মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রহিম শেখ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২৫, ০৪:৫৫ এএম

চীনের হাত ধরে বাংলাদেশের ডিজিটাল বিপ্লব

রহিম শেখ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২৫, ০৪:৫৫ এএম

চীনের হাত ধরে বাংলাদেশের ডিজিটাল বিপ্লব

গত পাঁচ দশকে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে গড়ে উঠেছে এক দৃঢ় ও বহুমাত্রিক অংশীদারিত্ব যা বিস্তৃত বাণিজ্য, অবকাঠামো, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতে উন্নয়নের বন্ধন তৈরি করেছে। বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে চীনা কোম্পানিগুলো সরাসরি কাজ করছে বিশেষ করে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক, স্মার্ট ডেটা সেন্টার ও ক্লাউড প্রযুক্তিতে। সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ উদ্যোগের সঙ্গে চীনা প্রযুক্তির মেলবন্ধন নতুন বাজার ও সেবা খাতের জন্ম দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ ই-কমার্স, মোবাইল পেমেন্ট, এআইনির্ভর সাপ্লাই চেইন এবং ডিজিটাল কৃষি বাজার এখন দ্রুত প্রসার পাচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরে চীনা কোম্পানিগুলো টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি), কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স এবং ইলেকট্রিক যানবাহন (ইভি) খাতে চীনের বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা দেশের ডিজিটাল পরিকাঠামো নতুনভাবে গড়ে তুলছে। ফলে বাংলাদেশকে একটি বুদ্ধিমান ও প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিচ্ছে।

জানা যায়, চীনের প্রযুক্তি এখন বিশ্বজুড়ে এক অবিস্মরণীয় শক্তি। টেলিকম, স্মার্টফোন, এআই ও অবকাঠামো সব ক্ষেত্রেই চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশও এই প্রভাবের বাইরে নয়। বরং দেশের প্রযুক্তি ও টেলিকম খাতের দ্রুত বিকাশের পেছনে রয়েছে চীনা বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহায়তার বড় ভূমিকা, এর সঙ্গে বাড়ছে নির্ভরতা। বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি ও টেলিকম খাতের মানচিত্রে এখন এক নতুন বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, চীনের দৃঢ় উপস্থিতি ও ক্রমবর্ধমান প্রভাব। একসময় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো প্রযুক্তি উন্নয়ন ও বাজার দখলে নেতৃত্ব দিত, এখন সেখানে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্মার্টফোন, নেটওয়ার্ক অবকাঠামো, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) থেকে শুরু করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) পর্যন্ত প্রায় সব প্রযুক্তি খাতেই চীন আজ এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি। এই বৈশ্বিক প্রবণতার স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যায় বাংলাদেশেও। বাংলাদেশে প্রযুক্তি খাতের অবকাঠামো নির্মাণে চীনের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে টেলিকম খাতে। বর্তমানে গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটক এর নেটওয়ার্ক সেবার বড় অংশই চীনা প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশে ফোরজি নেটওয়ার্ক বাস্তবায়নের পেছনে যেমন ছিল হুয়াওয়ে ও জেডটিইর হাত, তেমনি ফাইভজি পরীক্ষামূলক নেটওয়ার্ক চালুর সময়ও চীনা প্রযুক্তিই নেতৃত্ব দেয়। এই সহযোগিতা শুধু টেলিকম সেক্টরেই নয়, বরং সরকারি প্রকল্প, স্মার্ট সিটি ও ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নেও বিস্তৃত হচ্ছে। প্রযুক্তি খাতে সর্বশেষ সংযোজন হিসেবে বাংলাদেশে ড্রোন উৎপাদনে চীনা মালিকানাধীন একটি কোম্পানি সাড়ে তিন মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধরনের ড্রোন উৎপাদন করবে। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে অবস্থিত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে (বেপজা ইজেড) ড্রোন উৎপাদনের জন্য এরোসিন্থ লিমিটেডকে অনুমতি প্রদান করেছে। উচ্চপ্রযুক্তিনির্ভর শিল্পে বিনিয়োগের ধারাকে আরও এগিয়ে নিতে এরোসিন্থ লিমিটেড এ বিনিয়োগ করছে বলে জানিয়েছে বেপজা। এটি হবে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ড্রোন উৎপাদনের দ্বিতীয় কারখানা। সম্প্রতি এ নিয়ে চুক্তি সই করেছে দুই প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ইপিজেডে চীনা মালিকানাধীন ডিরেকশন টেকনোলজি (বাংলাদেশ) লিমিটেড ৩০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে হেডফোন ও ডেটা ক্যাবল উৎপাদন কারখানা স্থাপন করছে। এতে ৪৭৮ জন স্থানীয় কর্মী নতুন চাকরিতে যুক্ত হবে। ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের একটি সামাজিক দায়বদ্ধতাবিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১,০০০ চীনা কোম্পানি কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা সম্মিলিতভাবে প্রায় ৫.৫ লাখ স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যে ৮০-১০০টি প্রযুক্তিকেন্দ্রিক কোম্পানি, যারা সরাসরি বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।

ডিজিটাল অবকাঠামো সম্প্রসারণে হুয়াওয়ে ও জেডটিই’র নেতৃত্ব

বাংলাদেশের ডিজিটাল অবকাঠামোর বড় অংশ এখন চীনা প্রযুক্তিনির্ভর। মোবাইল নেটওয়ার্কের যন্ত্রাংশ, ফাইবার অপটিক, সিসিটিভি ক্যামেরা, এমনকি সরকারি তথ্যপ্রযুক্তি প্রকল্পেও হুয়াওয়ে ও জেডটিই’র ভূমিকা বিশাল।

বাংলাদেশের টেলিকম কোম্পানিগুলোর (গ্রামীণফোন বাদে) প্রায় সবই চীনা সরঞ্জাম ব্যবহার করে। এ ছাড়াও সরকারি নিরাপত্তা অবকাঠামো, স্মার্ট সিটি প্রকল্প এবং ডেটা সেন্টারে চীনা কোম্পানির প্রযুক্তি রয়েছে। চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট হুয়াওয়ে ও জেডটিই বাংলাদেশের ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। হুয়াওয়ে দেশের সর্বত্র ৩জি, ৪জি এবং ৫জি নেটওয়ার্ক স্থাপনে নেতৃত্ব দিয়েছে, যা শহর ও গ্রামের মধ্যে ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সহজলভ্য করেছে। জেডটিই স্থানীয় টেলিকম অপারেটরদের সঙ্গে অংশীদার হয়ে নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ এবং সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে। এর মধ্যে অন্যতম প্রকল্প হচ্ছে কালিয়াকৈরের হাইটেক পার্কে একটি ‘টিয়ার-আইভি’ মানের জাতীয় ডেটা সেন্টার নির্মাণ। শুধু নেটওয়ার্কই নয়, হুয়াওয়ে সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি প্রকল্প যেমন ইনফো-সরকার ফেজ-২ ও ৩, স্মার্ট ক্লাসরুম, জাতীয় ডেটা সেন্টার এবং ক্লাউড সল্যুশনেও অংশগ্রহণ করেছে। এসব প্রকল্প ই-গভর্ন্যান্স, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ডিজিটাল শিক্ষার ভিত গড়তে সহায়ক হচ্ছে। এ ছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি সৌরশক্তিনির্ভর টেলিকম সমাধানে বিনিয়োগ করে দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে। হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন প্রধান তানভীর আহমেদ বলেন, ১৯৯৮ সাল থেকে হুয়াওয়ে বাংলাদেশের ডিজিটাল যাত্রায় গর্বের সঙ্গে অংশ নিচ্ছে-৩জি থেকে শুরু করে ৫জি, ই-গভর্ন্যান্স, ক্লাউড ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সল্যুশনের বিকাশে আমরা পাশে ছিলাম। তিনি আরও বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা নাগরিক ও শিল্প খাতকে ক্ষমতায়িত করছি। আমাদের অঙ্গীকার স্পষ্ট: ‘বাংলাদেশে, বাংলাদেশের জন্য।’

মোবাইল উৎপাদন শিল্পে অগ্রগতি

মাত্র আট বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোন উৎপাদন শিল্প বাংলাদেশে এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। এক সময় সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর থাকা বাজারটি এখন রূপ নিয়েছে একটি বিকাশমান শিল্প খাতে। চীনা ব্র্যান্ড- যেমন অপো, টেকনো, রিয়েলমি, ভিভো, শাওমিসহ প্রায় ১৭টি কোম্পানি বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন করেছে। এতে বিপুল কর্মসংস্থান ও প্রযুক্তি দক্ষতা গড়ে তুলছে। প্রযুক্তি বিশ্লেষক এম এন নাহিদ বলেন, স্মার্টফোন বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য গেম চেঞ্জার হয়েছে এবং এর পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে চীনা ব্র্যান্ডগুলো। বর্তমানে চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর সম্মিলিত বাজার শেয়ার ৯০ শতাংশেরও বেশি। তারা শুধু স্মার্ট ডিভাইসকে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করেনি, বরং শহর ও গ্রামে সমানভাবে ডিজিটাল গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে। নাহিদ আরও বলেন, তাদের আগ্রাসী মূল্যনীতি, উদ্ভাবনী চিন্তা এবং স্থানীয় অ্যাসেম্বলি উদ্যোগ কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রযুক্তি দক্ষতা বৃদ্ধিসহ ই-কমার্স ও ডিজিটাল পেমেন্ট খাতের বিকাশে সহায়ক হয়েছে। এতে বোঝা যায়, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি গভীর অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে উঠেছে, যা প্রযুক্তিনির্ভর অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করছে। শুধু রিটেইল নয়, শাওমি স্থানীয় অ্যাসেম্বলিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে, এমনকি পিসিবি (প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড) উৎপাদনও শুরু করেছে যা ইলেকট্রনিক্স পণ্যের মূল উপাদান। শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমাদের লক্ষ্য শুধু স্মার্টফোন নয়। আমরা স্থানীয়ভাবে বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষতা উন্নয়ন এবং একটি প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখছি।

ইলেকট্রিক যানবাহনে সবুজ বিপ্লব

বাংলাদেশের বাজারে নতুন মডেলের গাড়ি এনেছে চীনের শীর্ষস্থানীয় বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিওয়াইডি।

ইলেকট্রিক গাড়ি খাত দ্রুত গতি পাচ্ছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালে বিশ্বের বৃহত্তম ইভি নির্মাতা শেনজেনভিত্তিক বিওয়াইডি বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করার পর। প্রথম মডেল বাজারে আনার পর প্রতিষ্ঠানটি খুব দ্রুত দ্বিতীয় শোরুম চালু করেছে ঢাকায়। ‘বিওয়াইডি সিলায়ন ৬’ মডেলের গাড়িটি এক চার্জে ১ হাজার ৯২ কিলোমিটার পথ চলতে পারে। সুপার প্লাগ-ইন হাইব্রিড ইভি প্রযুক্তির গাড়িটি জ্বালানি সাশ্রয়ের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে বলে জানিয়েছে বিওয়াইডি। বিওয়াইডি বাংলাদেশের অফলাইন মার্কেটিং ও ক্যাটাগরি ডেভেলপমেন্ট প্রধান নাকিবুল ইসলাম খান বলেন, গ্রাহকদের সাড়া অভাবনীয়। আমরা ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ২৫০টির বেশি ইউনিট বিক্রি করেছি। তিনি আরও জানান, তারা ডিলার নেটওয়ার্ক বাড়ানো, চার্জিং অবকাঠামো শক্তিশালী করা এবং আরও সাশ্রয়ী মডেল আনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ইভিকে পৌঁছে দিতে চায়। বাংলাদেশের কার্বন নিঃসরণ কমানো ও পরিবেশবান্ধব পরিবহন নিশ্চিত করতে ইভি খাতকে জাতীয় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বিওয়াইডি এই রূপান্তরের নেতৃত্ব দিচ্ছে বিওয়াইডি সিল আই অটো ৩-এর মতো মডেলের মাধ্যমে এবং দেশজুড়ে চার্জিং স্টেশন তৈরির মাধ্যমে। এই প্রচেষ্টা বৈদ্যুতিক গাড়ি গ্রহণযোগ্যতা বাড়াচ্ছে, সবুজ চলাচলকে উৎসাহ দিচ্ছে এবং দেশের জলবায়ু ও জ্বালানি লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখছে।

অর্থনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাব

বাংলাদেশের ডিজিটাল ও প্রযুক্তি খাতে চীনা কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ইতোমধ্যে বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং স্থানীয় দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি একটি কৌশলগত সম্পর্কও গড়ে উঠেছে যা দুই দেশের ৫০ বছরের বন্ধুত্বের সাক্ষ্য বহন করে এবং ডিজিটাল ভবিষ্যতের প্রতি পারস্পরিক অঙ্গীকার প্রকাশ করে। উভয় দেশের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলছেন এই অংশীদারিত্ব কেবল বাণিজ্যিক প্রকল্প নয়; বরং উদ্ভাবন, সক্ষমতা নির্মাণ এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কৌশলগত প্রচেষ্টা। বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরে চীনা কোম্পানিগুলো এক গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে যেখানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন এবং পরিবেশগত স্থিতিশীলতা একসাথে এগিয়ে চলছে। চীন শুধু বিনিয়োগই নয়, প্রযুক্তিগত সহায়তার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশে চীনা কোম্পানিগুলো সরাসরি কাজ করছে—বিশেষ করে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক, স্মার্ট ডেটা সেন্টার ও ক্লাউড প্রযুক্তিতে। সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ উদ্যোগের সঙ্গে চীনা প্রযুক্তির মেলবন্ধন নতুন বাজার ও সেবা খাতের জন্ম দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ ই-কমার্স, মোবাইল পেমেন্ট, এআই-নির্ভর সাপ্লাই চেইন এবং ডিজিটাল কৃষি বাজার এখন দ্রুত প্রসার পাচ্ছে। এসবই বাজার অর্থনীতির নতুন জগত তৈরি করছে, যেখানে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন মূল্য নির্ধারণ ও প্রতিযোগিতাকে প্রভাবিত করছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিডা) ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ৫০ বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন আরও শক্ত ও কার্যকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। দুই দেশের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নতুন সুযোগের দরজা খুলে দিচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, চীন আমাদের অন্যতম বড় বিনিয়োগ অংশীদার। টানা ১৫ বছর ধরে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় এক হাজার চীনা কোম্পানি কাজ করছে। রোচি জানান, অবকাঠামো উন্নয়ন, তৈরি পোশাক, ওষুধ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) ও ইলেকট্রনিক্স খাতে চীনা বিনিয়োগ এখন আরও বাড়ছে। চীনা বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখে আমরা আশাবাদী যে, এসব খাতে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে ইতোমধ্যে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হয়েছে। এখন দ্বিতীয় অঞ্চল তৈরির কাজ চলছে। আমরা বিনিয়োগকারীদের জন্য কর ও অন্যান্য প্রণোদনায় বেশ আকর্ষণীয় সুযোগ দিচ্ছি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!