রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ০১:৪৮ এএম

সাক্ষাৎকার

পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায় না বিএনপি

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ০১:৪৮ এএম

পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায় না বিএনপি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য মাহিদুর রহমান। ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি। দীর্ঘদিন দলটির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন সফলভাবে। দীর্ঘ ৪৬ ধরে বছর বিএনপির ঝা-া নিয়ে দেশের পাশাপাশি ঘুরে বেড়াচ্ছেন ইউরোপ-আমেরিকায়। দলকে সুসংগঠিত করতে কাজ করছেন নিরলসভাবে। গত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্তরাজ্যেও নেতৃত্বে ছিলেন অগ্রভাবে। দেশের বর্তমান রাজনীতি ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে সম্প্রতি মুখোমুখি হয়েছিলেন রূপালী বাংলাদেশের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রূপালী বাংলাদেশের সিনিয়র রিপোর্টার সেলিম আহমেদ

রূপালী বাংলাদেশ: রাজনীতিতে আপনার যাত্রার বিষয়ে জানতে চাই?
মাহিদুর রহমান: আমি জিয়াউর রহমানকে দেখে ১৯৭৮ সালে রাজনীতিতে আসি। তবে ১৯৭৫ সাল থেকেই তাকে অনুসরণ করি। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষণজন্মা একজন রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশের জন্যই জন্মগ্রহণ করেছেন। জিয়াউর রহমান যখন দল গঠন করেন তখন দলীয় সংগীত দিয়েছিলেন ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার, শেষ বাংলাদেশ’। তার প্রতিষ্ঠিত দলের একটি আদর্শ ‘দেশকে ভালোবাসো, মানুষকে ভালোবাসো’। দেশের গণতন্ত্র, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া এই দলের অন্যতম লক্ষ্য।

জিয়াউর রহমান তার ও পরিবারের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তখন অনেক মিলিটারি অফিসার, রাজনীতিবিদ স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। তারা নানা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। যদি দেশ স্বাধীন না হতো তাহলে কী হতো? কোর্ট মার্শাল হয়ে জিয়াউর রহমানের ফাঁসি হয়ে যেত। তার পরিবার নিঃশেষ হয়ে যেত। তার এই আত্মত্যাগে অনুপ্রাণিত হয়েই বিএনপির রাজনীতি শুরু করি। 

রূপালী বাংলাদেশ: বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতির বিষয়ে আসি। আমরা দেখেছি, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির ভালো সম্পর্ক ছিল। এখন দল দুটি মুখোমুখি অবস্থানে কেন?

মাহিদুর রহমান: এটা জামায়াতের ব্যর্থতা বলেই মনে করি। কোনো দলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খারাপ ছিল না। আওয়ামী লীগকেও জিয়াউর রহমান রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বাকশাল থেকে এনে আবার আওয়ামী লীগ নাম দিয়েছিলেন। পতিত শেখ হাসিনার বাবা প্রয়াত শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের নাম বদলে বাকশাল নাম দিয়েছিলেন। এতেই প্রমাণিত হয়, আমাদের দলের আদর্শ কোনো দলের বিরুদ্ধে নয়। বহুদলীয় গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করেছে বিএনপি। এমনকি জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগও জিয়াউর রহমানই দিয়েছেন। এর কারণে আওয়ামী লীগ আমলে আমরা অভিযুক্ত হয়েছি। সুশীল সমাজ এ নিয়ে নানা সমালোচনা করেছেন। তবে জামায়াত এনসিপিকে নিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সর্বশেষ যে স্লোগান দিলÑ এটা ন্যক্কারজনক। এটা আমাকে আহত করেছে। তারেক রহমান বিগত ১৭ বছর থেকে নির্যাতিত, নিপীড়িত। উনার মা বেগম খালেদা জিয়া জেল খেটেছেন, দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে গিয়ে দলের অনেক নেতাকর্মীরা গুম, খুনের শিকার হয়েছেন। তবুও আমাদের লড়াই থেমে থাকেনি।

রূপালী বাংলাদেশ: বিএনপিকে নিয়ে এত ষড়যন্ত্র কেন হচ্ছে বলে মনে করেন? 
মাহিদুর রহমান: বিএনপি অত্যন্ত জনপ্রিয় দল। বিএনপি জনগণের ওপর বিশ্বাস করে রাষ্ট্রের স্বার্থ নিয়ে রাজনীতি করে। তারা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় না। এবারই শুধু নয়, বিএনপিকে ধ্বংস করতে ওয়ান ইলেভেন আনা হয়েছিল। আবার বিগত ১৫ বছর জাতীয়তাবাদী শক্তি ও ইসলামি মূল্যবোধের শক্তিকে ধ্বংস করা হয়েছিল। বিএনপির টপ টু বটম কোনো নেতাই ষড়যন্ত্র বোঝেন না। বিএনপি জনগণের আগ্রহ, দেশের স্বার্থ ও গণতন্ত্রকে প্রাধান্য দিতে চায়। এসব বিষয়ে বিএনপি কোনো আপস করেনি। তারেক রহমান আঁতাত করে ওয়ান-ইলেভেনের সময় চাইলেই ক্ষমতায় আসতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। আগামীতেও আঁতাত করে ক্ষমতায় আসবে না। 
রূপালী বাংলাদেশ: দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু কতটুকু হবে? 

মাহিদুর রহমান: নির্বাচন তো সুষ্ঠু হওয়ার কথা। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। তবে আমাদের নেতা তারেক রহমান বারবার বলেছেন, আগামী নির্বাচন খুবই কঠিন হবে। এজন্য নেতাকর্মীদের বলছেন, জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। তাদের পছন্দ করতে দেন কোন দল যোগ্য। যারা জনবান্ধব বা কর্মীবান্ধব নেতা হয় তাদের জন্য রাজনীতি অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। বিএনপি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। আমরা পেছনের দরজা নিয়ে কখনো ক্ষমতায় আসতে চাই না। অতীতেও চাইনি। আমাদের নেতা তারেক রহমান বারবার বলেছেন, আগামীতে রাষ্ট্র বিনির্মাণে তিনি যোগ্য মানুষদের নিয়ে সরকার গঠন করবেন। এমনকি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা ঐকমত্য পোষণ করেছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার গঠন করবেন। 

রূপালী বাংলাদেশ: আপনি দীর্ঘদিন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। আপনার দৃষ্টিতে আমাদের দেশের পররাষ্ট্র নীতির দুর্বলতাগুলো কী কী? 

মাহিদুর রহমান: আমাদের পররাষ্ট্র নীতির দুর্বলতা হলো আমাদের প্রপার ডিপ্লোম্যাট নেই। আমরা সঠিক মানুষকে, সঠিক জায়গা দিচ্ছি না। আমরা কীভাবে ভালো সম্পর্ক রাখতে হয়, সেটাও জানি না। জিও পলিটিক্স জানা সঠিক মানুষকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সঠিক জায়গায় পাঠাতে পারলেই এই সংকট দূর হবে। 

রূপালী বাংলাদেশ: তারেক রহমানকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। উনার রাজনীতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মাহিদুর রহমান: তিনি খুবই দক্ষ, প্রতিভাবান এবং দেশপ্রেমিক নেতা। তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা অনেক। বিদেশে থেকেই দেশে নিজের দলকে সুন্দরভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সাধারণ মানুষের খোঁজখবর রাখছেন। বলা যায়, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত দেশের সঙ্গে নানাভাবে সম্পৃক্ত থাকেন তিনি। তার বাবার যে গুণগুলো ছিল তা তারেক রহমানের মধ্যেও রয়েছে। 

রূপালী বাংলাদেশ: বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য বিদেশের দুয়ার দিন দিন বন্ধ হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কেমন উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন। 

মাহিদুর রহমান: দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। বিশ্বের সব দেশেই দক্ষতা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার দাম আছে। সরকারের তত্ত্বাবধানে সঠিক জায়গায় সঠিক মানুষ প্রেরণ করতে হবে। জনশক্তি ও জন রপ্তানি নিয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে আরও গবেষণা করতে হবে। কোথায় কেমন শ্রমিক পাঠানো প্রয়োজনÑ সেটা নির্ধারণ করতে হবে। 
রূপালী বাংলাদেশ: তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। তিনি কবে নাগাদ দেশে ফিরতে পারেন?
মাহিদুর রহমান: তিনি তো অবশ্যই দেশে ফিরবেন। দেশে তাকে ফিরতেই হবে। তাকে জোর করে লন্ডনে পাঠানো হয়। পাঠানোর আগে তাকে হত্যারও চেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা চাই আমাদের নেতা দেশে ফিরে আসুক। বিদেশে থেকে যেভাবে তিনি মানুষ ও দলের পাশে ছিলেন, সেভাবে দেশেও তার উপস্থিতি থাকুক। আমার ব্যক্তিগত ধারণা, তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। এ ছাড়াও কিছু আইনি জটিলতাও এখনো রয়েছে। সঠিক সময়ে তিনি দেশে ফিরবেন বলেই আমি মনে করি। 

রূপালী বাংলাদেশ: আসন্ন নির্বাচনে আপনার অংশগ্রহণ এবং প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাই।মাহিদুর রহমান: আমি একজন রাজনীতিবিদ। একটি দলের হয়ে প্রায় ৪৬ বছর থেকে রাজনীতি করছি। দেশে কম রাজনীতি করলেও বিদেশে বেশি করেছি। দেশের জন্য, দলের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করেছি। গত ১৭ বছর খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছি। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের অবৈধ কার্যকলাপ নিয়ে কথা বলেছি। চার যুগের বেশি সময়ের এই রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে আমার এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় আমার জন্ম। এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে আমি ছিলাম। ১৭ বছর পর দেশে ফিরে দেখলাম, এলাকার মানুষ ও দলের নেতাকর্মীরা আমাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহণ করেছেন। আমার এলাকা মৌলভীবাজার-৩ (মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর) আসনে নির্বাচন করার ইচ্ছা রয়েছে। যদিও এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। তবে, দল যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা আমি মেনে নিব। 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!