সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা আহসান হাবিব ও তার স্ত্রী আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ থেকে গত মঙ্গলবার পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন সহকারী পরিচালক মো. সায়েদ আলম। মামলায় দম্পতির বিরুদ্ধে মোট ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬৬১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ১ কোটি ৭২ লাখ ৮৪ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
একটি মামলায় আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে ৫৯ লাখ ১০ হাজার ৪১১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ১ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের মিথ্যা তথ্য প্রদানের অভিযোগ আনা হয়। অন্য মামলায় তার স্ত্রী আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে ৬৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৩২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে।
দুদকের নথি অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর আহসান হাবিবকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই বছরের ১০ ডিসেম্বর তিনি বিবরণী জমা দেন। সেখানে তিনি মাত্র ৯ লাখ ২৯ হাজার ৬১২ টাকার স্থাবর ও ৫০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখান। তবে দুদকের যাচাইয়ে দেখা যায়, তার নামে ও দখলে মোট ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৯ হাজার ৩৯৬ টাকার সম্পদ রয়েছে।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, সম্পদ বিবরণী জমার পর আহসান হাবিবের নামে ১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র, সোনালী ব্যাংকে ৩৩ লাখ টাকার এফডিআর, ৫ লাখ ৭২ হাজার টাকার মেডিকেয়ার ডিপোজিট স্কিম এবং মেয়ের নামে ৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র পাওয়া যায়। বৈধ আয়ের উৎস হিসেবে তিনি দেখাতে পেরেছেন মাত্র ৯০ লাখ ৭৮ হাজার ৯৮৫ টাকা, ফলে বাকি ৫৯ লাখ টাকার উৎস অজানা রয়ে গেছে।
অন্যদিকে, আসমা সুলতানা নিজের নামে ২০ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদের ঘোষণা দিলেও অস্থাবর কোনো সম্পদ দেখাননি। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে তার নামে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার অস্থাবর এবং ৬৬ লাখ ২৪ হাজার টাকার মোট সম্পদ পাওয়া যায়, যার কোনো বৈধ উৎসের প্রমাণ মেলেনি।
দুদকের মতে, স্বামী আহসান হাবিবের অবৈধ আয়ের মাধ্যমেই স্ত্রী আসমা সুলতানার নামে এসব সম্পদ অর্জন করা হয়েছে। আহসান হাবিব ১৯৮০ সালে কাস্টমস বিভাগে ইন্সপেক্টর হিসেবে যোগ দেন, ২০১২ সালে সহকারী কমিশনার পদে পদোন্নতি পান এবং ২০১৪ সালের ৬ জুলাই অবসর নেন।
মামলার বিষয়ে দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমদ বলেন, ‘কমিশনের নির্দেশে মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে অন্য কারও সম্পৃক্ততা পেলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

