টালিউড অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। ওপারে তিনি পরিচিত ঠোঁটকাটা হিসেবে। বরাবরই স্পষ্ট কথায় জুড়ি মেলা ভার এই অভিনেত্রীর। বিতর্ক তার পিছু ছাড়ে না। কিন্তু বিতর্কে কখনোই কান দেননি তিনি। এগিয়ে চলেছেন নিজের ছকে। যার কারণে অনেকের পছন্দের পাত্রী তিনি। সর্বশেষ চলতি বছর শ্রীলেখাকে ‘মায়ানগর’ সিনেমাতে দেখা গেছে। তার অভিনীত এই সিনেমাটি দর্শকদের কাছে তুমুল প্রশংসা পেয়েছিল।
দীর্ঘ সময় পর ফের গত বছরের শেষের দিকে ঢাকার সিনেমায় অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন শ্রীলেখা। রাশিদ পলাশ পরিচালিত নির্মিতব্য ‘তরী’ নামের সিনেমাটি চলতি বছরের শুরুর দিকে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আজও শুটিং ফ্লোরে গড়ায়নি। সিনেমাটির জন্য অপেক্ষায় আছেন ওপার বাংলার এই অভিনেত্রীও। ভিসা জটিলতার কারণে ঢাকায় আসতে পারছেন না তিনি।
কলকাতা থেকে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে শ্রীলেখা বলেন, ‘তরী সিনেমাটির শুটিংয়ে অংশ নিতে গত ফেব্রুয়ারিতে আমার ঢাকা আসার কথা ছিল। কিন্তু ভিসা জটিলতার কারণে আসতে পারিনি। ফের ভিসা চালু হলে কাজটির জন্য ঢাকা আসব।’
এর আগে ঢাকার ‘সিংহ পুরুষ’ ও ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ নামের দুটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন শ্রীলেখা। সর্বশেষ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। নিজের প্রযোজিত ও পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘এবং ছাদ’ অংশ নেয় ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২১তম আসরে। এর জন্যই ঢাকায় এসেছিলেন তিনি।
‘এবং ছাদ’ শ্রীলেখার দ্বিতীয় নির্মাণ। এর আগে ‘বেটার হাফ’ নামের আরেকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। তবে নির্মাতার চেয়ে অভিনয়শিল্পী হিসেবেই ভারত ও বাংলাদেশে বেশি পরিচিতি রয়েছে তার।
ঢাকার ওটিটিতে নির্মাণের আগ্রহের কথা জানিয়ে এই অভিনেত্রী-নির্মাতা বলেন, ‘ঢাকার বেশকিছু ওটিটির কাজ দেখেছি। কাজগুলো বেশ ভালো করেছে। ঢাকার ওটিটির জন্য নির্মাণের আগ্রহ রয়েছে। কখনো সুযোগ পেলে কাজ করতে চাই।’
বর্তমানে শ্রীলেখার মুক্তির অপেক্ষায় আছে সুধীর মিশ্রের হিন্দি ওয়েব সিরিজ ‘সামার অফ ’৭৭-চিলড্রেন অফ ফ্রিডম’। সিরিজটিতে তার চরিত্র নিয়ে এখনই কোনো বাড়তি তথ্য দিতে নারাজ এই সাহসী অভিনেত্রী। সম্প্রতি কানপুর ও লখনউয়ে সিরিজটির শুটিং শেষ হয়েছে। আসছে নভেম্বরে এর মুক্তির কথা রয়েছে। এর আগে বিজয় নাম্বিয়ার পরিচালিত ‘কালা’ ওয়েব সিরিজে শ্রীলেখাকে দেখেছেন দর্শক। এ ছাড়াও কলকাতার একটি সিনেমায় অতিথি চরিত্রে এবং আইটেম সং-এ পারফর্ম করেছেন শ্রীলেখা। কাজ দুটিও মুক্তির অপেক্ষায়।
গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিবাদ ও আন্দোলনের সঙ্গে সরব ছিলেন শ্রীলেখা; তার মধ্যে রয়েছে শাসক দলের নেতাদের দুর্নীতি, শিক্ষকদের চাকরি বাতিল বা আরজিকরের নির্যাতনের মতো বিষয়। তাই সমাজের বিশেষ কিছু অংশের মানুষ তাকে ভালোভাবে নেয়নি। যে কারণে শ্রীলেখার বাড়ির আশপাশে কয়েক দিন আগে কিছু পোস্টার দেখা যায়। যেখানে তাকে সামাজিকভাবে বয়কট করার ডাক দেওয়া হয়েছিল।
সে প্রসঙ্গ টেনে শ্রীলেখা বলেন, ‘আগে শিল্পীদের রাজনীতিতে সক্রিয় যোগাযোগ ছিল না। এখন রাজনীতি সব জায়গায় ঢুকে গেছে। কারো সঙ্গে সহমত না করলে এবং মতের বিরুদ্ধে গেলেই ঝামেলা পোহাতে হয়। গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্র নেই। আরজিকর কা-ের এক বছর পর আবার কথা বলাতে আমাকে সামাজিকভাবে হুমকির মুখে পড়তে হয়। বয়কটের ডাক দেওয়া হয়। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেও দোষ। ইন্ডাস্ট্রিতে রাজনীতি ঢুকে গেছে। আর ইন্ডাস্ট্রিগত রাজনীতি তো আছেই। এখানে তেল মারতে পারলে কাজ হয়। এ দুটির সঙ্গে কখনোই আমি ছিলাম না এবং আগামী দিনেও থাকতেও চাই না। মাথা উঁচু করে বাঁচাটা খুবই জরুরি, সেটাই করছি।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন