ঢাকা বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

হাসপাতালে লিফট স্থাপন কাজে চাঁদাবাজদের বাধা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ০১:৪৭ এএম

রাজবাড়ীতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের লিফট স্থাপন কাজ চাঁদাবাজদের হুমকিতে ব্যাহত হচ্ছে। একাধিকবার ঠিকাদারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় ও নতুন করে দাবি করায় কাজ এগিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে রাজবাড়ী অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় হাসপাতাল নির্মাণকাজের অগ্রগতি জানতে চান জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার।

সভায় উপস্থিত রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, লিফট স্থাপনের কাজে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজির কারণে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। একাধিক চাঁদাবাজ চক্র একে অপরের পর দাবি করছে চাঁদা। ফলে ঠিকাদারদের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, এর আগেও হাসপাতালের এসি ও আউটডোরে ব্যবহৃত মালামাল চুরি হয়েছে। কাজের সাইটে ঢুকে চাঁদাবাজরা শ্রমিক ও কর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। ইতোমধ্যে লিফটের কাজ প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
জানা গেছে, এ বছরের ২০ জানুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয় জেলা প্রশাসক, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ইনচার্জ ও রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে।

পরদিন ২১ জানুয়ারি গণপূর্ত বিভাগ সদর থানার ওসিকে নিরাপত্তার জন্য আরেকটি চিঠি দেয়, যার অনুলিপি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১৯ জানুয়ারি ৮ থেকে ১০ জন অস্ত্রধারী ব্যক্তি প্রকল্প এলাকায় ঢুকে চাঁদা দাবি করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজবাড়ী নাগরিক কমিটির সভাপতি জ্যোতি শঙ্কর ঝন্টু বলেন, ‘হাসপাতাল রাষ্ট্রের সবচেয়ে মানবিক স্থান। সেখানে চাঁদা দাবি শুধু বেআইনি নয়, মানবতাবিরোধী কাজ। দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।’

চাঁদাবাজির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম সভায় বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। পুলিশ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজি সহ্য করা হবে না।’

উল্লেখ্য, রোগীদের দুর্ভোগ কমাতে ২০১৮ সালে রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে ৩ কোটি ৯১ লাখ ৮১ হাজার টাকা ব্যয়ে লিফট স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। অথচ নিরাপত্তাহীনতা ও সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজির কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।