বাংলাদেশের বিমা শিল্পের ইতিহাসে বাংলাদেশ জেনারেল ইনসিওরেন্স কোম্পানি পিএলসির (বিজিআইসি) পথচলা কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের সাফল্যগাথা নয়, বরং একটি দূরদর্শী উত্তরাধিকার, আধুনিক নেতৃত্ব এবং নিপুণ বাস্তবায়নের এক অসাধারণ সমন্বয়। এই গল্পের কেন্দ্রে রয়েছেন তিনজন ব্যক্তিত্ব, যাদের সমন্বিত প্রয়াস বিজিআইসিকে আজ এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। সেই ত্রিভুজটি হলো; প্রতিষ্ঠাতা কিংবদন্তি এম এ সামাদ, চেয়ারম্যান তওহিদ সামাদ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আহমেদ সাইফুদ্দীন চৌধুরী।
অনুপ্রেরণাময় ব্যক্তিত্ব এম এ সামাদ
বিজিআইসির গোড়াপত্তন হয়েছিল একজন মহান ব্যক্তিত্বের হাতে, যিনি একাধারে বিমা ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি ছিলেন ভাষা আন্দোলনের এক অগ্রদূত। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে তার দৃঢ় অবস্থান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার রচিত ‘মিনার’ ম্যাগাজিন ছিল শিশুদের জন্য বাংলার প্রথম সাময়িকী। জীবন বিমা করপোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে দীর্ঘ কর্মজীবনের পর তিনি অবসরে না গিয়ে ১৯৮৫ সালে দেশের প্রথম বেসরকারি খাতের নন-লাইফ বিমা কোম্পানি হিসেবে বাংলাদেশ জেনারেল ইনসিওরেন্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। তার মূল দর্শন ছিল যে, বিমা কেবল আর্থিক সুরক্ষা নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কে একত্রিত করার এক শক্তিশালী মাধ্যম। এই দর্শনই বিজিআইসির ডিএনএ-তে মিশে আছে।
উত্তরাধিকারের মশাল ও ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব : তওহিদ সামাদ ও আহমেদ সাইফুদ্দীন চৌধুরী
প্রতিষ্ঠাতা এম এ সামাদের প্রয়াণের পর তার উত্তরাধিকারের মশাল হাতে তুলে নেন তারই সুযোগ্য পুত্র, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান তওহিদ সামাদ। তার দূরদর্শিতায় বিজিআইসি প্রতিষ্ঠালগ্নের মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুত না হয়ে আধুনিকতার পথে যাত্রা শুরু করে। এই যাত্রার চালিকাশক্তি হিসেবে তিনি পাশে পেয়েছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ ও ক্যারিশম্যাটিক নেতাকে, যিনি কোম্পানির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। তিনি বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইওর দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করছেন।
২০১৩ সালের ১ আগস্ট থেকে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জনাব চৌধুরী মূলত চেয়ারম্যানের দূরদর্শী নেতৃত্বের কার্যকর বাস্তবায়নকারী হিসেবে কাজ করে আসছেন। তার অসামান্য কর্মজীবন, যা চার দশকের অভিজ্ঞতা দিয়ে সমৃদ্ধ, বিজিআইসির প্রতিটি ক্ষেত্রে আন্ডাররাইটিং, অর্থ, ক্লেইম ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে একদল সুদক্ষ কর্মীবাহিনীর মাধ্যমে। এ ছাড়া দেশের বিমা খাতে বিজিআইসি কর্মীবান্ধব বিমা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনন্য অবস্থানে রয়েছে।
চেয়ারম্যান তওহিদ সামাদের নির্দেশনা এবং সিইও আহমেদ সাইফুদ্দীন চৌধুরীর দক্ষ পরিচালনায় বিজিআইসির যেসব গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে তার মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর আন্ডাররাইটিং এবং অনলাইন পরিষেবা চালু। এটি চেয়ারম্যানের আধুনিক বিমা সেবার লক্ষ্য বাস্তবায়নেরই প্রতিফলন। বাজার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বিমা খাতে কোম্পানির প্রসার ঘটানোয় তার কৌশলগত মনোযোগ, প্রতিষ্ঠাতা এম এ সামাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির দর্শনকে নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরেছে।
আর্থিক সাফল্যের দিক দিয়ে চেয়ারম্যানের পর্যালোচনায় উঠে আসা ২০২৪ সালের শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স (৮৫৪.৯৩ মিলিয়ন টাকা গ্রস প্রিমিয়াম) এই দুই নেতার সফল অংশীদারিত্বেরই উজ্জ্বল প্রমাণ। ঐক্যবদ্ধ ভিশন এবং ভবিষ্যতের অঙ্গীকার নিয়ে বিজিআইসির আজকের সাফল্য এই ত্রিমুখী নেতৃত্বের এক শক্তিশালী প্রতীক।
প্রতিষ্ঠাতা এম এ সামাদের আদর্শ, চেয়ারম্যান তওহিদ সামাদের দূরদর্শী তত্ত্বাবধান এবং সিইও আহমেদ সাইফুদ্দীন চৌধুরীর নিপুণ বাস্তবায়নের কারণে কোম্পানিটি একই সঙ্গে তার ঐতিহ্যকে ধারণ করছে এবং বিমা শিল্পের অত্যাধুনিক ধারার নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের যৌথ নেতৃত্বে বিজিআইসি কেবল একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয় বরং একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার পথচলা অব্যাহত রেখেছে; যা উদ্ভাবন, বিশ্বাস এবং দেশের উন্নয়নের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।
সেবাকে প্রাধান্য দিয়ে ১৯৮৫ সালের ২৯ জুলাই দেশের প্রথম বেসরকারি খাতের নন-লাইফ বিমা কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে, বাংলাদেশ জেনারেল ইনসিওরেন্স কোম্পানি (বিজিআইসি) এক অসাধারণ পথ পাড়ি দিয়েছে। ১০০ মিলিয়ন টাকা অনুমোদিত মূলধন নিয়ে যাত্রা শুরু করে বিজিআইসি দেশের বিমা খাতে ধারাবাহিকভাবে নিজেদের ভিত্তি মজবুত করেছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন অভিজ্ঞ বিমা ব্যক্তিত্ব আহমেদ সাইফুদ্দীন চৌধুরী, যার কর্মজীবন বিজিআইসির ইতিহাসের মতোই অবিচ্ছেদ্য। তিনি ১৯৮৬ সালে একজন জুনিয়র অফিসার হিসেবে বিজিআইসিতে যোগ দিয়ে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও পদে উন্নীত হয়েছেন- যা নিষ্ঠা ও গভীর দক্ষতার এক শক্তিশালী দৃষ্টান্ত। প্রায় চার দশকের কর্মজীবনে জনাব চৌধুরী আন্ডাররাইটিং, অর্থ, ক্লেইম এবং প্রশাসন- এসব ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে বিজিআইসির প্রবৃদ্ধির রূপকার হিসেবে কাজ করেছেন।
তার অবিচল নেতৃত্বে বিজিআইসি কেবল উল্লেখযোগ্য আর্থিক মাইলফলকই অর্জন করেনি, বরং এমন ডিজিটাল উদ্যোগও চালু করেছে যা কার্যক্রমকে আধুনিকীকরণ এবং বাজারে অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। বিশেষ করে, গ্রামীণ ও এসএমই খাতে কোম্পানির প্রসার ঘটানোর ক্ষেত্রে তার দূরদর্শিতা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যার মাধ্যমে তিনি সারা দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রসারে ভূমিকা রেখেছেন।
চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় সম্মানসহ ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে মার্কেটিংয়ে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তার নেতৃত্বে বিজিআইসি বিভিন্ন সেবামূলক ও প্রশাসনিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বিমা পেশার পাশাপাশি জনাব চৌধুরী সমাজসেবায়ও সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছেন। তার দূরদর্শী তত্ত্বাবধানে বিজিআইসি আগামীতে উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণের এই যাত্রা আরও অব্যাহত রাখবে।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                    -20251031020255.webp) 
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন