যশোরের মণিরামপুর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের গৃহবধূ শিউলি রানী দে, সাজেদা বেগম, কহিনুর বেগম, খলিলুর রহমান, শাহিনারা খাতুন পান্না, খালেক মোল্যা ও তহমিনা বেগম প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় ছিলেন। অথচ তাদের কেউই প্রতিবন্ধী নন। তাদের মতো এক ইউনিয়নেই এ রকম ২১৩ ভুয়া প্রতিবন্ধী প্রথমিকভাবে ধরা পড়েছে। তবে যাচাই-বাছাই শেষ না হওয়ায় ভুয়া প্রতিবন্ধীর সঠিক সংখ্যা জানানো যাচ্ছে না।
জানা জায়, সম্প্রতি স্থানীয় একটি গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। উপজেলা প্রশাসনসহ সমাজসেবা অফিস গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নেহালপুর ইউনিয়ন পরিষদে চলে প্রতিবন্ধী কার্ডের যাচাই-বাছাইয়ের তদন্ত। নেহালপুর ইউনিয়নে মোট এক হাজার ১০ জন প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর মধ্যে যাচাই-বাছাই বোর্ডে হাজির হন ৫৬৯ জন। তার মধ্যে চূড়ান্তভাবে টিকে যান ৩৫৬ জন। তাদের মধ্যে ২১৩ জনকে প্রাথমিকভাবে ‘ভুয়া প্রতিবন্ধী’ বলে কার্ড পেন্ডিং রাখা হয়েছে। আর ৪৪১ জন প্রতিবন্ধী কার্ডের ভাতাভোগী যাচাই-বাছাই বোর্ডে উপস্থিতই হয়নি। যা মোট ভাতাভোগীর অর্ধেক।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২০২৪ সালে নেহালপুর ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় ৮১ জনের। যার অর্ধেক মানুষই প্রতিবন্ধী ছিলেন না। তাদের অভিযোগ, প্রকৃত প্রতিবন্ধীদের বাদ দিয়ে বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় হেরা মেম্বর, সাবেক সমাজসেবাকর্মী কানুনগো বালা ও অফিসের মাঠকর্মী রেহেনা সম্পূর্ণ সুস্থ ও সক্ষম ব্যক্তিদের নামে ভাতার কার্ড করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, যেসব কার্ডধারী ভাতাভোগী যাচাই বোর্ডে হাজির হননি তারা ভুয়া প্রতিবন্ধী। জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে আমরা অনেক ভাতাভোগীর ত্রুটি পেয়েছি। তার মধ্যে ২১৩ জনের কার্ড পেন্ডিং রয়েছে। তারা উপযুক্ত তথ্য নিয়ে এলে পুনরায় যাচাইয়ের সুযোগ রয়েছে।
সমাজসেবাকর্মীদের জড়িত থাকা সম্পর্কে তিনি বলেন, সমাজসেবা অফিসের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী অনিয়মের সঙ্গে জড়িত আছেন কি না বিষয়টি তার জানা নেই। তবে এ ধরনের কোনো অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠানে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান শওকত সরদার, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, ফিল্ড সুপারভাইজার ফারুক হোসেন, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর জহিরুল ইসলামসহ কার্যালয়ে কর্মরত ইউনিয়ন সমাজকর্মীসহ ইউপি সদস্যরা।

 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন