ঢাকায় গতকাল শুরু হয়েছে সাফ নারী অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের আসর। প্রথম দিনেই বাংলাদেশ ৯-১ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দুর্দান্ত সূচনা করেছে। একের পর এক গোল উৎসব করেছে মেয়েরা। সাগরিকা উপহার দেন হ্যাটট্রিক। জোড়া গোল করেছেন মুনকি আক্তার। স্বাগতিকদের পক্ষে স্বপ্না রানী, শিখা জাহান, রুপা আক্তার ও শান্তি মার্দিও গোল করেছেন। ২০২৩ সালে অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। এবারও শিরোপা জয়ের মিশনে নেমে শুরুতেই বড় জয় পেয়েছে লাল-সবুজের দল। আগামী ১৩ জুলাই নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় খেলার শুরু থেকেই একের পর এক গোল উৎসবে মেতে উঠে বাংলাদেশের মেয়েরা। মাঠ কর্দমাক্ত হলেও দ্বিতীয় মিনিটেই প্রথম গোল আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। গোল উৎসবের শুরু করেন স্বপ্না রানী। তার দৃষ্টিনন্দন ফ্রি কিকে বল বাতাসে ভেসে লাফিয়ে ওঠা গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ায়। তিন মিনিট পর এক ছুটে বাম দিকে দিয়ে বক্সে ঢুকে কাছের পোস্ট দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মুনকি আক্তার। ২০ মিনিটে মুনকির শট গোলরক্ষক ফেরানোর পর শিখা জাহানের ফিরতি শট পোস্টে লেগে ফেরে। একটু পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বক্সে ঢুকতে পারে শ্রীলঙ্কা, যদিও তেমন কিছুই করতে পারেনি তারা। শ্রীলঙ্কার রক্ষণে চাপ ধরে রেখে একের পর এক সুযোগ তৈরি করতে থাকেন সাগরিকা, পুজারা; কিন্তু কখনো লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে, কখনো গোলকিপারের দৃঢ়তায় ব্যবধান বাড়াতে পারছিলেন না কেউ। ৩৭ মিনিটে গোলের খাতা খোলেন সাগরিকা। শিখার দারুণ ক্রস গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে খুঁজে নেয় তাকে। গোলমুখ থেকে অনায়াসে লক্ষভেদ করেন এই ফরোয়ার্ড। একটু পর স্বপ্নার রক্ষণ চেরা পাস ধরে শিখা জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে হয়নি গোল। ৪১ মিনিটে ছোট ফ্রি কিকের পর আফঈদা খন্দকারের শট গোলকিপার আঙুলের টোকায় বের করে দেন ক্রসবারের ওপর দিয়ে। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ছোট বক্সের ভেতর থেকে সাগরিকা গোলকিপারকে পরাস্ত করার পর ওঠে অফসাইডের পতাকা। সে সময় গোললাইনের ওপর শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় ও গোলকিপার ছিলেন, ফলে অফসাইডের সিদ্ধান্ত জন্ম দেয় বিস্ময়ের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সাগরিকার কাটব্যাকে গোলমুখে অরক্ষিত মুনকি নিখুঁত ট্যাপে জাল খুঁজে নেন। এরপরই অধিনায়ক আফঈদাকে তুলে রুমা আক্তারকে নামান বাটলার। ৫০ মিনিটে বাম দিক থেকে আসা ক্রস দারুণ প্লেসিং শটে জালে জড়ান শিখা। বড় জয়ের পথে ছুটতে থাকে বাংলাদেশ। ৫৩ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে বক্সে ঢুকে নিচু শটে ব্যবধান বাড়ান সাগরিকা। পাঁচ মিনিট পর পুজার কাটব্যাকে প্লেসিং শটে হ্যাটিট্রিক পূরণ করেন এ ফরোয়ার্ড। একটু পরই সাগরিকাকে তুলে তৃষ্ণা রানীকে নামান কোচ। শেষদিকে নতুনদের পরখ করে নেওয়ায় মনোযোগী হন বাটলার। ৭২তম মিনিটে বন্যার শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসার একটু পরই মুনকির বদলি নামান কানন রানীকে। ৮৫তম মিনিটে বক্সের জটলার ভেতর থেকে স্কোরলাইনে নাম লেখান রুপা। যোগ করা সময়ে পালটা আক্রমণ থেকে জাসোথারান লায়নসিকা কমানো একমাত্র গোলটি করেন। শেষের বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে বাংলাদেশের হয়ে নবম গোলটি করেন শান্তি।