সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সালমান ফরিদ, সিলেট

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫, ০৬:০০ এএম

সিলেট বিএনপি

অন্তর্কলহ ভুলে দলের জন্য লড়াইয়ে প্রস্তুত নেতাকর্মীরা

সালমান ফরিদ, সিলেট

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫, ০৬:০০ এএম

বিএনপি

বিএনপি

কাটছে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব, ভাঙছে নিজেদের মধ্যকার মনোমালিন্যের দেয়াল। ধীরে ধীরে গলছে মনের গহীনে থাকা কঠিন পাথরও। মনোবেদনা ভুলে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে থাকা শীর্ষ নেতারা এক টেবিলে বসছেন। লড়ছেন দলের জন্য। মিটিয়ে নিচ্ছেন মান-অভিমান। দোয়া নিচ্ছেন সিনিয়র নেতাদের। এ রকম ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এটি দেখে নেতাকর্মীদের মধ্যে বাড়ছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। ফলে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে সিলেট বিএনপিতে। আবার তারা ভেতরকার অন্তর্দ্বন্দ্ব, অন্তর্কলহ ভুলে দলের জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে উন্মুখ। 

এ দৃশ্য দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করছেন কেউ কেউ, ‘দলে এমন সৌহার্দ্য থাকলে দল সুগঠিত হওয়া সহজ। আর দেশের সবচেয়ে বৃহত্তর দল হিসেবে বিএনপির জন্য এটি অপরিহার্য।’

বিএনপি নেতা ও এসিড নির্মূল কমিটি-সনাকের সিলেট জেলা সভাপতি জুরেজ আব্দুল্লাহ গুলজার বলেন, দল হিসেবে বিএনপি একটি মহাসমুদ্র। দলে সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু দলের স্বার্থে কারো মধ্যে বিরোধ নেই। দ্বিমতও নেই। বর্তমানে আমরা সিলেট বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ দেখতে পাচ্ছি। এটি দলের জন্য অপরিহার্য এবং ইতিবাচক। 

সম্প্রতি নানা কারণে ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করছিলেন মহানগর বিএনপির শীর্ষ কয়েক নেতা থেকে শুরু করে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলয়। এ নিয়ে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব দেখা যায় মহানগর বিএনপির সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীর মাঝে। একটি ফোন কলকে কেন্দ্র করে তারা প্রকাশ্যে বাগবিত-ায় লিপ্ত হন। এ ঘটনার পর মহানগর বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে।

বিষয়টি গড়ায় কেন্দ্রে। এমনকি দলের নীতিনির্ধারক তারেক রহমানের কানেও পৌঁছায় এ খবর। কেন্দ্র থেকে তাদের সতর্ক করে বলা হয়, দলের স্বার্থে মনোমালিন্য কাটিয়ে উঠতে। সিলেট সফর করেন দলের অন্যতম নীতিনির্ধারক প্রফেসর ডা. জেডএম জাহিদ হোসেন। দু’জনে দলের হাইকমান্ডের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আবার একই সাথে দলীয় কাজে মনোনিবেশ করেন। 

এদিকে কিছুদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে প্রকাশ্যে কথা কাটাকাটিতে জড়ান মহানগর বিএনপির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। সেখানে কয়েক মিনিট বাগবিত-া চলে উভয়ের মধ্যে। বিষয়টি বেশ আলোচনার খোরাক জোগায় সিলেটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা হয়। কয়েস লোদীর স্পষ্টবাদিতা অনেকে পছন্দ করলেও একজন সিনিয়র এবং কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে প্রকাশ্য বাগবিত-ায় ব্যথিত হন অনেকে। বিষয়টি বুঝতে পারেন লোদীও। সিলেটের সিনিয়র নেতারাও তাকে এ নিয়ে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। পরে তিনি সম্পর্কোন্নয়নে মনোযোগী হন। 

রেজাউল হাসান কয়েস লোদী সিলেট সিটি করপোরেশনে তিন বারের কাউন্সিলর। তিনি আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র থাকাকালে দুইবার প্যানেল মেয়র-১ এর দায়িত্বও পালন করেন। সিলেট সিটির জনপ্রিয় নেতা হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়। অনেকে আরিফুল হক চৌধুরীর অবর্তমানে সিটি করপোরেশনে বিএনপির ‘মেয়র’ হিসেবেও তাকে কল্পনা করেন। 

গত শনিবার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক মতবিনিময় সভায় মুখোমুখি হন দুজন। মঞ্চে যখন অতিথির চেয়ারে বসা আরিফুল হক চৌধুরী তখন সেই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে কয়েস লোদী সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার প্রতি তার আনুগত্য প্রদর্শন করেন। তাকে সামনে রেখে বক্তৃতায় বলেন, ‘এই নগরী আরিফুল হক চৌধুরীর। আমি তার সাথে ১৫ বছর সিলেট সিটি করপোরেশনে দায়িত্ব পালন করেছি। তিনি আমার অভিভাবক, রাজনৈতিক নেতা। তার নেতৃত্বে সিটিতে কাজ করেছি, রাজনীতিও করেছি। ব্যক্তিগতভাবে তাকে আমি শ্রদ্ধা করি, তিনিও আমাকে স্নেহ করেন। এর বাইরেও আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা আরও মধুর। তিনি আমার জন্য দোয়া করেন। ভবিষ্যতেও তার পরামর্শ নিয়েই কাজ করব এবং এটিই সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।’ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীও।

সিলেটে বিএনপির সৌহার্দ্যতা সম্পর্কে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেট বিএনপি সব সময়ই ঐক্যবদ্ধ। কখনো কখনো হয়তো দ্বিমত দেখা যায়, কিন্তু কখনোই সেটি ‘দ্বন্দ্ব’ নয়। সিনিয়র নেতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকলে দলে শৃঙ্খলা কখনোই ভঙ্গ হয় না, হবেও না।

মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, দলকে এগিয়ে নিতে সবাই আমরা এক ও অভিন্ন। দলের কা-ারি তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা কাজ করছি। আগামী সংসদ নির্বাচন এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক ব্যস্ততা বাড়ছে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দলকে শক্তিশালী ও সুগঠিত করতে রাজপথে রয়েছি।

একটি সূত্র জানায়, আরিফুল হক চৌধুরী আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রথমে সিলেট-৪ এবং পরে মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ এ প্রার্থিতার আগ্রহ দেখান। বর্তমান সিলেট-১ এর জন্য গণসংযোগ করছেন। তবে তার প্রার্থিতা সিলেট-১ আসনে মোটামুটি অনিশ্চিত। এ আসনে এখনো পর্যন্ত খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরকে বিবেচনা করা হচ্ছে। আরিফুল হক চৌধুরীকে তার পুরোনো সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে দেখা যেতে পারে। এ পদে প্রার্থিতায় আরিফুল হক চৌধুরী না থাকলে মহানগর বিএনপির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল হাসান কয়েস লোদী এবং সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী টিকিট চাইবেন। আরিফের বিকল্পের তালিকায় এ দুজনেই রয়েছেন কেন্দ্রের গুডবুকে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!