শেরপুরের নকলায় আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কেউ বীজতলা থেকে চারা তুলছেন, কেউবা জমিতে সেচ দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ জমিতে চাষ ও মই দিয়ে তৈরি করছেন। অনেক মাঠে কৃষক ও শ্রমিকরা চারা রোপণে ব্যস্ত।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৩ হাজার ১১১ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে হাইব্রিড জাতের ৭ হাজার ১৩৫ হেক্টর, উফশী জাত ৪ হাজার ৭৬৩ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২১৩ হেক্টর জমি।
চলতি মৌসুমে ধান থেকে সম্ভাব্য চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার ৭৪৮ টন। এতে হাইব্রিড জাতের চাল ৩০ হাজার ৬০৯ টন, উফশী জাতের চাল ১৭ হাজার ২৮৯ টন ও স্থানীয় জাতের চাল ২ হাজার ৮৪৮ টন। যদিও উৎপাদন কম বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তাগণ।
উপজেলার গণপদ্দী, উরফা, গৌড়দ্বার, বানেশ্বরদী, পাঠাকাটা, চরঅষ্টধর, চন্দ্রকোনা ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা জমিতে চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষকরা জানান, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না থাকায় রোপণ কাজ কিছুটা বিলম্ব হলেও এখন নিয়মিত বৃষ্টির কারণে কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যেই রোপণ সম্পন্ন হবে।
ভূরদী খন্দকার পাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. ছাইদুল হক, সদস্য মোখলেছুর রহমান, ভূরদী মরাকান্দা এলাকার কৃষক হেলাল ও ঈসমাইলসহ অনেক কৃষক জানান, এবার মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় দেরিতে ধানের চারা রোপণ কাজ শুরু হয়েছে। তবে এখন প্রায় প্রতিদিনই কম-বেশি বৃষ্টি হওয়ায় আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে চলতি মৌসুমের আমন ধানের চারা রোপণের কাজ শেষ হবে বলে তারা আশা করেন।
অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তাবাসসুম মকবুলা দিশা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জন বেশি হতে পারে। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাগর চন্দ্র দে জানান, উপজেলার আমন ধান রোপন উপযোগী সব জমিকে চাষের আওতায় আনতে ও আমন ধান উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও কৃষি প্রনোদনা দেওয়া হয়েছে। অন্য এক কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারিহা ইয়াসমিন জানান, কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মশালা করা হয়েছে। কর্মশালায় কৃষিপণ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদী জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৩ হাজার ১১১ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জমিতে উপাদিত ধান থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার ৭৪৮ টন। তিনি আরো জানান, আমন ধানের চারা রোপনে এলএলপি পদ্ধতির ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যা মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের নিরলস পরিশ্রম ও প্রচারের মাধ্যমে নকলার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এই পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন বলে তিনি আশা করছেন।