মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল ও বিভিন্ন ঝড়ের কারণে প্রায় ১০১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে, যা বছরের প্রথমার্ধের রেকর্ডে সবচেয়ে ব্যয়বহুল বলে ধরা হচ্ছে। এই তথ্য ক্লাইমেট সেন্ট্রাল নামের একটি জলবায়ু অলাভজনক সংস্থা প্রকাশ করেছে, যা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় বন্ধ থাকা দুর্যোগ সম্পর্কিত গবেষণা পুনরুজ্জীবিত করেছে।
হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ১৪টি পৃথক আবহাওয়া-সম্পর্কিত দুর্যোগে যুক্তরাষ্ট্রে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে, যেখানে প্রায় ১৬ হাজার ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এককভাবে এই দাবানল ৬১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি ডেকেছে, যা রেকর্ড করা সবচেয়ে ব্যয়বহুল জলবায়ু-সংক্রান্ত দুর্যোগের মধ্যে অন্যতম।
প্রকৃতপক্ষে, গত চার দশকে এই ধরনের দুর্যোগের খরচ ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়ছে। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে সমস্ত দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি ছিল ২৯৯ বিলিয়ন ডলার, যেখানে ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার।
ক্লাইমেট সেন্ট্রালের প্রধান অ্যাডাম স্মিথ বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম আবহাওয়ার ঘটনা আরও তীব্র এবং ঘনঘন হয়ে উঠছে। আমরা এমন তথ্য সংরক্ষণ ও পুনঃপ্রকাশ করছি, যা স্থানীয় সম্প্রদায়, বেসরকারি খাত এবং শিক্ষাবিদদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (ফেমা) ক্ষমতা হ্রাস এবং ট্রাম্প প্রশাসনের দুর্যোগ মোকাবিলার নীতির কারণে, বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কার্যকর প্রতিক্রিয়া দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ম্যাসাচুসেটস মেরিটাইম একাডেমির জরুরি ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ সামান্থা মন্টানো মন্তব্য করেছেন, ‘ফেমার বরখাস্তকৃত দক্ষ কর্মীর অভাব এবং অবকাঠামো সংক্রান্ত ব্যর্থতা দেশের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’
চলতি বছরের সবচেয়ে বড় দুর্যোগ থেকে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা একবারে প্রতিফলিত করেছে কতটা জরুরি প্রয়োজন আছে দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু-প্রতি প্রস্তুতি শক্তিশালী করার।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান