শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শাওন সোলায়মান

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ০১:২৪ এএম

চাকরি ছেড়ে ফের পুনর্বহালের আবেদন

শাওন সোলায়মান

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ০১:২৪ এএম

জাহাঙ্গীর আলম। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

জাহাঙ্গীর আলম। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

দীর্ঘ ১৬ বছর একই পদে কর্মরত থাকা এবং পদোন্নতি না পাওয়ায় অভিমানে চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসির (বিএসসিপিএলসি) উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম-পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. জাহাঙ্গীর আলম। পদত্যাগের আবেদন গ্রহণ করে জাহাঙ্গীর আলমকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়। তবে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা সেই ডিজিএম জাহাঙ্গীর এখন আবার চাকরি ফিরে পেতে নানান জায়গায় ধরনা দিচ্ছেন। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘদিন পদোন্নতিবঞ্চিত থাকা একদিকে যেমন বিএসসিপিএলসির বাস্তবতা তেমনি জাহাঙ্গীর আলমকে ঘিরে রয়েছে নানান বিতর্ক।

২০০৯ সালের ৬ মে প্রতিষ্ঠানটিতে ডিজিএম পদে যোগ দেন জাহাঙ্গীর আলম। সেই থেকে চলতি বছরের গত ১৩ মে পর্যন্ত একই পদে ছিলেন তিনি। এতে অভিমানী হয়ে গত ১৩ মে চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে ইস্তফা দিয়ে চিঠি দেন জাহাঙ্গীর।

চিঠিতে ওই কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, পদোন্নতির জন্য বিভিন্ন এমডি বরাবর অনেকবার আবেদন করলেও আমি কোনো আশানুরূপ ফলাফল পাইনি। একদিকে আমার পরিবার ১৬ বছর যাবত আমাকে একই পদে কর্মরত দেখে আসছে এবং অন্যদিকে আমার সমসাময়িক বন্ধু-বান্ধব হতে শুরু করে ছোট ভাইয়েরাও বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমার থেকে জ্যেষ্ঠ পদে কর্মরত আছে। ফলে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার পাশাপাশি আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। এমন প্রেক্ষাপটে চাকরি চেয়ে অব্যাহতি চান জাহাঙ্গীর আলম।

জাহাঙ্গীরের আবেদন বিএসসিপিএলসির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক গৃহীত হয়। জাহাঙ্গীর আলমের অভিপ্রায় অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে গত ৬ জুন চিঠি দেয় প্রতিষ্ঠানটি। জাহাঙ্গীরের আবেদনের তারিখ অর্থাৎ গত ১৩ মে থেকেই তার অব্যাহতি কার্যকর করা হয়। তবে এই অব্যাহতিপত্র ফিরিয়ে নিয়ে চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য আবার নতুন করে আবেদন করেছেন জাহাঙ্গীর আলম। শুধু তাই নয়, নিজেকে পুনর্বহাল করতে বিএসসিপিএলসির পরিচালনা পর্ষদের ওপর চাপ দিতে বিভিন্ন জায়গায় তদবির করছেন জাহাঙ্গীর আলম।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের (পিটিডি) একটি সূত্রের মতে, চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম বর্তমানে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুশোচনায় ভুগছেন। আবেগের বশবর্তী হয়ে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যা এখন ভুল সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচনা করছেন। এ কারণেই তিনি প্রতিনিয়ত মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছেন এবং বিএসসিপিএলসির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব জহিরুল হকের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন বলেও জানা গেছে।

জাহাঙ্গীর আলম যাদের কাছে তদবির করছেন, তেমন একটি সূত্র রূপালী বাংলাদেশকে জানান, বিভিন্ন জনের কাছে গিয়ে ইস্তফাপত্রটি নিজে প্রদান করেননি বলে দাবি করছেন তিনি। তবে মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, চিঠিটি তার নিজস্ব ডিজিটাল নথি (ডি-নথি) অ্যাকাউন্ট থেকেই প্রেরিত হয়েছে, যা তার প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে।

জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের বিষয়টি আগামী রোববারের বোর্ড সভায় পরিচালনা পর্ষদের সামনে উত্থাপিত হবে। গত বুধবার মন্ত্রণালয়ের কোম্পানি-২ অধিশাখার উপসচিব কানিজ ফাতেমা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবর এ বিষয়ে এক চিঠি দেওয়া হয়। জাহাঙ্গীর আলমের আবেদন সংযুক্ত করে বিষয়টি পরবর্তী বোর্ড সভায় উপস্থাপনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয় ওই চিঠিতে।

তবে জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে বিতর্ক এখানেই শেষ নয়। প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে জাহাঙ্গীর আলমই একমাত্র কর্মকর্তা, যিনি এর আগে দুইবার চাকরিচ্যুত হয়েছেন। দুর্নীতির দায়ে ২০১২ এবং ২০১৭ সালে দুই দফায় চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তার নিয়োগে পদোন্নতি কমিটির কোনো সুপারিশও ছিল না এবং তিনি একাধিকবার বরখাস্ত হয়েছেন। কিন্তু শুধু রাজনৈতিক কারণে দুর্নীতি প্রমাণ হলেও তাকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

উপরন্তু, ২০২৩ সালের আগস্টে পুলিশের বিশেষ শাখার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগের একজন কর্মী এবং তার পরিবারও আওয়ামী লীগ সমর্থক।’ এই প্রতিবেদনের কপি রয়েছে রূপালী বাংলাদেশের কাছে।

এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে বৃহস্পতিবার পরিবারের সাথে থাকায় কথা বলতে চাননি জাহাঙ্গীর আলম। পরে প্রতিবেদকের সাথে যোগাযোগ করবেন উল্লেখ করলেও, এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত তিনি আর যোগাযোগ করেননি।

ইস্তফা দিয়ে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়া কর্মকর্তা আবার আবেদন করে চাকরিতে পুনর্বহাল হতে চাইলে, সেই সুযোগ আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বিএসসিপিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম হোসেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, বিষয়টি আমার নিজেরও জানা নেই। আমাদের নিজস্ব কোম্পানি আইন এবং সরকারি চাকরিবিধিমালায় কী আছে, সেগুলো বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে বলা যাবে। তবে বিষয়টি শুধু কোম্পানির এখতিয়ারে নেই এখন। মন্ত্রণালয় এবং আমাদের বোর্ড তথা পরিচালনা পর্ষদের এখতিয়ার। দেখা যাক কী হয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!