বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মেহেদী হাসান খাজা

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৫, ০২:১৩ পিএম

মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই স্বজনদের দাবি পুলিশের অনীহা

মেহেদী হাসান খাজা

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৫, ০২:১৩ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মার্কেটে দোকান বরাদ্দ, বাড্ডা এলাকায় ডিশ সংযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবসা, রাজনৈতিক আধিপাত্য ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় দুটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের জেরে বিএনপি নেতা কামরুল আহসান সাধনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সাধন হত্যার ঘটনায় তার পরিবার ও স্বজনেরা বলছেন, সাধন হত্যা মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই বললেই চলে। তদন্ত নিয়ে পুলিশের মধ্যে অনীহা রয়েছে। পরিবার বলছে, সাধন হত্যার ঘটনার পরেই পুলিশ জানায়, এই হত্যাকাণ্ডে চারজনের মধ্যে দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এখন প্রশ্নে হচ্ছে, সেই দুই শ্যুটার এখনো অধরা কেন? নাকি সাধন হত্যা মামলার তদন্তে পুলিশের অনীহা রয়েছে!

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাধনের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার জানান, আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই। এ ঘটনায় বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছি। কিন্তু সেই মামলায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

তিনি বলেন, এ ঘটনার পরে পুলিশ বলছিল, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চারজন জড়িত। এর মধ্যে দুজন শুটারকে শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এখন প্রশ্নে হচ্ছে, সেই দুই শ্যুটার এখনো অধরা কেন?’ তিনি বলেন, আমরা পরিবারের সদস্যারা অবিলম্বে সাধন হত্যার বিচার চাই এবং সত্যিকার অপরাধীদের আইনের আওতায় দেখতে চাই।

নিহতের স্বজন ইসমাইল হোসেন বলেন, কী কারণে সাধনকে হত্যা করা হয়েছে, তা আমরা জানতে চাই এবং মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবি করছি।

পুলিশ জানায়, ৫ আগস্টের পর সাধন গুলশান-বাড্ডায় ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ এবং রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করেন। এসব ব্যবসার ভাগাভাগি নিয়ে মাফিয়ারা (আন্ডারওয়ার্ল্ড) ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে চরম দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন বিএনপির এই নেতা।

সেই রোষারেষি থেকেই খুন হন সাধন। গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, ডিশ ও ইন্টারনেটসহ বেশ কয়েকটি বড় ব্যবসা একাই দেখভাল করাই কাল হয়ে দাঁড়ায় সাধনের! সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পেশাদার কিলারদের শনাক্ত করা হলেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তবে আসামিদের ধরতে গোয়েন্দারা নজরদারি বাড়িয়েছে। 

তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সাধন হত্যাকাণ্ডের কিলিং মিশনে অংশ নেয় পেশাদার দুই শুটার। তারা এখন গা-ঢাকা দিয়েছে, এ জন্য তাদের ধরতে দেরি হচ্ছে। তবে অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, পুলিশ এখনো এ ঘটনায় তেমন কোনো ক্লু বের করতে পারেনি। তা ছাড়া এই হত্যার পেছনে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও তার সহযোগীদের যোগসূত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

থানার পুলিশ বলছে, সাধনকে হত্যার পেছনে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও চাঁদাবাজির ঘটনা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এই মামলায় রাজনৈতিক, চাঁদাবাজি ও ইন্টারনেট ব্যবসার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পেশাদার কিলারদের শনাক্ত করা গেলেও এ পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। এসব বিষয়ে গোয়েন্দারা কাজ করছে।

এ বিষয়ে বাড্ডা থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বিএনপি নেতা সাধন হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। কয়েকটি বিষয় সামনে নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করা হচ্ছে।

বিএনপি নেতা সাধন হত্যা মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই স্বজনদের এমন দাবির জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। অপরাধীরা পেশাদার খুনি, তারা হয়তো গা-ঢাকা দিয়েছে। আমাদের গোয়েন্দারা এ বিষয়ে কাজ করছে। আশা করছি সত্যিকারের আসামিদের ধরে আইনের আওতায় আনা হবে।

ওসি বলেন, ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গুদারাঘাট ৪ নম্বর রোডে সাবেক কমিশনার কাইয়ুমের কার্যালয়ের বিপরীতে চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন গুলশান থানা বিএনপির নেতা সাধন। এ সময় সেখানে সাধনের ভাগিনা কামালসহ আরও কয়েকজন পাশেই ছিলেন। আশপাশের লোকজন নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন অনেকে। এর মধ্যে মাস্ক পরা দুই যুবক এসে হঠাৎ সাধনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুলির আঘাতে সাধন ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন। এরপর ফাঁকা গুলি করতে করতে সটকে পড়ে সন্ত্রাসীরা। পরে তারা আত্মগোপনে চলে যায়।

এদিকে গুলশান থানা বিএনপির আহ্বায়ক শরিফ উদ্দিন আহমেদ মামুন বলেন, সাধন আমার ছোটবেলার বন্ধু। তার কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছিল বলে আমার মনে হয় না। তবে এর সঙ্গে যে-ই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সাধন হত্যায় শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জড়িত। এটা টার্গেট কিলিং, পেশাদার আপরাধীদের দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। অপরাধীরা যে দল বা মতেরই হোক না কোন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!