দৈনন্দিন কাজের ধরন বদলে দিয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। আগে যেখানে অফিসের জন্য আলাদা অ্যাপ, ডিজাইনের জন্য সফটওয়্যার, কোডিংয়ের জন্য আইডি লাগত সেই জায়গায় এখন শুধু একটি ব্রাউজার আর একটি এআই সহকারীই যথেষ্ট। আর সেই বিপ্লবের নাম হচ্ছে গুগল ক্রোম ও জেমিনি ।
গুগল ক্রোম, যা এতদিন শুধুই ছিল একটি ওয়েব ব্রাউজার, এখন ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে একটি সম্পূর্ণ কর্মক্ষেত্রে। আর এর মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে গুগুল-এর নিজস্ব এআই সিস্টেম। এখন আপনি শুধু ক্রোম খুললেই, অফিসের ইমেইল লেখা থেকে শুরু করে, প্রেজেন্টেশন বানানো, স্প্রেডশিট তৈরি, এমনকি কোড লেখা বা ডকুমেন্ট রিভিউ সবকিছু করতে পারবেন জেমিনিকে নির্দেশ দিয়ে।
এবসরহর এখন গুগল ডক্স, স্লাইডস, শিটস, জিমেল এমনকি ইউটিউব, গুগুল মিট এবং কোডিং প্ল্যাটফর্মেও একীভূত। উদাহরণস্বরূপ, আপনি বলতে পারেন ‘একটি মার্কেটিং রিপোর্ট তৈরি করো’ জেমিনি অটো ডেটা বিশ্লেষণ করে, উপযুক্ত চার্ট ও ইনসাইটসহ সেই রিপোর্ট তৈরি করে দেবে। কিংবা ‘এই কোডে বাগ খুঁজে বের করো’ জেমিনি তখন কোড লাইন ধরে ধরে চেক করে সমাধান বলে দেবে। আর এ সব কিছুই ঘটে চলবে গুগল ক্রোম ব্রাউজারের মধ্যে, কোনো আলাদা অ্যাপ ছাড়াই।
তথ্যসূত্র বলছে, জেমিনি এখন এতটাই শক্তিশালী হয়েছে যে এটি ডিজাইন, অনুবাদ, সারাংশ তৈরি, ইমেইল রিপ্লাই এমনকি ভিডিও স্ক্রিপ্ট লেখার কাজও করে দিতে পারে। ক্রোমের এক্সটেনশন, জিমেইল ইনবক্স এবং গুগল ড্রাইভে প্রতিটি ডকুমেন্টের পাশে এখন দেখা যাচ্ছে ‘আসক জেমিনি’ অপশন, যেখান থেকে সরাসরি কনটেন্ট তৈরি, এডিট, বা বিশ্লেষণ চাওয়া যায়।
এই জুটি শুধু অফিস নয়, পড়াশোনার ক্ষেত্রেও দারুণ কার্যকর। শিক্ষার্থীরা রিসার্চ পেপার তৈরিতে, প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বা কোডিং শেখার জন্য ব্যবহার করছে জেমিনি এমনকি ইউটিউব ভিডিওর সারাংশ চাইলে জেমিনি সেটাও বানিয়ে দিতে পারে।
সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এই সবকিছু এখন শুধুই একটি ওয়েব ব্রাউজারে সম্ভব। শুধু একটি গুগল অ্যাকাউন্ট আর ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই আপনি নিজের পুরো ডিজিটাল জীবন চালাতে পারবেন গুগল ক্রোম ও জেমিনির উপর নির্ভর করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্র হবে অ্যাপবিহীন- সব হবে অও আর ক্লাউড নির্ভর। আর তার প্রথম ধাপ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে গুগলের হাত ধরে। গুগল ক্রোম আর জেমিনির যুগলবন্দিতে প্রযুক্তি এখন হয়ে উঠেছে আরও ব্যক্তিগত, আরও স্বয়ংক্রিয়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন