সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৫, ০৯:৪৭ এএম

ধমক, তেল আর হাতছানি: পুতিনের সঙ্গে মোদির বৈঠক, ট্রাম্পের ধাক্কা সামলাতে ৪০ দেশমুখী ভারত

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৫, ০৯:৪৭ এএম

পুতিনের সঙ্গে মোদির বৈঠক

পুতিনের সঙ্গে মোদির বৈঠক

ভারত গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজেকে তুলে ধরেছে একটি নতুন বহুমেরুর বিশ্বের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে। এর এক পা ওয়াশিংটনে, আরেক পা মস্কোতে। আর দৃষ্টি সব সময় সতর্কভাবে বেইজিংয়ের দিকে। কিন্তু এই কাঠামো নড়বড়ে হয়ে উঠছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা এখন আর প্রশংসাকারী নয়, বরং সমালোচক। তারা ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে যে, রাশিয়ার ডিসকাউন্টে দেওয়া তেল কিনে মস্কোর যুদ্ধ তহবিলকে সমৃদ্ধ করছে। এখন দিল্লিকে সামলাতে হচ্ছে ট্রাম্পের প্রকাশ্য ধমক ও শুল্ক বৃদ্ধির চাপ। বহুমেরুর ভারসাম্য যখন দুর্বল হচ্ছে, তখন অনেকে বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও রোববারের পরিকল্পিত বেইজিং সফরটি আর বিজয়োল্লাসের কূটনীতি নয়, বরং বাস্তবমুখী সমঝোতার প্রচেষ্টা। তবু দিল্লির পররাষ্ট্রনীতি আজ এক অস্বস্তিকর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েÑ বলছেন বিবিসির সাংবাদিক সৌতিক বিশ্বাস।

তার মতে, ভারত একই সঙ্গে দুটি শিবিরে বসে আছে। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ওয়াশিংটন নেতৃত্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক কোয়াডের স্তম্ভ। অন্যদিকে চীন-রাশিয়া নেতৃত্বাধীন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সদস্য, যা প্রায়শই যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিপরীতে যায়। দিল্লি যেমন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিকে আকৃষ্ট করতে ব্যস্ত, তেমনি ডিসকাউন্টে রুশ তেলও কিনছে। আর চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিতব্য এসসিও বৈঠকে বসার প্রস্তুতিও নিচ্ছে।

এ ছাড়া রয়েছে আইটু-ইউটু (আই২ইউ২)। এটি ভারত, ইসরায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত একটি মঞ্চ। এর ফোকাস প্রযুক্তি, খাদ্য নিরাপত্তা ও অবকাঠামো। আবার রয়েছে ফ্রান্স ও আমিরাতের সঙ্গে ভারতের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ভারসাম্যের খেলা মোটেও দুর্ঘটনাবশত নয়। ভারত কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। দেশটির যুক্তি হলোÑ প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরগুলোর সঙ্গে একযোগে সম্পৃক্ততা তাকে দুর্বল করে না; বরং প্রভাব বাড়ায়। তবে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক ও বর্তমানে ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জিতেন্দ্র নাথ মিশ্র বলেন, ‘হেজিং ভালো সিদ্ধান্ত নয়। কিন্তু কোনো একটি শিবিরের সঙ্গে পুরোপুরি একাত্ম হওয়ার বিকল্পটি আরও খারাপ। ভারতের জন্য সেরা পথ হলো খারাপ পথই; অর্থাৎ হেজিং।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারত হয়তো এখনো পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী নয় যে, কোনো এক মহাশক্তির সঙ্গে সারিবদ্ধ হয়ে টিকে থাকতে পারবে। একটি সভ্যতাগত রাষ্ট্র হিসেবে ভারত ইতিহাসে অন্যান্য মহাশক্তির পথকেই অনুসরণ করতে চায়, যারা নিজের শক্তিতেই সে অবস্থানে পৌঁছেছিল।’ তবে এ-ও সত্য, ভারতের বৈশ্বিক উচ্চাকাক্সক্ষা তার সক্ষমতার তুলনায় অনেক এগিয়ে। ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির আকারে ভারত পঞ্চম বৃহত্তম দেশ হলেও তা চীনের ১৮ ট্রিলিয়ন বা আমেরিকার ৩০ ট্রিলিয়নের সাপেক্ষে অনেক ছোট। সামরিক শিল্পভিত্তি আরও দুর্বল। ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক। কিন্তু শীর্ষ পাঁচ অস্ত্র রপ্তানিকারকের মধ্যে নেই।

আজ থেকে শুরু হচ্ছে রাশিয়া-চীন নেতৃত্বাধীন অর্থনৈতিক ও আন্তঃসরকার জোট সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলন, শেষ হবে ১ সেপ্টেম্বর। এসসিও সম্মেলন শেষে তিয়ানজিনেই হবে পুতিন-মোদি বৈঠক। শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উশাকভ বলেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের বিশেষ কৌশলগত অংশীদারত্ব রয়েছে। তা ছাড়া আগামী ডিসেম্বরে ভারত সফরে যাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। সেই সফরকে সামনে রেখে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে তাদের মধ্যে আলোচনা হবে।’ প্রসঙ্গত, গত মে মাসে পাকিস্তান-ভারত সংঘাত থামানোর ক্ষেত্রে অবদান স্বীকার না করা এবং রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল ক্রয়ের অভিযোগে গত আগস্টের শুরুর দিকে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্প আরোপ করেন ট্রাম্প। এর ফলে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ধার্যকৃত মোট রপ্তানি শুল্ক পৌঁছায় ৫০ শতাংশে। নতুন এই শুল্ক আরোপের পর ওয়াশিংটনের সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে নয়াদিল্লির। শুল্ক প্রত্যাহার বা এ-সংক্রান্ত আলোচনার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো অনুরোধ বা আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। গত ২৭ তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে বর্ধিত শুল্ক। এটি কার্যকর হওয়ার আগে মোদিকে এক দিনে চারবার ফোন করেছেন ট্রাম্প; কিন্তু মোদি তার ফোন ধরেননি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসানোর পর বস্ত্র ও পোশাকের বিকল্প বাজারের খোঁজ করছে নয়াদিল্লি। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, তারা ৪০টি দেশকে বেশি করে ভারতীয় বস্ত্র ও পোশাক ক্রয়ের আহ্বান জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!