ঢাকা শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

ধানমন্ডি ৩২-এ শ্রদ্ধা জানাতে আসা লোকজন হেনস্তার শিকার ছিল কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৫:০৭ এএম

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ৫০তম বার্ষিকী ঘিরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির সামনে ঘটে নানা ঘটনা। ৩২ নম্বর সড়কে ছিল কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী। সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষকে দিনভর হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে বলেও জানা গেছে। আওয়ামী লীগ সন্দেহে কয়েকজনকে তল্লাশিও করা হয় বলে জানা যায়, যা ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল গতকাল শুক্রবার। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি সপরিবারে হত্যার শিকার হন। তিনি ছাড়াও নিহত হন তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, তার জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মনি, শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ শিশুপুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত আবদুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টু এবং শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন রক্ষায় এগিয়ে আসা প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হতো।

তবে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করে।

এদিকে, শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে আসা বেশ কয়েকজনকে হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুই-একজনকে চড়-থাপ্পড়, মারধরও করা হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাউকে আটক করেনি। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের দুপাশেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে। শুধু গণমাধ্যমকর্মীদের ভেতরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। দুপাশেই ছাত্রদলসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদেরও দেখা যায়। এ ছাড়া শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙা বাড়ির সামনে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে পাহারা দিতেও দেখা যায়।

গতকাল সকালে এক দম্পতিসহ চারজন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। সড়কের পশ্চিম পাশে তিন সন্তানসহ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন এক দম্পতি। তখন তারা স্থানীয় বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়েন। বাগ্্বিত-ার একপর্যায়ে পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। গতকাল সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের পূর্ব পাশে পৃথক দুই ব্যক্তি শ্রদ্ধা জানাতে এসে হেনস্তার শিকার হন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তাদের কলার চেপে ধরাসহ চড়-থাপ্পড়ও মারেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। পরে তাদের পুলিশ ছাড়িয়ে নিয়ে রিকশায় করে পাঠিয়ে দেয়। সকাল ১০টার দিকে এক নারী শেরেবাংলা নগর থেকে ফুল দিতে আসেন। এ সময় তাকেও হেনস্তা করা হয়।

এসব বিষয়ে গুলশান ছাত্রদলের কর্মী তানজীব বলেন, ধানমন্ডিতে মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে এবং আওয়ামী লীগের লোকজন যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য পুলিশের পাশাপাশি আমরা এখানে আছি। দুই-একজন আওয়ামী লীগের লোক এসেছিল, আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গতকাল সকাল থেকে কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা।