হবে এবং সম্পূর্ণরূপে আমেরিকানদের দ্বারাই পরিচালিত হবে’। তিনি জানান, নতুন মালিকদের মধ্যে ওরাকলও থাকবে, যদিও পুরো তালিকা প্রকাশ করেননি।
সিএনবিসির খবরে বলা হয়েছে, ওরাকল, সিলভার লেক ও আবুধাবি-ভিত্তিক এমজিএক্স যৌথভাবে টিকটকের মার্কিন কোম্পানিতে ৪৫ শতাংশ অংশীদারিত্ব পাবে।
টিকটকের মূল কোম্পানি বাইটড্যান্সের সাম্প্রতিক কর্মচারী শেয়ার বাইব্যাক অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানের বর্তমান মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। তবে কোম্পানির মোট আয়ের তুলনায় টিকটকের অবদান এখনও তুলনামূলকভাবে ছোট।
ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ড্যান আইভস জানিয়েছেন, অ্যালগরিদম বাদ দিলে ২০২৫ সালের এপ্রিল নাগাদ টিকটকের মূল্য ৩০ থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ধরা হয়েছিল।
ভ্যান্স বলেন, এই চুক্তির ফলে আমেরিকানরা আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে টিকটক ব্যবহার করতে পারবে, কারণ তাদের ডেটা সুরক্ষিত থাকবে এবং অ্যাপটি প্রচারণার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে না।
ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দেন, ‘প্রতিটি গোষ্ঠী, প্রতিটি দর্শন, প্রতিটি নীতি সবাই ন্যায্য আচরণ পাবে’।
উল্লেখ্য, টিকটক নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ প্রথম শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে ট্রাম্পের হাত ধরেই। পরে বাইডেন প্রশাসনও দ্বিদলীয় সমর্থনে একই অবস্থান নেয়। এ সময়ের মধ্যে ট্রাম্প চারবার সময়সীমা বাড়িয়েছেন।