তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ। পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনবেন আদালত। আগামী ২১ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গতকাল বুধবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানি করেন। শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান চায় আপিল বিভাগ। যাতে এটি বারবার বিঘিœত না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে দিলে তা কখন থেকে কার্যকর হবে, সে প্রশ্নও রাখেন প্রধান বিচারপতি। রায়ের পর কীভাবে কার্যকর হবে, সে বিষয়ে আপিল বিভাগ চাইলে নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে পর্যবেক্ষণ দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনসহ আরও কয়েকটি আবেদনের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রিভিউ করে। এর আগে গত মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে শুনানি গতকাল পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
গতকালের শুনানিতে প্রথমে বক্তব্য দেন, অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস কাজল। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনগুলো ভালো নির্বাচন হয়েছে, জনগণ নির্ভয়ে ভোট দিতে পেরেছেন। কিন্তু আপিল বিভাগ এই ব্যবস্থা বাতিল করলে নির্বাচন ব্যবস্থায় ধস নামে। দিনের ভোট রাতে, ডামি নির্বাচন, বহু সাংসদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।
এদিকে শুনানিতে এ বি এম খায়রুল হকের রায়ের নানা ত্রুটি তুলে ধরেন আইনজীবীরা। তারা বলেন, এ রায়ে আপিল বিভাগের চারজন বিচারপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে রায় দিয়ে পরবর্তী সময়ে সবাই প্রধান বিচারপতি হন। কিন্তু একই বেঞ্চে যে তিনজন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার পক্ষে ছিলেন, সেই বিচারপতিরা পদোন্নতি বঞ্চিত হন।
২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা) বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেওয়া হয়। পরে এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের অক্টোবরে আবেদন করা হয়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন