নির্বাচন বানচাল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে নিত্যনতুন দাবি তোলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য, নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য নিত্যনতুন দাবি তুলছে। এমন দাবি তুলছে, যার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ পরিচিত নয়। গতকাল বুধবার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কাজী জাফর আহমদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ভাসানী জনশক্তি পার্টি।
সংস্কারের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারকে রাজনৈতিক দলগুলো সব ধরনের সহযোগিতা করছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা কোথাও বাধা সৃষ্টি করিনি। কখনো বড় ধরনের দাবি তুলে রাজপথে নেমে সরকারকে বিব্রতও করিনি।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংস্কার শব্দের সঙ্গে সাধারণ মানুষ পরিচিত নয়। সেখানে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (পিআর) বুঝতে সময় লাগবে। এটা মানুষকে বোঝানো খুবই কঠিন। আবার কাকে ভোট দেওয়া হচ্ছে, সেটা জানা যাবে না। কিন্তু এসব বাস্তবায়নে অনেকে কথা বলছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন।’
গণঅভ্যুত্থানের সাত থেকে আট দিন পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি তুলেছিলেন বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এ নিয়ে তাকে অনেক সমালোচনাও সহ্য করতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যখনই একটা পরিবর্তন হয়, সেই পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে নেয় অন্যরা।’
গণঅভ্যুত্থানের তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হলে অর্থনীতির এই বেহাল অবস্থা দেখতে হতো না বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব। তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হলে একটা নির্বাচিত সরকার ম্যান্ডেট ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই শক্তিগুলোকে উড়িয়ে দিতে পারত। মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘অনেক চেষ্টা চলছে একাত্তরের কথা ভুলিয়ে দেওয়ার, কিন্তু সেটা ভোলা সম্ভব নয়। গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে, এ কারণে সরকারের ভেতরের একটা মহল সচেতনভাবে চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, লক্ষ্য অর্জনের জন্য আরও অনেক কাজ করতে হবে। এস আলম গ্রুপ ভারতে থাকা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে আড়াই হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। তারা পরিকল্পনা করছে কীভাবে ওই টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশে নির্বাচন বন্ধ করা যায় এবং শেখ হাসিনাকে আবার দেশে ফিরিয়ে আনা যায়। জটিলতা না বাড়িয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ প্রণয়নের কাজ শেষ করাসহ ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন দলটির মহাসচিব আবু ইউসুফ। সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু প্রমুখ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন