এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এলোমেলো ব্যাটিংয়ের কারণে হেরে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। ১৩৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ১২৪ রানেই থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। এত কম রানের লক্ষ্য পেয়েও দল না জেতার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ব্যাটিং ব্যর্থতা। আরও সুনির্দিষ্ট করে বললে ব্যাটাররা কা-জ্ঞানহীন ব্যাটিং করেছেন। দায়িত্ব নিতে পারেননি কেউই। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারের জন্য ব্যাটারদেরই দায়ী করলেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। তিনি বলেন, ‘সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি ব্যাটাররা। সব দলকেই কোনো না কোনো সময় এমন দিনের মুখোমুখি হতে হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) আমাদের তেমন দিন গেছে। আমাদের সিদ্ধান্ত আর শট নির্বাচন ভালো হয়নি।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে একাদশে তিন পরিবর্তন নিয়ে লড়াইয়ে নামে বাংলাদেশ। ব্যাটিং অর্ডারেও ওলট-পালট হয়েছে। ৪ নম্বরে ব্যাটিং করেছেন স্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার গড় ১১। আর স্ট্রাইক রেট ১০০। এমন একজনকে ৪ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামিয়ে দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছিল কি না। বাংলাদেশের ক্যারিবীয় কোচ সিমন্স জানান, ‘আপনি এটাকে ৪ নম্বর হিসেবে দেখছেন। আমি দেখেছি, এমন একজনকে পাঠানো হচ্ছে, যিনি তখন পেসারদের সামলাতে পারতেন। তখনো পাওয়ারপ্লে চলছিল। তাই সে ফাস্ট বোলারদের বিপক্ষে বেশি খেলতে পারত। যদি তাকে নিচে পাঠাতাম, তাহলে শুধু স্পিনারদেরই মুখোমুখি হতো। আমার কাছে তখনো জাকের আর শামীম ছিল, যারা স্পিনারদের আরও ভালো খেলে। এই ছিল পেছনের চিন্তাভাবনা।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে পুরো ইনিংসেই বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল অগোছালো, ছন্দছাড়া ও পরিকল্পনাহীন। স্বাভাবিক ব্যাটিং দেখা যায়নি। ব্যাটাররা অযথা তাড়াহুড়ো করেছেন। বড় শট খেলার চেষ্টা করেছেন তারা। ম্যাচ দ্রুত শেষ করার মতো প্রবণতা দেখা যায় তাদের মধ্যে। ছক্কা মারার দিকে বেশি ঝোঁক ছিল ব্যাটারদের। টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে আসলে এমন কোনো নির্দেশনা ছিল কি নাÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে কোচ সিমন্স জানান, ‘না, আমাদের কোনো নির্দিষ্ট ওভারের মধ্যে তাড়া করার দরকার ছিল না। আমাদের শুধু ম্যাচ জিততে হতো।’
সুপার ফোরের শেষ দুটি ম্যাচে চোটের কারণে খেলতে পারেননি অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। তার পরিবর্তে দলের নেতৃত্ব দেন আরেক উইকেটরক্ষক ও ব্যাটসম্যান জাকের আলী অনিক। লিটন না থাকায় মিডল অর্ডারে নুরুল হাসান, জাকের আলীরা খেলেছেন। ব্যাটিংয়ের সময় একজন নিখাদ মিডল অর্ডার ব্যাটারের ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে সিমন্স বিষয়টি মানতে চান না। এই ক্যারিবিয়ান কোচ বলেন, ‘দুই ম্যাচ আগেই বাংলাদেশ একই ব্যাটিং অর্ডার দিয়ে ১৬০ রান তাড়া করেছে। দারুণ ছন্দে থাকা অধিনায়ককে হারানো আমাদের জন্য বড় ইস্যু ছিল। তবু আমরা একই উইকেটে ১৬০ রান তাড়া করেছি। তখন ব্যাটাররা ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আপনি ভালো খেললেন কি না, তা ব্যাটিং অর্ডার ঠিক করে না। ব্যাটারদের সিদ্ধান্ত খারাপ হয়েছে।’ লিটন না থাকাতেই সব এলোমেলো? বাংলাদেশ কোচ জানান, ‘হ্যাঁ, ওর মতো ক্লাসের কেউ আচমকা না থাকলে কঠিন হয়ে যায় পরিস্থিতি।’ এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে সুপার ফোর পর্বে মিশন শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের। তাদের সামনে এখন আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাঠেই আফগানদের বিপক্ষে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। তাই শিগগির দেশে ফেরা হচ্ছে না ক্রিকেট দলের।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন