শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সাহাব উদ্দিন ও জালালউদ্দিন সাগর, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ১২:৪৫ এএম

অর্থাভাবে বন্ধের পথে পুরস্কারজয়ী প্রকল্প

সাহাব উদ্দিন ও জালালউদ্দিন সাগর, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ১২:৪৫ এএম

অর্থাভাবে বন্ধের পথে পুরস্কারজয়ী প্রকল্প

মাসে মাত্র ৬ লাখ টাকার অভাবে বন্ধ হতে যাচ্ছে ‘স্মার্ট জেলা উদ্ভাবন চ্যালেঞ্জ’ পুরস্কার পাওয়া চট্টগ্রামের ‘স্মার্ট স্কুলবাস’ কার্যক্রম। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে আগামী মাস (সেপ্টেম্বর) থেকে স্কুলবাস চালানো সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ। অথচ ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে চালু হওয়া এই প্রকল্পের জন্যই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন পেয়েছিল ‘স্মার্ট জেলা উদ্ভাবন চ্যালেঞ্জ’ খেতাব। জিতেছিল ৮০ লাখ টাকা। কিন্তু সেই পুরস্কারজয়ী প্রকল্পই এখন বন্ধের পথে।

জানা যায়, সন্তানকে বিদ্যালয়ে আনা-নেওয়া ঝক্কি-ঝামেলা ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগ থেকে রেহাই দিতে স্মার্ট স্কুলবাস সার্ভিসের উদ্যোগ নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। বিআরটিসির সহায়তায় চট্টগ্রাম মহানগরে প্রতিদিন ১০টি বিদ্যালয়ের তিন হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে আনা-নেওয়া করে দোতলা বাস। দুই বছর আগে চালু সেই উদ্যোগ এবার অর্থসংকটে বন্ধ হওয়ার পথে।

তথ্যসূত্র বলছে, ২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের উদ্যোগে চালু হয় স্মার্ট স্কুলবাস সার্ভিস। নগরীর পাঁচটি রুটে ১০টি দোতালা বাসে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা চলাচল করতেন। স্মার্ট স্কুলবাস চালুর পর দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়েছিল জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগ। স্কুলবাসে ওঠার পর মোবাইল প্রযুক্তির মাধ্যমে মুঠোবার্তা চলে যেত অভিভাবকদের কাছে। বাস থেকে নামলেও শিক্ষার্থীরা কোথায় নেমেছে আর কখন নেমেছে, সেই বার্তাও মুঠোফোনে জানতে পারেন অভিভাবকরা। ফলে তারা সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে পারেন।

প্রতিটি বাসে ৭৮টি আসন রয়েছে। বর্তমানে বাসগুলো বহদ্দারহাট-মুরাদপুর থেকে নিউমার্কেট হয়ে চকবাজার-গনি বেকারি-জামালখান-চেরাগী পাহাড়-আন্দরকিল্লা-লালদীঘি কোতোয়ালি এবং অক্সিজেন থেকে মুরাদপুর-২ নম্বর গেট-জিইসি-টাইগার পাসসহ ১০টি রুটে চলছে।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগের কারণে উদ্যোক্তা হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের পক্ষ থেকে জেলা পর্যায়ে সেরা ও প্রথম পুরস্কায় পায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন এবং আধুনিকীকরণ করতে সে সময়ে ৮০ লাখ টাকা পুরস্কারও দেওয়া হয় জেলা প্রশাসনকে।

জিপিএইচ ইস্পাতের স্পন্সরশিপে খরচ বাবদ বিটিআরসিকে প্রতি মাসে ৬ লাখ টাকা দেওয়া হতো। এক বছর পর হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় জিপিএইচ ইস্পাতের স্পন্সরশিপ। অর্থের অভাবে পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নেওয়া এই প্রকল্প চলতি বছর জানুয়ারি মাস থেকে বিটিআরসি নিজ উদ্যোগে স্মার্ট স্কুলবাসের ব্যয়ভার নির্বাহ করছে। তবে তাদের পক্ষে ব্যয়ভার বহন করা আর সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

প্রথম থেকে বাসগুলোয় টিকিট ব্যবস্থা না রেখে ভাড়ার বাক্স রাখা হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় পাঁচ টাকা করে দেবে এমন পরিকল্পনা নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু বাস্তবে খুব কম শিক্ষার্থীই সেই টাকা দিয়েছিল।

নগরীর বাওয়া স্কুলের শিক্ষার্থী ফাতেমা জানায়, স্মার্ট স্কুলবাস চালু হওয়ার পর থেকে বাসে তুলে দিয়ে বাবা-মায়েরা নিশ্চিন্ত হতেন। এই বাস বন্ধ হয়ে গেলে আম্মুকে আবার আমার সঙ্গে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হবে।

চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র রইস উদ্দিন বলে, বাস বন্ধ হয়ে গেলে বাবা কিংবা মাকে স্কুলে আসতে হবে। এ সেবা বন্ধ না করার জন্য আমরা অনুরোধ করছি।

অভিভাবক নাজিম উদ্দিন বলেন, আইপি ক্যামেরা এবং জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে বাস সেবাটি চালুর পর সন্তানকে একা বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে চিন্তামুক্ত ছিলাম। শুনছি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। যদি এমনটা হয়, তাহলে আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাবে।

বিআরটিসির ম্যানেজার (অপারেশন) জুলফিকার আলী জানান, ‘জেলা প্রশাসনের অনুরোধে গত ৮ মাস ধরে বাসগুলো নিজস্ব খরচে চালাচ্ছি। জিপিএইচ ইস্পাত স্পন্সর ক্যানসেলের চিঠি দেওয়ার পর গত আট মাসে দুইটি স্কুল থেকে আমরা ৯০ হাজার টাকা পেয়েছি মাত্র। যদি নতুন স্পন্সর পাওয়া না যায়, তাহলে আমরা এই প্রকল্পটি আর চালিয়ে যেতে পারব না।’

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘স্মার্ট স্কুলবাস প্রকল্পে জিপিএইচ ইস্পাত অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ায় আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে অর্থ সংগ্রহের বিষয়টি সঠিকভাবে পরিচালনার চেষ্টা করছি এবং পাশাপাশি নতুন কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গেও স্পন্সরশিপের জন্য আলোচনা চলছে। যদি স্পন্সর পাওয়া যায়, তবে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। আমরা আশা করছি, প্রকল্পটি বন্ধ হবে না।’

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!