ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে উৎসবমুখর প্রচারের মধ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছুঁড়েছেন প্যানেলের প্রার্থীরা। ছাত্রশিবির প্যানেলের প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। তার অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের উপঢৌকন দিয়ে ভোট চাচ্ছেন শিবির প্যানেলের প্রার্থীরা। একইসাথে, ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম দাবি করছেন, নির্বাচনে ‘একটি অংশ’ ঈর্ষান্বিত হয়ে ছাত্রশিবিরের চরিত্র হননের চেষ্টা করছে। এদিকে, নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন পাওয়া এস এম ফরহাদের প্রার্থিতাকে চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটটি দাখিল করেছেন বামজোট সমর্থিত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদ আলম।
গতকাল রোববার ডাকসু নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আবিদুল ইসলাম বলেন, একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বারবার আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। ফোকাস কোচিং সেন্টারে নবীন বরণের নামে শিক্ষার্থীদের উপঢৌকন দেন এবং ভোট চান শিবির প্যানেলের প্রার্থীরা। এটা সরাসরি আচরণবিধি লঙ্ঘন। আমরা লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। এটা যদি আচরণবিধি লঙ্ঘন না হয় তাহলে আমরাও না হয় ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষার্থীদের উপঢৌকন দিলাম।
তিনি বলেন, কিছুক্ষণ আগে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ক্লাসরুমে ঢুকে চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছে মাইকে ভোট চেয়েছেন শিবিরের প্রার্থী। এটাও সুস্পষ্ট আচরণবিধি লঙ্ঘন। তারা একটার পর একটা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই যাচ্ছে, তবুও প্রশাসন কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি।
এদিকে, আবু সাদিক কায়েম দাবি করেন, কাজ দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাদের মোকাবিলা না করতে পেরে এখন চরিত্রহননের চেষ্টা করছে। আমাদের আইডিতে গিয়ে দেখবেন, গালাগালির কোনো লিমিট নাই। কারা কমেন্ট করছে, খোঁজ নিলে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে পাবেন। তিনি বলেন, আমাদের জোটের নারী প্রার্থীদের সাইবার বুলিং করা হচ্ছে; আক্রমণ করা হচ্ছে। আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি। তিন দিন হয়ে গেল, এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে বাংলাদেশের মানুষ তাকিয়ে আছে, কিন্তু আমরা তা নিয়ে শঙ্কিত।
নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখানে বিভিন্ন রঙের শিক্ষক আছে। সেই রং দ্বারা যদি তারা প্রভাবিত হয় এবং তাদের ছাত্রসংগঠনকে সুবিধা দেয়, তাহলে তারা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন। আমরা বারবার একাত্তর এবং চব্বিশকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রতিবাদ করেছি। তাদের শিক্ষার্থী বিচ্ছিন্নতার কারণে এবং নিজেদের শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরার মতো কোনো ইতিবাচক কাজ না পেয়ে সকাল-বিকেল-সন্ধ্যা ছাত্রশিবিরের সমালোচনা করছে।
এদিকে, ডাকসু নির্বাচনে এস এম ফরহাদের প্রার্থিতাকে চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটটি দাখিল করেন বিএম ফাহমিদ আলম। রিটের মাধ্যমে ফরহাদের প্রার্থিতা বৈধ কি না তা স্থির করার জন্য বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত কামনা করা হয়েছে। এ রিটের শুনানির কথা ছিল গতকাল। প্রসঙ্গত, এবারের ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির থেকে ভিপি পদে সাদিক কায়েম এবং জিএস পদে এস এম ফরহাদ লড়ছেন। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন