যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফোনকলেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত থেমেছিল বলে ফের দাবি করেছেন তিনি। পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘অত্যন্ত ভয়ংকর ব্যক্তি’ বলে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত ট্রাম্প বৈঠক শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত শুরুর পর আমি অত্যন্ত ভয়ংকর ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদিকে টেলিফোন করেছিলাম। ফোনকলে আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, পাকিস্তানের সঙ্গে আপনাদের কী শুরু হয়েছে? তার রাগ ও ঘৃণা ছিল প্রচন্ড।
দুই দেশের মধ্যে এই অবস্থা অবশ্য অনেক দিন ধরেই চলছে। এটা অনেকটা শত শত বছর ধরে চলা শত্রুতাপূর্ণ মনোভাবের মোত।’ ট্রাম্প বলেন, ‘ফোনকলে আমি তাকে বলেছিলাম, আমি আপনাদের সঙ্গে কোনো বাণিজ্যিক চুক্তি করতে চাই না। আপনারা এই সংঘাত পরমাণু যুদ্ধতে নিয়ে যাওয়ার পর শেষ করবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি তাকে আরও বলেছিলাম, আগামীকাল আমাকে ফোন করবেন, যদি এই সংঘাত না থামান তাহলে আপনাদের সঙ্গে কোনো বাণিজ্য চুক্তি তো করবই না, উপরন্তু এমন উচ্চমাত্রার শুল্কারোপ করব, আপনাদের মাথা ঘুরতে থাকবে।’ গত ২২ এপ্রিল ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা শুরু হয় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। উত্তেজনার এক পর্যায় গত ৪ মে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীর ও পাঞ্জাবে কাশ্মীরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বা (লেট) এবং জইশ-ই মোহম্মদ (জেম)। ভারতের দাবি, অপারেশন সিঁদুরে ৭০ জনের অধিক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
ভারত অপারেশন সিঁদুরের জবাব দিতে ৭ মে থেকে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ শুরু করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর দাবি, তাদের এই অপারেশনে ভারতে ৩১ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হয়েছেন। ৫ দিন পাল্টাপাল্টি সংঘাতের পর ৯ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ। তবে যুদ্ধবিরতির জন্য ইসলামাবাদ ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দিলেও নয়াদিল্লি তা করেনি। ফলে ট্রাম্পের সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে নয়াদিল্লির।
সেই টানাপোড়েনের ধারাবাহিকতাতেই সম্প্রতি ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ রপ্তানি শুল্কারোপ করেছেন ট্রাম্প। এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত চারবার ফোন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু একবারও সেই ফোনকলে সাড়া দেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। কয়েকটি সূত্রের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই দাবি করেছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ফ্রাঙ্কফুর্টার অ্যালজেমেইন। তাদের প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য দিয়েছে রুশ বার্তা সংস্থা তাস। এ ছাড়া এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।