ঢাকা শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫

আইশা খুঁজছেন নতুন চ্যালেঞ্জ

রকিবুল ইসলাম আফ্রিদি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫, ১২:৪১ এএম

এ সময়ের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী আইশা খান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভিনয়গুণে দর্শকদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছেন তিনি। মিষ্টি হাসি, পরিপক্ব সংলাপ নৈপুণ্য আর চরিত্রে প্রাণ সঞ্চারের দক্ষতার কারণে তিনি আজ নাটকপ্রেমীদের কাছে এক পরিচিত নাম। টেলিভিশন নাটক থেকে ওটিটি, সব মাধ্যমেই তার উপস্থিতি এখন সমান স্বতঃস্ফূর্ত। অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন শো, অনুষ্ঠান ও সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এই অভিনেত্রী।

বর্তমানে বেসরকারি একটি টেলিভিশনের রিয়েলিটি শো ‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা’ নিয়ে ব্যস্ত আছেন আইশা। এই শোয়ের মাধ্যমে তিনি শুধু দর্শকদের কাছাকাছি আসছেন না, বরং উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে নিজের বহুমুখী প্রতিভারও প্রমাণ দিচ্ছেন।

অভিনয় জগতে যেমন তিনি দক্ষ, তেমনি নতুন অভিজ্ঞতা নিতে আগ্রহী আইশা। অপেক্ষায় আছেন তার নতুন সিনেমা ‘শেকড়’-এর মুক্তির। সিনেমাটি আগামী ১৮ অক্টোবর কানাডার টরন্টো ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হবে।

আইশা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘শেকড়’ চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে মূলত ফেস্টিভ্যালকে কেন্দ্র করে। প্রথম থেকেই নির্মাতার ইচ্ছা ছিল আন্তর্জাতিক পরিম-লে সিনেমাটি উপস্থাপন করার। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী এটি টরন্টো ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হচ্ছে। নির্মাতার ইচ্ছা দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আগামী ঈদে বাংলাদেশে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া হবে।

সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন ‘ফাল্গুনী’ চরিত্রে। এ নিয়ে আইশা বলেন, ফাল্গুনীর পরিবারে সবাই সংগীত চর্চা করে। এই পরিবেশেই তার বেড়ে ওঠা। সিনেমায় আকাশ চরিত্রে অভিনয় করেছেন এফ এস নাঈম ভাইয়া, তিনি ফাল্গুনীর প্রতিবেশী। তাদের সম্পর্কের মধ্যে আছে বন্ধুত্ব, ভালোবাসা আর পারিপার্শ্বিক সম্পর্কের এক সূক্ষ্ম বন্ধন। তবে সেই সম্পর্কের শেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটা জানতে হলে দর্শককে সিনেমা দেখতে হবে।’

‘শেকড়’-এর গল্পই মূলত তাকে সিনেমাটির প্রতি আকৃষ্ট করেছে। শুধু গল্প নয়, সিনেমাটিতে তার চরিত্র, আবেগ ও বাস্তবতা তাকে গভীরভাবে ছুয়েছে।

আইশার ভাষ্যে, ‘আমার মনে হয়েছে, প্রায় প্রতিটি পরিবারেরই একজন সদস্য বিদেশে থাকে। দেশের ৬০-৭০ ভাগ পরিবারেরই এই অভিজ্ঞতা আছে। ‘শেকড়’ এমন এক মানুষকে ঘিরে, যিনি পরিবার, মা; দেশ, সংস্কৃতি, সবকিছু ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমান। পরে ফিরে এসে দেখেন সবকিছু বদলে গেছে। সম্পর্ক, স্থান; আবেগ, কিছুই আগের মতো নেই। এই পরিবর্তনের ভেতরে যে টানাপোড়েন, সেটাই আমাকে গল্পের অংশ হতে প্রেরণা দিয়েছে।’

সানাউল মোস্তফার উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘শেকড়’ সিনেমার প্রথমবার যখন গল্প শোনেন, সেই মুহূর্তেই যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আইশা। গল্পটা শুনেই মনে হয়েছিল, আমি এর অংশ হতে চাই। দেশের সিনেমায় প্রবাসী বাঙালির জীবন খুব কমই উঠে আসে। তাই মনে হয়েছে, এই ধরনের গল্পে কাজ করা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া প্রথম সিনেমার পর থেকেই ইচ্ছা ফেস্টিভ্যালের জন্য নির্মিত সিনেমায় কাজ করব। এ কারণেই সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছি, এমনটাই বললেন  আইশা।

দর্শকরা এই সিনেমা থেকে নতুন কী দেখতে পাবেনÑ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দর্শকরা নিজেদের পরিবারের মানুষদের সঙ্গে সহজেই কানেক্ট করতে পারবেন। প্রবাসী বাঙালিরা আকাশ চরিত্রের মধ্যে নিজেদের গল্প খুঁজে পাবেন, আর দেশে থাকা দর্শকরা আমার চরিত্র ফাল্গুনী বা দিলারা আন্টির মধ্যে নিজেদের সম্পর্ক দেখতে পাবেন। আশপাশের অনেক চরিত্রের সঙ্গেও দর্শকরা নিজেদের মিল খুঁজে পাবেন।

অভিনেত্রীর কথায় স্পষ্ট, ‘শেকড়’ শুধু একটি সিনেমা নয়, বরং এটি এমন এক আবেগময় যাত্রা, যেখানে গল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকবে দর্শকের নিজস্ব অনুভূতিও।

ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও কাজ করছেন আইশা। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ওয়েব সিরিজে তাকে দেখা গেছে নতুন রূপে। টেলিভিশন এবং ওটিটিÑ এই দুই অভিজ্ঞতার মধ্যে পার্থক্য কোথায়, জানতে চাইলে আইশা বলেন, ‘আসলে খুব বেশি পার্থক্য নেই। তবে অ্যারেঞ্জমেন্টে অনেক পার্থক্য থাকে। ওটিটির কাজগুলোতে আগে থেকেই স্ক্রিপ্ট হাতে পাওয়া যায়, কয়েকবার পড়া যায়, এমনকি টিম নিয়ে আলোচনা করারও সুযোগ থাকে। চরিত্র নিয়ে ভাবা, নির্মাতা কীভাবে কাজটি নির্মাণ করবেন; চিত্রগ্রাহক কীভাবে দৃশ্য ধারণ করবেন, সবকিছু নিয়েই খোলামেলা আলোচনা করা যায়। নাটকের ক্ষেত্রে এই সুযোগটা থাকে না। সেখানে প্রি-প্রোডাকশন করার সময় খুব কম, ফলে তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে হয়। কিন্তু ওটিটি বা সিনেমায় যথেষ্ট প্রস্তুতির সময় থাকে বলে কাজগুলো অনেক গুছিয়ে করা যায়, আর সেটে চাপও কম পড়ে।

দর্শকের রুচি ও অভ্যাসেও যে বদল এসেছে, তা অস্বীকার করেন না আইশা। সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই বলছেন, দর্শকরা এখন টেলিভিশনের চেয়ে ওটিটিতেই বেশি ঝুঁকছেন। এ প্রসঙ্গে আইশার মত, আমাদের দেশের ক্ষেত্রে আমার কাছে মনে হয় না দর্শক ওটিটিতে ঝুঁকছে। একটা-দুটো উদাহরণ দিয়ে সেটা বলা যায় না। ওটিটি আসলে আরও এক্সপ্লোর করার সুযোগ দেয়, কিন্তু আমরা হয়তো এখনো সেই সুযোগটা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছি না। এখন তো নেটফ্লিক্স, আমাজন প্রাইমের মতো প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, তাই আমাদের দেশীয় কনটেন্ট দেখতে হলে এমন কিছু বানাতে হবে, যা আমি নিজেও দেখতে চাই। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ছোট, বাজেট সীমিত; কিন্তু নির্মাতা, প্রযোজক, শিল্পীরা সত্যিই অসাধারণভাবে কাজ করছেন। মাঝে মাঝে মনে হয়, যদি আমরা ভারতের মতো বড় বাজেট পেতাম, তাহলে আরও দুর্দান্ত কিছু করতে পারতাম।

অভিনয় জগতে ব্যস্ত সময় কাটালেও নিজের মানসিক ভারসাম্য ও সময় ব্যবস্থাপনায় বেশ সচেতন আইশা। সে কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমার ব্যস্ততা কখনোই টানা নয়। এমন না যে আমি মাসের ৩০ দিনই কাজ করছি। মাঝখানে কিছুদিন বিরতি থাকে, যে দিনগুলোতে কাজ থাকে না, সেগুলোরও একটা নির্দিষ্ট সময়সূচি তৈরি করে রাখি। কত ঘণ্টা ঘুমাব, কখন কী করব, সব কিছুই পরিকল্পনায় থাকে।

ব্যস্ততাকে বরং নিজের আরাম হিসেবে দেখেন এই অভিনেত্রী। আইশার ভাষায়, আমার কাছে ব্যস্ত থাকাটাই আরামের। এটা শুধু মিডিয়ার কাজ নয়, ব্যক্তিগত ও অন্যান্য কাজ নিয়েও আমি ব্যস্ত থাকি। কখন দিন শেষ হয়ে যায় টেরই পাই না।

অভিনয়ের মানসিক প্রস্তুতি নিয়েও তিনি খুবই মনোযোগী। আইশা বলেন, ‘যখন কোনো নির্দিষ্ট চরিত্রে কাজ করি, তখন সব কিছু বন্ধ করে শুধু সেই চরিত্রের প্রস্তুতিতেই ডুবে থাকি। চরিত্র নিয়ে টিমের সঙ্গে বারবার বসি, নিজেকে চরিত্রটার মধ্যে রাখার চেষ্টা করি। এই প্রস্তুতি অন্য সময়ের চেয়ে একেবারেই আলাদা।

অবসর সময়েও তিনি নিজেকে সক্রিয় রাখেন। বললেন, অবসর দিনগুলোতে বই পড়তে খুব ভালো লাগে। পরিবারের সঙ্গে সিনেমা দেখি, কাছের মানুষদের খোঁজখবর নিই, দেখা করি। আবার দেশীয় সিনেমার প্রিমিয়ার হলে সেখানে অংশ নেই। এভাবেই নিজের সময়টাকে পরিপূর্ণ রাখি।

অভিনয়জগতে নিয়মিত একক নাটকে কাজ করলেও মাঝে মাঝে ধারাবাহিক নাটকেও তার দেখা মেলে। সম্প্রতি আইশার নতুন একটি ধারাবাহিক নাটক প্রচারে এসেছে। ধারাবাহিক নাটকে নিয়মিত দেখা যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি স্পষ্টভাবেই জানালেন, সম্প্রতি যে ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছিলাম, সেটির কাজ শেষ হয়েছে। এরপর আর কোনো ধারাবাহিকে যুক্ত হইনি, আপাতত যুক্ত হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই।

কেন এই অনীহা, জানতে চাইলে আইশা খুলে বললেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, অন্যদের কথা বলতে পারব না, কিন্তু আমি যদি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলি, খুব ছোটবেলায় শিশু শিল্পী হিসেবে একটা ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছিলাম। তখন ক্লাস শেষে সকাল বেলা শুটিং স্পটে গিয়ে সারাদিন বসে থাকতে হতো, রাতের দিকে এসে আমার দৃশ্য নেওয়া হতো। সেই সময় থেকেই আমার মনে হয়েছে, সময়ের এই অপচয়টা ভীষণ কষ্টদায়ক।

বড় হওয়ার পর অভিজ্ঞতাটা কিছুটা বদলেছে ঠিকই, কিন্তু সমস্যা রয়ে গেছে অন্য জায়গায়। তার ভাষ্যে, এখন আমাকে হয়তো প্রাধান্য দেওয়া হয়, কিন্তু বর্তমান সময়ে টেলিভিশনের ধারাবাহিক নাটকে প্রি-প্রোডাকশন বা সঠিক পরিকল্পনার কোনো জায়গা দেখি না। ভালো টিমও খুব কম। ৫০ পর্বের নাটক করতে গেলে আমাকে পুরো স্ক্রিপ্ট কেউ আগে দিতে পারে না। আমি কীভাবে বিশ্বাস করব, তারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গল্পের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে?।

তিনি আরও যোগ করেন, একজন নির্মাতা আমাকে বলেছিলেন, আমি যদি ১৪০০ পর্ব লিখি, আপনি পড়বেন না। আমি তখন তাকে সুন্দরভাবে বললাম, আপনি কি করে জানেন, আমি ১৪’শ- ১৫’শ পর্ব বা পাতা পড়তে আমি সক্ষম কিনা। আমার নির্মাতা আগে থেকেই ধরে নিয়েছে আমি পর্ব বা পাতা পড়তে অক্ষম। সেক্ষেত্রে আমি কি করে আমার নির্মাতা বা ওই টিমের প্রতি ভরসা রাখতে পারব, যে তারা শুটিং শুরুর আগে ১৪০০ পর্বের স্ক্রিপ্ট আমার হাতে পৌঁছাতে পারবেন।

আমি তখন বলেছিলাম, আপনি কীভাবে জানলেন আমি ১৪০০ পাতা পড়তে পারব না? মানে নির্মাতা আগেই ধরে নিলেন, আমি পড়ব না। তাহলে আমি কীভাবে বিশ্বাস করব যে তারা ১৪০০ পর্বের স্ক্রিপ্টই শেষ করতে পারব!

স্ক্রিপ্ট হাতে না পাওয়া, অস্পষ্ট পরিকল্পনা এবং অতিরিক্ত কাজের চাপ, এসবই তাকে ধারাবাহিক নাটক থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর আগে একটি টেলিভিশনের ধারাবাহিক নাটকের কাজ করেছিলাম। আমার কল থাকতো সকাল ৮টায়, বাড়ি ফিরতাম রাত ১টা-২টার দিকে। এটা আমার কেন্দ্রীয় চরিত্রের কাজ ছিল। কোনো নির্দিষ্ট সময়সূচি ছিল না। একটানা ২০-২৪ দিন শুটিং চলত। ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার; সব কিছুই বাদ পড়ে যেত। মানসিক চাপও তৈরি হতো। তখনই নিজেকে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, জীবনে আর ধারাবাহিক নাটকে কাজ করব না।

তবুও দীর্ঘ বিরতির পর সম্প্রতি আবার ফিরেছেন ধারাবাহিক নাটকে, কিন্তু নিজের শর্তে। আইশা বলেন, চার বছর পর সম্প্রতি একটা ধারাবাহিকে কাজ করেছি। প্রথমেই তিনটা শর্ত দিয়েছিলামÑ এক, সম্পূর্ণ স্ক্রিপ্ট আগে দিতে হবে; দুই, ২৬ পর্বের পর প্রযোজক যেন নতুন পর্ব বাড়ানোর দাবি না করেন। তিন, শুটিং ভেঙে ভেঙে করা যাবে না, একটানা শুট করেই শেষ করতে হবে। কারণ, ভেঙে ভেঙে শুট করলে চরিত্রের যাত্রাটা ভুলে যাই, কারণ আমি খুব দক্ষ শিল্পী হয়ে গেছি এটা আমি বলব না।

তবে ভবিষ্যতে আবারও ধারাবাহিক নাটকে তাকে দেখা যেতে পারে, যদি পান নিজের পছন্দের একটি নিবেদিত টিম হয়। যদি এরকম কোনো নিবেদিত ও দায়িত্বশীল টিম পাই, তাহলে অবশ্যই আবারও ধারাবাহিকে কাজ করব, আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে বললেন আইশা।

দীর্ঘ অভিনয়জীবনে টিকে থাকার মূলমন্ত্র কীÑএমন প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ভেবে উত্তর দিলেন আইশা খান। তিনি বলেন, সততা, নিয়মানুবর্তিতা এবং অভিনয় দক্ষতা, আমার মনে হয় এই তিনটি গুণ থাকলেই যথেষ্ট।
তার মতে, জনপ্রিয়তা ক্ষণস্থায়ী হলেও অভিনয় দক্ষতাই একজন শিল্পীর প্রকৃত সম্পদ। আইশা বলেন, জনপ্রিয়তা আজ আছে, কাল নাও থাকতে পারে। কিন্তু আমি যদি একজন ভালো অভিনেত্রী হই, তাহলে সেই অভিনয় দক্ষতার জোরে আমি ভালো কাজ পাব, ভালো নির্মাতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাব, ভালো গল্প আর চরিত্রের সঙ্গে যুক্ত হতে পারব।

দিন শেষে আইশা খানের বিশ্বাস, অভিনয় দক্ষতাই একজন অভিনেত্রীর দীর্ঘস্থায়ী যাত্রার সবচেয়ে বড় শক্তি।

দেশের আগে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীÑএ অভিজ্ঞতাকে জীবনের বিশেষ মুহূর্ত হিসেবেই দেখেন আইশা। বললেন, যখন দেশে সিনেমা মুক্তি পায়, তখন আনন্দটা আলাদা; নিজের দেশের মানুষদের সঙ্গে, পরিচিতদের সঙ্গে প্রথম দিনেই সিনেমা দেখা যায়। কিন্তু যখন আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পায়, তখন সেটা একেবারে ভিন্ন অনুভূতি তৈরি করে। সেখানে কেউ পরিচিত নয়, সম্পূর্ণ নতুন মানুষ। কিন্তু তারা আমার সিনেমা দেখছে, অন্য দেশের দর্শকেরাও আগ্রহ নিয়ে দেখছে, এটা সত্যিই আনন্দের। যদি সেখানেই উপস্থিত থেকে নিজের চোখে সেই প্রতিক্রিয়া দেখতে পেতাম, আমার মনে হয় আনন্দটা দ্বিগুণ হয়ে যেত।

দর্শকদের ভালোবাসা বা সমালোচনা, দুটোকেই সমান মর্যাদায় গ্রহণ করেন তিনি। বললেন, আমি সব ধরনের মন্তব্যকেই ইতিবাচকভাবে দেখি। কেউ যদি আমার অভিনয় নিয়ে কিছু বলে, আমি ধরে নিই সেটা আমার মঙ্গলের জন্যই বলেছেন। কারণ আমি বিশ্বাস করি, তারা আমার ভালোটা চেয়েই এমনটা বলেন।

ভবিষ্যতে নিজের অভিনয় জীবনকে আরও বৈচিত্র্যময় করতে চান আইশা খান। পরিচিত ধাঁচের চরিত্রে নয়, এখন তিনি খুঁজছেন নতুন চ্যালেঞ্জ। আইশা বলেন, যে ধরনের চরিত্রগুলো এখন পর্যন্ত করেছি, তার বাইরে কিছু করতে চাই। এমন চরিত্রে কাজ করতে চাই, যা আমাকে ভাবাবে, নাড়া দেবে, অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমাকে আরও গভীরে নিয়ে যাবে।

সামনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বললেন, আপাতত তার মনোযোগ অন্য একটি ব্যস্ততায়। বললেন, এই মুহূর্তে রিয়েলিটি শো’য়ের কাজ নিয়েই ব্যস্ত আছি। সামনে প্রায় দুই সপ্তাহের মতো একটা বিরতি পাব। এর মধ্যে যদি ভালো গল্পের কোনো একক নাটকের প্রস্তাব আসে, তাহলে কাজ করতে পারি। না হলে রিয়েলিটি শো’র ব্যস্ততাতেই পুরো বছরটা কেটে যাবে।