ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম তুরস্কে থেকে আজ সকালে দেশে ফিরছেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে গতকাল শুক্রবার রাতে এক বার্তায় জানায়, আজ শনিবার ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে শহিদুল আলমের ফ্লাইটটি ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক জানিয়েছেন, আজই (শুক্রবার) ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করছেন শহিদুল আলম। ইস্তাম্বুলের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ঢাকা উদ্দেশে উড্ডয়ন করবে। ওই ফ্লাইটে দেশের পথে যাত্রা করবেন শহিদুল আলম। ফ্লাইটটি আগামীকাল (শনিবার) ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা পৌঁছাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এর আগে টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তিনি গতকাল শুক্রবার বিকেলে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছান। ইস্তাম্বুলে পৌঁছানোর পর বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান তাকে স্বাগত জানান। ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের পতাকা হাতে শহিদুল আলমের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। ভিডিওতে তাকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এদিকে শহিদুল আলমের মুক্তি এবং ইসরায়েল থেকে তার প্রত্যাবর্তনে সহায়তার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক বার্তায় তার মুক্তির কথা জানানো হয়।
মুক্তি-পরবর্তী সময়ে আলোচিত্রী শহিদুল আলম তার ফেসবুক পেজে এক পোস্টে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রধান উপেদেষ্টার ভাষণে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এই অঞ্চলের সংকট নিরসনে দ্বিরাষ্ট্রের যে রূপরেখা দিয়েছিলেন, সেটি স্মরণ করিয়ে দেন।
শহিদুল আলম দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নৃশংসতা বন্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলি নৌ অবরোধ ভাঙার প্রত্যয় নিয়ে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম নৌযাত্রা শুরু করেছিল গাজা অভিমুখে। ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে আত্মপ্রকাশ করা আরেক উদ্যোগ থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজার আটটি নৌযানও এ যাত্রায় অংশ নিয়েছিল। মোট ৯টি নৌযানের এই বহরে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। সেই দলে ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম।
গত বুধবার গাজাগামী নৌবহর ফ্রিডম ফ্লোটিলার জাহাজগুলো দখল করে নেয় ইসরায়েলি বাহিনী। ওই বহরে ‘কনশানস’ নামের একটি জাহাজে ছিলেন শহিদুল আলম।তাকেসহ জাহাজগুলোতে থাকা অধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় ইসরায়েলের কারাগারে। বাংলদেশ সরকার এর তীব্র নিন্দা জানায়।
গত বুধবার ওই নৌবহরে আক্রমণ করে সব অধিকারকর্মী ও নাবিককে ধরে নিয়ে যায় ইসরায়েলি সেনারা। পরে শহিদুল আলমসহ আটক অনেককে ইসরায়েলের কেৎজিয়েত কারাগারে নেওয়া হয়। ইসরায়েলে আটক হওয়ার পর থেকেই শহিদুল আলমের মুক্তি নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকার জর্ডান, মিশর ও তুরস্কের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছিল।