শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ০১:৩৬ এএম

স্ট্রিট ফুডে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ০১:৩৬ এএম

স্ট্রিট ফুডে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

রাজশাহী মহানগরীতে ভাসমান খাবারের দোকান (স্ট্রিট ফুড) বেড়েই চলছে। নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও অলি-গলি ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে এসব দোকান। খোলা আকাশের নিচে এসব দোকানের খাবারের দাম যেমন সস্তা, তেমন খেতেও লোভনীয়। তবে বেশির ভাগ দোকানে দূষিত পানি, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরি করা হচ্ছে। সড়কের পাশে হওয়ায় ধুলাবালি ও রোগজীবাণুর মিশ্রণ থাকে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁঁকিতে পড়তে হয় ক্রেতাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহানগরীর জিরো পয়েন্ট, ভদ্রা, তালাইমারি, বিনোদপুর, সিঅ্যান্ডবি মোড়, রাণীবাজার, নিউমার্কেট ও নগরভবন, রেলগেট, শালবাগান, নওদাপাড়া, আমচত্বরসহ প্রায় প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও অলি-গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে এসব ভাসমান খাবারের দোকান। আগে থেকেই এসব স্থানে দোকান থাকলেও গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন দোকান। এসব ভাসমান দোকানে সাধারণত ফুচকা, চটপটি, ঝালমুড়ি, শিঙাড়া, পিঁয়াজু, সমুচা, কাবাব, মোমো, দোসা, বার্গার, পিৎজা, পিঠা, আখের রস, শরবত, পানি এবং বিভিন্ন ধরনের ভাজাপোড়া তৈরি করা হয়। আবার কিছু কিছু দোকানে ভাত-মাছ-ডালজাতীয় খাবারও বিক্রি করা হয। খোলা আকাশের নিচে এসব দোকানের খাবারগুলো যেমন দামে শস্তা, তেমনি দেখতে ও খেতে লোভনীয়। খাবারগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়ে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে ক্রেতারা। দেখা দিচ্ছে পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগ।

এদিকে শহরে এই স্ট্রিট ফুডের দোকানগুলোর বেশ কদর রয়েছে। শিক্ষার্থীবান্ধব এই শহরে অন্য ব্যবসা নেই বললেই চলে। মধ্যবিত্ত, নি¤œবিত্ত ছাড়াও শিক্ষার্থীরা কম দামে লোভনীয় খাবারের খোঁজ করতে থাকে। ফলে ভাসমান এসব খাবারই তাদের পছন্দের তালিকায় থাকে। এ কারণে এ ধরনের খাবারের দোকানই তাদের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে। আবার কখনো কখনো অভিজাত শ্রেণির মানুষও ভিড় করছেন। এ ছাড়া স্বল্প পুঁজিতে অধিক লাভবান হওয়া বেকারদেরও স্ট্রিট ফুডের দোকানগুলোর দিকে বেশি মনোযোগী হতে দেখা যাচ্ছে। তবে এসব দোকানের পানি দূষিত, খাবার অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হয়। দোকানগুলোর অবস্থান সড়কের পাশে হওয়ায় ধুলাবালি ও রোগজীবাণুর মিশ্রণ থাকে। রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও ভোক্তা অধিদপ্তরের তেমন তদারকি না থাকায় বেশির ভাগ খাবারের দোকানে মানা হয় না কোনো সুরক্ষাব্যবস্থা এবং নেই স্বাস্থ্য সচেতনতা।

সচেতন নগরবাসী বলছেন, এসব খাবারের দোকান বেকার সমস্যা কিছুটা দূর করতে সাহায্য করলেও স্বাস্থ্যঝুঁঁকি থেকেই যাচ্ছে। কেননা এসব খাবারের দোকানগুলোতে মানা হয় না কোনো স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ম। ফলে এসব খাবার খাওয়ার পর নিয়মিত অসুস্থ হয় ক্রেতারা। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নগরীতে বসবাসকারীরও ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বৃদ্ধি, হজমের সমস্যা, অ্যাসিডিটি, পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু বলেন, ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের খাবার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের জবাবদিহিতার প্রয়োজন পড়ে না। কেননা তাদের খাবার বিক্রির ব্যাপারে সরকারি কোনো তদারকি হয় না। এ ছাড়া এসব ভাসমান দোকান করতে সরকারিভাবে কোনো ধরনের অনুমতি বা লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়ে না। ফলে দোকানিরা কী বিক্রি করছে এবং ক্রেতারা কী খাচ্ছে, সে বিষয়ে দেখভাল করারও কেউ নেই।

রাকিবুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা জানান, অনেক সময় রাস্তার পাশে নানা ধরনের লোভনীয় খাবার দেখে লোভ সামলাতে পারি না। তাই বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যকর না হওয়া সত্ত্বেও এসব খাবার খেয়ে থাকি। অসুস্থ হলেও সুস্থ হয়ে আবারও এগুলোই খায়। তবে এসব ব্যবসায়ীকে একটা নিয়মের মধ্যে এনে সরকারিভাবে তদারকি করা হলে এসব খাবারও কিছুটা স্বাস্থ্যকর হতে পারে এবং নি¤œ-আয়ের মানুষরাও নিরাপদে এগুলো খেতে পারবে।

‎নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ‎রাজশাহী কলেজের একজন তরুণ উদ্যোক্তা বলেন, আমি নিজেও ফুটপাতে ব্যবসা করি এবং চেষ্টা করি গ্রাহককে ভালো খাবার উপহার দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের যদি সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও খাবারের সুরক্ষা বজায় রাখার ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো, তাহলে পরিচ্ছন্নভাবে খাবার বিক্রয় করার সুযোগ পেতাম।

রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. রাজিউল করিম বলেন, ফিটপাতে ভাসমান খাবারের দোকানগুলোতে খাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সব সময় নিরুৎসাহিত করে থাকি। তারপরও প্রায় সবাই এগুলো খাচ্ছে। এ ধরনের খাবারে পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, আমাশয়, খিচুনিসহ নানা রোগ হতে পারে। আর খাবার নিরাপদ কি না তা দেখার দায়িত্ব খাদ্য অধিদপ্তরের। এ ব্যাপারে সবাই সচেতন হওয়া জরুরি।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী বিভাগের উপপরিচালক মো. ইব্রাহীম হোসেন জানান, আমরা নিয়মিত মনিটরিং ও অভিযান পরিচালনা করে জেল-জরিমানা করছি। কিন্তু ফুটপাতে ব্যবসা করার অনুমোদন কারা দেয় সেই বিষয়ে আমাদের ধারণা নাই। এরপরেও খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের সচেতন থাকতে হবে।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!