ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলন দমাতে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায়ের তারিখ ঘোষণা সামনে রেখে রাজধানীসহ দেশের অনেক স্থানে শুরু হয়েছে চোরাগোপ্তা হামলা। হঠাৎ করেই সোমবার ও মঙ্গলবার ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ফিরেছে আগুনসন্ত্রাস। দুই দিনে বেশ কয়েকটি বাস আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ময়মনসিংহে বাসের আগুনে ঘুমন্ত চালক পুড়ে নিহত হয়েছেন। একই জেলার ট্রেনেও আগুন দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানীতে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে শুরু হয়েছে ককটেল বা হাতবোমা ছুড়ে মারা।
একাধিক গোয়েন্দা ও পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মূলত ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় এসব চোরাগোপ্তা হামলায় জড়িত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কিংবা তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। কয়েকজন হাতেনাতে ধরা পড়ে স্বীকারও করেছেন। মূলত হাসিনার রায়ের তারিখ যাতে ঘোষণা না করতে পারে এবং আগামী নির্বাচন বানচাল করাই পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি তথা চোরাগোপ্তা হামলাকারীদের টার্গেট। তবে তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এদিকে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিগত আওয়ামী সরকারের আমলেও বহুবার সারা দেশে ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাস দেখা দেখা গেছে। তখনকার শাসক দলের মন্ত্রী-এমপি তথা নেতারা দাবি করতেন, বিএনপি-জামায়াতের লোকজন দেশে আগুনসন্ত্রাস চালিয়েছে। বহুদিন পর এখন যখন সেই পুরোনো আগুনসন্ত্রাস দেখা যাচ্ছে, তখন বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, এখন কারা বাসেসহ বিভিন্ন জায়গায় আগুন দিচ্ছে বা চোরাগুপ্তা হামলা শুরু করেছে? তবে শেখ হাসিনার রায়ের আগে এমন ঘটনাকে সাধারণ মানুষ পতিত আওয়ামী লীগকেই দায়ী করছেন। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও একইভাবে পলাতক আওয়ামী লীগের নেতাকর্র্মী তথ্যা ফ্যাসিস্ট দোসরদের দায়ী করছেন। জড়িত দুষ্কৃতিকারী ও নেপথ্যের ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তারা।
সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, দুষ্কৃতকারীরা ঢাকাসহ সারা দেশে নৈরাজ্য চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে তারা বেশ কিছু স্থাপনার ভেতরে-বাইরে ককটেল বিস্ফোরণ, ধারাবাহিকভাবে কিছু বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে। এসব ঘটনায় হতাহতও হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
এ নিয়ে ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নামে একটি দল এ পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ১৭টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এ ছাড়া গত দুই দিনে রাজধানীতে ৯টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এসব ঘটনায় ১৭টি মামলায় গত দুই দিনে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংগঠনটির গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ। দলটি ও তাদের অঙ্গ সংগঠন অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্য ১৪টি ঝটিকা মিছিল করেছে। এসব বিষয়ে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, গত সোমবার দিবাগত রাতে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়, এতে গাড়ির ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় জুলহাস মিয়া (৪০) নামের এক যুবক পুড়ে মারা যান। অন্যদিকে একই দিনে দুর্বৃত্তরা ময়মনসিংহের গৌরীপুরে জারিয়া অভিমুখী ৪৯ নম্বর বলাকা কমিউটার ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন ধরিয়ে দেয়। ইঞ্জিনে আগুন লাগার পর ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে দ্রুত ট্রেন থামিয়ে যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়। সৌভাগ্যক্রমে কেউ হতাহত হয়নি। এরপর রেললাইন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ফের আগুনসন্ত্রাস: গোয়েন্দা ও অপরাধ বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর আগে ২০১৪ ও ২০১৬ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সহিংসতার দায়ভার বিএনপি-জামায়াতের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হতো। এখন আবার ১০ বছর পর আগুনসন্ত্রাস, সহিংসতা ও ভাঙচুরের রাজনীতি সামনে এসেছে। এখন জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, আগে এসব নৈরাজ্য অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হতো, কিন্তু এখন এসব অপরাধমূলক ঘটনার নেপথ্যে কারা? নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশের মাটিতে এমন অস্থিতিশীল পরিবেশ অন্য কেউ করতে পারে না। আসলেই আওয়ামী লীগ ভয়াবহ সন্ত্রাসী এক দল হয়ে উঠেছে, যার প্রমাণ দেশের মানুষ দেখতে পারছে। এদিকে বিএনপিপন্থি একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের দাবিÑ আওয়ামী লীগ অগ্নিসন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাসী, যার কারণে তারা ঢাকাসহ সারা দেশে আগুনসন্ত্রাস, সহিংসতা, ভাঙচুর, মানুষ পোড়ানোর রাজনীতির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের হাত থেকে রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে গেলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে এবং সব ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করতে হবে। তাহলেই এরা শক্ত হাতে দমন হবে।
বড় ধরনের হামলা ও নাশকতার পরিকল্পনা, জনমনে আতঙ্ক: সম্প্রতি এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের তথ্যমতে, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছোট ছোট ঘটনার পর বড় ধরনের হামলা ও নাশকতার পরিকল্পনা করছেন, যার কারণে জনমনে আতঙ্ক ও বিভিন্ন শঙ্কা দেখা গেছে। যদিও এসব নৈরাজ্যকারীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক ও প্রস্তুত রয়েছে, তার পরও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা বিচ্ছিন্নভাবে একের পর এক সহিংসতার ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে। তবে নাশকতাকারীদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে, এ কারণে চোরাগুপ্তা হামলা ও নাশকতার আশঙ্কায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ দুর্বৃত্তরা কখন কোথায় কীভাবে হামলা করছে, তার আগাম কোনো তথ্য এখনো পায়নি সরকারের গোয়েন্দারা। অপরাধীরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়েই সুবিধাজনক স্থানে বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগ করছে।
হামলা-আগুনসন্ত্রাসের পেছনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত : এদিকে গোয়েন্দা সূত্রগুলো দাবি করছে, এসব হামলা-আগুনসন্ত্রাসের পেছনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত থাকার সম্ভাবনা বেশি। তাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ ও আলামত পাওয়ার পর পুলিশ বলছে, তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সারা দেশে নৈরাজ্যে জড়িত।
সূত্রাপুরে মালঞ্চ বাসে অগ্নিকা-: তথ্যমতে, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সূত্রাপুরে মালঞ্চ বাসে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া সোমবার মধ্যরাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় রাইদা পরিবহনের দুটি ও রাজধানী পরিবহনের একটি বাস পুড়ে যায়। এদিকে একই দিন রাত ১১টার দিকে বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির কার্যালয়ের সামনে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে তিনজন আহত হন। এ ঘটনায় এনসিপির নেতাকর্মীরা সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করে মারধর করেন। পরে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে দুটি ককটেলের মধ্যে একটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন এনসিপির নেতাকর্মীরা। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় একজন এনসিপি নেতা, একজন সিএনজি অটোচালক, একজন দোকানি আহত হন।
ময়মনসিংহে ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন, নেত্রকোনা ও ভৈরব রেললাইনে চলাচল বন্ধ: ময়মনসিংহে বলাকা কমিউটার ট্রেনের ইঞ্জিনে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে শম্ভুগঞ্জ ও বিসকা স্টেশনের মাঝামাঝি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এতে ময়মনসিংহের সঙ্গে নেত্রকোনা ও ভৈরব রেলপথের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দুই ঘণ্টা পর চলাচল স্বাভাবিক হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে রেল কর্তৃপক্ষ।
ময়মনসিংহে গভীর রাতে বাসে আগুন, পুড়ে মারা গেলেন চালক: অন্যদিকে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। এতে গাড়ির ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় এক ব্যক্তি পুড়ে মারা গেছেন। সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানায়, উপজেলার ভালুকজান এলাকায় একটি ফিলিং স্টেশনের সামনে আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাস দাঁড়িয়ে ছিল। বাসের ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলেন ভালুকজান গ্রামের বাসিন্দা জুলহাস মিয়া। ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকনুজ্জামান বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, মুখোশ পরা তিন ব্যক্তি মাত্র তিন সেকেন্ডের মধ্যে বাসে আগুন দিয়ে চলে যায়। এতে ভেতরে থাকা জুলহাস পুড়ে যান। নিহত ব্যক্তি বাসটির চালক ছিলেন বলে ধারণা করছি। আমরা বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি। ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।’
গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অন্তত দেশের ২০-৩০টি জায়গায় ককটেলের বিস্ফোরণ ও সহিংসতার তথ্য পাওয়া গেছে, যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা পুলিশের। তবে পুলিশ বলছে, দুর্বৃত্তরা সবাই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থক। তারাই আগুনসন্ত্রাস, সহিংসতা ও ভাঙচুরের রাজনীতি শুরু করেছে। ফ্যাসিবাদের দোসরার যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক রয়েছে এবং সরকারি দায়িত্ব পালন করছে।
ট্রাইব্যুনাল ফেস না করে যানবাহনে আগুন মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না- প্রসিকিউটর : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি (ফেস) না হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা, যানবাহনে আগুন দেওয়ার বিষয়টি সাধারণ মানুষ মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গাজী মোনাওয়ার এ কথা বলেন। নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মন্তব্য করে এক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ কেন এ ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে? ট্রাইব্যুনাল বা আদালত ফেস (মুখোমুখি) না করে রাস্তাঘাটে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা, যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষের ওপর নির্যাতন বা মানুষের ভোগান্তির কারণ সৃষ্টি করা নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেবে না। সাধারণ মানুষ এটাকে মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে তারা মনে করেন। একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ডিএমপির কমিশনার এসেছিলেন। নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে সার্বিকভাবে কোনো কথা হয়েছে কি না? আর রায়ের সার্বিক পরিস্থিতি কেমন? এর জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে ১৩ নভেম্বর রায়ের দিন নির্ধারণ করা হবে। কবে রায় হবে, এটা ১৩ নভেম্বর জানা যাবে। সেটাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ বা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এরই ধারাবাহিকতায় হয়তো গতকাল ডিএমপি কমিশনার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এসেছিলেন উল্লেখ করে প্রসিকিউটর বলেন, ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে কমিশনারের সঙ্গে প্রসিকিউশনের কোনো কথা হয়নি। বাইরে কী করে গেছেন, এটা কমিশনার ভালো জানবেন। তারা আশা করছেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, তাদের (প্রসিকিউশন) সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে। কোনো ধরনের চাপ নেই। রায়ের তারিখ এলে রায় হবে। আবু সাঈদের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এভাবেই ট্রাইব্যুনাল স্বাভাবিক গতিতে চলছে।
ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে, ১৩ তারিখ নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেইÑ ডিএমপি কমিশনার: ঢাকা মহানগরীতে বর্তমানে অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, ‘ঢাকাবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে যাত্রী কম এবং অরক্ষিত বাস টার্গেট করছে দুর্বৃত্তরা।’ এ সময় ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা ‘লকডাউন’ কর্মসূচিতে শঙ্কিত না হতে রাজধানীবাসীকে অভয় দেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখে ওই দিন নিয়ে শঙ্কা ও চিন্তার কোনো কারণ নেই। ওই দিন বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঢাকায় মোতায়েন থাকবেন।
সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার: সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছেÑ এমন সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এদিন সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে তিনি এ আহ্বান জানান। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউন নিয়ে সতর্ক আছে সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শক্ত অবস্থানে আছে, কোনো ধরনের আশঙ্কার কারণ নেই। কোনো ধরনের সন্ত্রাস সহ্য করা হবে না। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাবেন। তিনি বলেন, লকডাউন ঘিরে পেট্রোলিং বাড়ানো হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। রাস্তার ধারে পেট্রোল বেচা যাবে না। এগুলো দিয়ে অঘটন ঘটানো হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন