পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হতে পারে বা সেনাবাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেনÑ এ ধরনের গুজব সরাসরি নাকচ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। শুক্রবার লাহোরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে শাহবাজ শরিফ স্পষ্ট করে বলেন, ‘ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির কখনো প্রেসিডেন্ট হতে চাওয়ার কথা বলেননি, আর এমন কোনো পরিকল্পনাও নেই।’ শনিবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ। শাহবাজ বলেন, প্রেসিডেন্ট জারদারি, সেনাপ্রধান আসিম মুনির ও তার নিজের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ও আস্থার সম্পর্ক রয়েছে এবং তিনজনের লক্ষ্যই একÑ পাকিস্তানের অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। এর আগে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে ‘কুৎসিত প্রচারণা’ চালানো হচ্ছে। তিনি এই প্রচারণাকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘আমরা জানি কারা এর পেছনে রয়েছে। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ বা সেনাপ্রধানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো আলোচনা নেই।’ নকভি দাবি করেন, এই প্রচারণায় বৈরী বিদেশি উপাদান এবং দেশের ভেতরের একটি মহল জড়িত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘তারা বিদেশি এজেন্সির সঙ্গে মিলে পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে। আমরা দেশের স্বার্থ রক্ষায় যা করা প্রয়োজন তা-ই করব, ইনশাআল্লাহ। এদিকে, পাকিস্তান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রেজা গিলানি এই গুজবকে ‘পুরোপুরি বিভ্রান্তিমূলক তথ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। সম্প্রতি পাকিস্তানের বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও মিডিয়ায় দাবি করা হয়েছিল, রাজনৈতিক সমঝোতার অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট জারদারিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হতে পারে এবং সেনাপ্রধান প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে পারেন। তবে সরকার ও ক্ষমতাসীন জোটের পক্ষ থেকে একযোগে এই গুজব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। পাকিস্তানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সেনাবাহিনী ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের একতাবদ্ধ অবস্থান বজায় রাখার চেষ্টা করছে বলে পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন। শনিবার (১২ জুলাই) জিও নিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলোÑ পাকিস্তানের অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যেই আমরা তিনজন একসঙ্গে কাজ করছি।’ শাহবাজের বক্তব্যের আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভিও বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন। এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে ‘কুৎসিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা’ চালানো হচ্ছে। এদিকে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের চেয়ারম্যান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রেজা গিলানি এই গুজবকে ‘সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর তথ্য’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দেশে বিভ্রান্তি ও অস্থিরতা তৈরি করতেই এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, সেনাবাহিনী ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে বর্তমান সমঝোতা ও সমন্বয় পাকিস্তানের জন্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এ ধরনের গুজব সরকার ও নিরাপত্তাকাঠামোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তথ্যসূত্র : জিও নিউজ