ঢাকা সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫

নদীগর্ভে অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি

দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০১:৫০ এএম

*** পায়রা নদীর ভাঙন
*** ভাঙন আতঙ্কে আরও অর্ধশতাধিক পরিবার
*** ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে আরও অর্ধশতাধিক পরিবার নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত হয়েছে। ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় পায়রা তীরবর্তী বাহেরচরের মানুষ চরম আতঙ্কে দিনযাপন করছেন।

গত মঙ্গলবার রাতে কোব্বাত হাওলাদারের ছেলে জাকির হাওলাদার (৫০), দলিল উদ্দিন ফকিরের ছেলে কুদ্দুস (৫৫), খালেক হাওলাদারের স্ত্রী আলেয়া বেগম (৭০) এবং মৃত নজরুলের স্ত্রী লাভলী বেগমের বসতবাড়ি নদীর আকস্মিক ভাঙনে তলিয়ে যায়। ভাঙনের মুখে রয়েছে জাহিদুলের স্ত্রী বিউটি বেগম, মন্নান হাওলাদারের ছেলে জাকিরসহ অন্তত ১৫-২০টি পরিবার।

সরেজমিন ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পায়রা নদীর স্রোতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে বহু ঘরবাড়ি ও গাছপালা নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের কবলে থাকা পরিবারগুলো এখন পাউবোর ওয়াপদা ভেরিবাঁধের সরকারি রাস্তার পাশে ঝুপড়ি তুলে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। বাহেরচরের মিলন মীরা ও মামুন মীরার বসতভিটা, কবরস্থান ও গাছের বাগান নদীতে তলিয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে থাকা পরিবারগুলো তাদের বসতঘর ও মালামাল রক্ষায় উদ্বিগ্ন। নারী, পুরুষ ও শিশু-কিশোররা মালামাল বহন করে সরকারি রাস্তার পাশে স্তূপ করে রাখছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত দুই বছরে প্রায় শতাধিক পরিবারের ভিটেমাটি, ফসলি জমি ও গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেছেন, দুশতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি, বাগান, মসজিদ, মন্দির ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হলেও এখনো কারো সহায়তা নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও তেমন কোনো খোঁজখবর নিচ্ছেন না।

আঙ্গারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. জিল্লুর রহমান সোহরাব হোসেন নদীভাঙনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘পায়রা নদীর ভাঙনে বাহেরচর গ্রাম প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সাধ্যমতো খাদ্য সহায়তা এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধা প্রদান করা হবে, তবে তা সময়সাপেক্ষ।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর মো. এজাজুল হক জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করে সহায়তা প্রদান করা হবে।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, ‘ভাঙন এলাকার কাছে মেন্টেনেন্স প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। ভাঙন রোধকল্পে সমীক্ষার প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে, শিগগিরই সমীক্ষার কাজ শুরু হবে। সমীক্ষা রিপোর্ট অনুমোদন সাপেক্ষে প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।’