ঢাকা সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

ফ্লাইট এক্সপার্টের অর্থ আত্মসাতের মামলায় তিন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০১:৩৪ এএম

বিমানের অনলাইন টিকিট বুকিংয়ে দেশের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’-এর বিরুদ্ধে গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ফ্লাইট এক্সপার্টের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার তিনজন হলেনÑ ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’-এর হেড অব ফিন্যান্স সাকিব হোসেন (৩২), চিফ কমার্শিয়াল অফিসার সাঈদ আহমেদ (৪০) ও চিফ অপারেটিং অফিসার এ কে এম সাদাত হোসেন (৩২)। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন গতকাল রোববার বলেন, বিপুল সরকার নামের এক গ্রাহক গত শনিবার রাতে মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন। এতে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি দুজন আসামি হলেন ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রাশিদ শাহ সাঈম ও তার বাবা এম এ রাশিদ। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি।


থানা সূত্রে জানা গেছে, ১৭টি ভুক্তভোগী এজেন্সি তাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ জানিয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বলে জানা গেছে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায় ফ্লাইট এক্সপার্ট। এতে ভোগান্তিতে পড়েন টিকিট বিক্রেতা এজেন্সি ও হাজারো গ্রাহক। তারা অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের জন্য অর্থ পরিশোধ করেছিলেন।
ফ্লাইট এক্সপার্টের একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ, প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে মালিকপক্ষ দেশ ছেড়েছে। এতে গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের কোটি কোটি টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
রাজধানীর মতিঝিলে ফ্লাইট এক্সপার্টের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অনেক মানুষ সেখানে ভিড় করেছেন। তাদের অনেকেই বিভিন্ন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও টিকিট বিক্রেতা এজেন্সির প্রতিনিধি, যারা নিজেদের কেনা টিকিটগুলো কী হবে, তা জানতে চান। কিন্তু কার্যালয়ে গিয়ে অধিকাংশই হতাশ হন।
২০১৭ সালের মার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ফ্লাইট এক্সপার্ট। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এয়ারলাইনসের টিকিট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন (কক্ষ সংরক্ষণ), ট্যুর প্যাকেজ ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণের মতো বিভিন্ন সেবা দিত তারা। বিশেষ করে কম খরচে সহজে টিকিট বুকিংয়ের সুবিধার কারণে প্ল্যাটফর্মটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।


একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ফ্লাইট এক্সপার্ট নিজেরা সরাসরি উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে টিকিট না নিয়ে দুটি মধ্যস্থতাকারী এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করত। এখন ওই দুটি এজেন্সি নিজেদের কেনা টিকিটগুলো রিফান্ড (ফেরত) করে অর্থ তুলে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।


ফ্লাইট এক্সপার্টের অভ্যন্তরীণ একটি ফেসবুক গ্রুপে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রশিদের একটি বার্তার স্ক্রিনশট পেয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। সেখানে তিনি দাবি করেন, প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তা তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তিনি নিজেকে হুমকি ও অপবাদ থেকে রক্ষা করতেই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিচ্ছেন এবং দেশ ছাড়ছেন।


হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান বিন রশিদ টাকা নিয়ে পালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন।