সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৫, ০৯:২৩ এএম

বাংলায় কথা বললেই কি তাকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাতে হবে: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৫, ০৯:২৩ এএম

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেÑ বাংলা ভাষায় কথা বললেই কি লোকজনকে আটক করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কি না। গত শুক্রবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি বিপুল এম পাঞ্চোলির বেঞ্চ। তারা জানতে চান, শুধু বাংলা বলার কারণে কাউকে বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা যায় কি না।

বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি তকমা দিয়ে দেশের নানা প্রান্তে মারধর, হেনস্তা, গ্রেপ্তার, এমনকি জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছেÑ এমন অভিযোগ বারবারই তুলে আসছেন পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

যে মূলগত বিষয় নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত, গত শুক্রবার সেই প্রশ্নই তুলেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্তার ইস্যুতে দায়ের মামলায় শুক্রবার শুনানি হয় বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি বিপুল এম পাঞ্চোলির বেঞ্চে। শুনানি চলাকালে বিচারপতি বাগচি বলেন, ‘কোনো একটি নির্দিষ্ট ভাষায় কথা বললেই কি তাকে বিদেশি বলা হবে?’ একই সুরে বিচারপতি সূর্যকান্তের প্রশ্ন, ‘বাংলায় কথা বললেই তাকে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে?’ এ দিন কেন্দ্রের কাছ থেকে ব্যাখ্যা তলব করেছে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে বক্তব্য জানানোর জন্য বলা হয়।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন পর্ষদের চেয়ারপারসন ও তৃণমূল সংসদ সদস্য সমিরুল ইসলাম। মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, স্রেফ বাংলাভাষী বলেই বিভিন্ন রাজ্যে মানুষদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হচ্ছে। নাগরিকত্বের পরিচয় না জেনেই জবরদস্তি বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না।

তিনি আরও বলেন, বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকেরা আতঙ্কে রয়েছেন। বিভিন্ন রাজ্যে তাদের ধরা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ভাষা এক, বাংলা। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হচ্ছে। কোনো পদ্ধতিই মানা হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক আইন ভাঙা হচ্ছে। কোনো নাগরিকের সঙ্গে এমন আচরণ করা যায় না।

শুনানিতেই উঠে আসে বীরভূমের আদি বাসিন্দা সুনালি খাতুনের প্রসঙ্গ। প্রশান্ত ভূষণ অভিযোগ করেন, তাদের দিল্লির রোহিনী থেকে আটক করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। তাকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে কেন্দ্র। সেখানকার কর্তৃপক্ষ তাদের গ্রেপ্তার করেছে, বলছে উনি নাকি ভারতীয়। তা হলে এই মহিলা এখন কী করবেন? সন্তানসম্ভবা ওই নারীকে কোনো প্রমাণ ছাড়াই বিদেশি দাগিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তার অপরাধ তিনি বাংলাভাষী।’

সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী বা বিএসএফের বিরুদ্ধে প্রশান্ত ভূষণের অভিযোগ, তারা যে কাউকে বিদেশি সন্দেহ করে ধরছে। সীমান্তে নিয়ে গিয়ে বলছে, দৌড়ে পালাও। নইলে গুলি করে দেব।

এ দিন সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘এ নিয়ে মিডিয়া রিপোর্ট ঠিক নয়। সিস্টেমেটিক অনুপ্রবেশ হচ্ছে। ভারত অবৈধ বসবাসকারীদের রাজধানী নয়। কোনো ব্যক্তি কেন আদালতে এসে আর্জি জানাচ্ছেন না? আমরা জানি, রাজ্য সরকার এই আবেদনকে সমর্থন করছে।

বাংলাদেশি নাগরিক এবং রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে দীর্ঘদিন বসবাস করছেন বলে এদিন মামলায় অভিযোগ করে কেন্দ্র। কেন্দ্রের দাবি, এর জেরে সমস্যায় পড়ছে দেশের নিরাপত্তা। পাল্টা যুক্তি দিয়ে বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, ‘আপনারা এসওপি দিন। একটা শ্রেণির লোক জোর করে এই দেশে ঢোকার চেষ্টা করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিন। যারা আগে এসেছেন, তাদের চিহ্নিত করছেন আপনারা। তাদের থেকে ভারতীয় নাগরিক হওয়ার প্রমাণ সংগ্রহ করুন।’ বিচারপতি বাগচির বক্তব্য, ‘দেশের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু লিগ্যাসি অব কমন কালচার, কমন হেরিটেজÑ এগুলোকেও মাথায় রাখতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ এবং পাঞ্জাবের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এই দুটি রাজ্যের আন্তর্জাতিক সীমান্ত দু’পারের একই ভাষাভাষী মানুষের বিভাজন করেছে।’

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট একটি জনস্বার্থ মামলার সূত্রে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়ে যুগান্তকারী নির্দেশ ও পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। সীমান্ত রাজ্য হিসেবে বাংলার ঐতিহাসিক ভূমিকা স্বীকার করে প্রজন্মের পর প্রজন্মে বাংলা কীভাবে আশ্রয়, ভরসা ও সংস্কৃতির আশ্রয়স্থল হয়েছে, তার স্বীকৃতি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আজকে মিলেছে। আটক হওয়া বিপন্ন পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটা বড় ভরসার জায়গা আজ তৈরি হলো। বিচার বিভাগের উপরে আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তাদের কাছে বাংলার প্রত্যেক শ্রমিক সম্মান, মর্যাদা ও সাংবিধানিক ন্যায়বিচার পাবেন, এই প্রত্যয় আমাদের আছে।’
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!