আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা অদূর ভবিষ্যতে প্রত্যাহার হবে না এবং নির্বাচনের পরও তা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। গতকাল বুধবার দুপুরে বরিশাল নগরীর নতুন বাজার এলাকার শংকর মঠ পূজাম-প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। এদিকে একই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো কথাই প্রধান উপদেষ্টা বলেননি।
বরিশালে আইন উপদেষ্টা বলেন, যখন একটা দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়, তখন তা স্থায়ী না অস্থায়ীÑ এ ধরনের প্রশ্ন আসে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হবেÑ এরকম কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না। ‘আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে যা কিছু বলেছেন, তা তাত্ত্বিক (থিওরিটিক্যাল)। আগামী নির্বাচনের আগে তো নয়ই, অদূর ভবিষ্যতেও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ’
ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে রাজনৈতিক দলের সংযোগ ছাড়া তা সম্ভব নয়। তারপরও সাধারণ এবং সরকারি অধ্যাদেশ দিয়ে যেগুলো সম্ভব, তা সংস্কার করেছি। আর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের কথা আমাদের প্রধান উপদেষ্টা নির্ধারণ করেছেন, তা ঠিক ওই সময়েই হবে। নির্বাচন দিয়েই আমরা চলে যেতে চাই।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘এবারের দুর্গাপূজা অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে এবং নির্বিঘেœ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, এ দেশে সবার সমান অধিকার। এ ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। এ সময় পাহাড়কে যারা অশান্ত করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।’
‘আ.লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো কথাই বলেননি প্রধান উপদেষ্টা’: এদিকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো কথাই প্রধান উপদেষ্টা বলেননি বলে দাবি করেছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। একটি অনলাইন পোর্টালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, যিনি প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারটি অনুবাদ করেছেন, সেখানে একটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা কখনই বলেননি, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে। তিনি কেবল আওয়ামী লীগের স্ট্যাটাস সম্পর্কে তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা কোনোভাবেই উল্লেখ করেননি, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। অনুবাদে যদি কোনো বক্তব্য আংশিকভাবে বা প্রেক্ষাপট ছাড়াই নেওয়া হয়, তাহলে তা ভুল অর্থ প্রকাশ করতে পারে। সামগ্রিকভাবে দেখা গেলে বোঝা যায়, প্রধান উপদেষ্টা আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা বা কার্যক্রমে কোনো ছাড়ের কথা বলেননি এবং এ বিষয়ে কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ নিয়ে প্রেস সচিব বলেন, এটি একটি অনুবাদজনিত সমস্যা। পিআইবির বাংলা ফ্যাক্ট চেক বিষয়টি যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করেছে। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য স্পষ্টÑ আওয়ামী লীগের ওপর বর্তমান থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো কথা তিনি বলেননি। নিষেধাজ্ঞা যেখানে আছে, সেখানে থাকবে। সরকারের কোনো পরিকল্পনাই নেই আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার।