শনিবার, ০৪ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৫, ০১:১৭ এএম

সরকারি বরাদ্দের অর্থ নয়ছয়

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৫, ০১:১৭ এএম

সরকারি বরাদ্দের অর্থ নয়ছয়

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ (পিআইও) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দরিদ্র মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টি ও গ্রামীণ জনপদের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। কিন্তু সুবর্ণচরে এসব প্রকল্প হয়ে উঠেছে লুটপাটের খনি। তারা বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কাজ না করে কোটি টাকার বরাদ্দ ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সুবর্ণচরে টিআর, কাবিখা ও কাবিটা কর্মসূচির আওতায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ও ১৮০ টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তবে কোথাও এসব প্রকল্পের নামমাত্র কাজ দেখিয়ে বিল উত্তোলন করা হয়েছে, আবার কোথাও বরাদ্দের পুরো টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের হাজি নজির আহম্মদ জামে মসজিদের দেয়াল প্লাস্টারের জন্য ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল। তবে সেই টাকা দেওয়া হয়নি। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুর মাওলা জানান, তারা কোনো সরকারি সহায়তা পাননি। এলাকাবাসীর অর্থে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

মৌলভি শরাফত উল্যাহ জামে মসজিদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মসজিদ কমিটির সভাপতি জানিয়েছেন, তারা মাত্র দেড় লাখ টাকা পেয়েছেন।

এদিকে চরক্লার্কের ইসলামপুর জামে মসজিদের প্লাস্টারের জন্য ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দের তথ্য মিলেছে। তবে সেখানে এখনো কাজ শুরু হয়নি। পাশের ইসলামপুর মার্কেটের দক্ষিণ পাশের রাস্তার জন্য ২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা বরাদ্দ। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেখানে কোনো সংস্কার করা হয়নি।চর আমানউল্যাহ ইউনিয়নের কুকিজ মার্কেট তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ ছিল ২ লাখ টাকা। কিন্তু মাদ্রাসাপ্রধান জানেন না কোনো বরাদ্দের কথা। চরজব্বারে চরহাসান মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের জন্য ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তা জানেন না বলে জানা গেছে।

চরজুবলী ইউনিয়নের চরজুবলী অলিউল্যাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলী আক্কাস বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বলে মাঠ ভরাটের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ করানো হয়। কিছুদিন আগে ৪০-৫০ হাজার টাকার মাটি ভরাট করা হয়। অবশিষ্ট টাকা বাগিয়ে নেওয়া হয়েছে। সুবর্ণচর সদর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেঞ্চ মেরামতের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কিছুই পাননি বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন।

এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলার কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিটি প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে কমপক্ষে ২৫-৫০ শতাংশ কেটে নেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)। কিছু প্রকল্পের পুরো অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে বলে দাবি তাদের।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নির্দেশনা থাকলেও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে কোনো প্রকল্প তালিকার তথ্য দেওয়া নেই। কোথাও লাগানো হয়নি সাইনবোর্ড। প্রকল্প তালিকা চাইলে পিআইও দফায় দফায় এড়িয়ে যান।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর লুটপাট বন্ধ হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু বাস্তবে আগের মতো চলছে দুর্নীতি। হতদরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, সব কাজ ৩০ জুনের আগে শেষ হয়েছে। কাজ বুঝে নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতিকে অর্থ দেওয়া হয়েছে। তবে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এই কর্মকর্তা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া আসফার সায়মা বলেন, ‘এসব প্রকল্প সিপিসি-কমিউনিটি প্রজেক্ট কমিটি বাস্তবায়ন করে থাকে। কাজ হয়নি এমন অভিযোগ পাইনি।’ তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রমাণ মিললে অর্থ পুনরুদ্ধারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!