সিলেটের কাঁচাবাজারে হঠাৎ করেই বেড়েছে সব ধরনের শাক-সবজির দাম। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সবজি কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, অতিবৃষ্টি ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে সরবরাহে সংকট তৈরি হওয়ায় বাজারে এমন অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়া হঠাৎ এ মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক এবং মনগড়া।
সিলেট নগরীর বন্দরবাজার, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট ও রিকাবীবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রায় প্রতিটি সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পটোল বিক্রি হচ্ছে ৮০, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০ টাকা। ঢেঁড়সের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে। পেঁপে আগে ২৫ টাকা কেজি দরে পাওয়া গেলেও এখন কিনতে হচ্ছে ৪০ টাকায়।
একইভাবে কচুমুখী বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮০, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল মাত্র ৪০ টাকা। শসার দাম বেড়ে হয়েছে ৮০-১০০ টাকা। ঝিঙা ১০০ টাকা, কাঁকরোল ৯০, করলা ৮০ এবং চিচিঙ্গা ৮০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক পিস কুমড়ার দাম এখন ৮০-১০০ টাকা পর্যন্ত গিয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৬০-৭০ টাকা। পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে, লাউ প্রতি পিস ১২০ টাকা, কাঁচামরিচ ২৮০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গাজরের দাম ১৫০ থেকে বেড়ে ১৬০ এবং টমেটোর দাম পৌঁছেছে ১৪০ টাকা কেজিতে।
এ বিষয়ে রিকাবীবাজারের সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এখন বৃষ্টির মৌসুম। এ সময় সবজি নষ্ট হয়ে যায়, ফলে সরবরাহ কম থাকে। এ কারণে দাম বাড়ে। আবার বৃষ্টি না থাকলে প্রচ- গরমে কিছু সবজি পচে যায়, তখন কম দামে বিক্রি করে দিতে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিলেটে এখন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে আনতে হয়। পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি দাম আগেই বাড়ছে, যার প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়ছে।’
সবজির পাশাপাশি অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেও কিছুটা মূল্যবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। খুচরা ব্যবসায়ী রুকন মিয়া জানান, ভারত থেকে আমদানি করা এলসি পেঁয়াজের দাম ৬০ থেকে বেড়ে ৮৫ টাকা কেজি এবং দেশি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে বেড়ে ৭৫ টাকা কেজি হয়েছে। ডালের দামও বেড়েছে। মোটা ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ এবং চিকন ডাল ১৩০ টাকা কেজি দরে। এক লিটার সয়াবিন তেল ১৭৫ থেকে বেড়ে ১৮৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আর ৫ লিটারের বোতল ৮৭০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯২২ টাকা।
তবে সবজির বাজারে অস্থিরতা থাকলেও স্থিতিশীল রয়েছে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি এবং ডিমের বাজার। সুবিদবাজার আনোয়ার পোল্ট্রি ফার্মের স্বত্বাধিকারী হাছিব উদ্দিন জানান, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। লেয়ার মুরগি প্রতি পিস ৫২০ এবং সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি দরে। ডিম বিক্রি হচ্ছে হালিতে ৪০ টাকা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন