রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় নেপিয়ার ঘাস চাষে আগ্রহ বাড়ছে গরু খামারি ও কৃষকদের মধ্যে। গরুর খাদ্য ঘাটতি মেটাতে এবং অতিরিক্ত ঘাস বিক্রি করে বাড়তি আয় করতে এখন অনেকেই জমি ও রাস্তার ধারে এই ঘাস চাষ করছেন। চাষিরা জানান, নেপিয়ার ঘাস চাষে খরচ কম, ফলন বেশি এবং কয়েক বছর ধরে একই জমিতে ফলন পাওয়া যায়। এতে একদিকে যেমন গবাদিপশুর খাদ্যের চাহিদা মেটে, অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
উপজেলার ভাটপাড়া এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি কয়েক বছর ধরে ১ বিঘা জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করছি। এখন আর গরুর জন্য বাজার থেকে ঘাস কিনতে হয় না। নিজের গরুর প্রয়োজন মিটিয়ে বাড়তি ঘাস বিক্রি করে ভালোই লাভ হচ্ছে।’
উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের খোর্দ্দগোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক আকবর আলী বলেন, নেপিয়ার ঘাস লাগানোর ৩ মাস পর কাটার উপযোগী হয়। প্রতি তিন সপ্তাহ পর পর ঘাস কাটা যায়। প্রথম বছর ফলন কিছুটা কম হয় কিন্তু পরবর্তী ২-৩ বছরে ফলন বেড়ে যায়। বছরে সাধারণত ৫-৭ বার ঘাস কাটা যায়। গড়ে প্রতি বিঘায় বছরে ১০ মেট্রিক টন কাঁচা ঘাস পাওয়া সম্ভব।
উপজেলার হলিদাগাছী গ্রামের সবুর আলী বলেন, গবাদিপশুর জন্য নেপিয়ার ঘাস খুবই পুষ্টিকর খাবার। এ ঘাস খাওয়ালে অল্প দিনের মধ্যে গরু মোটাতাজা হয় এবং অধিক দুধ পাওয়া যায়।
উপজেলার মুংলী এলাকার কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, খামারে ২০টি গরু আছে। অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি গরুকে দিনে অনেক বেশি নেপিয়ার ঘাস খাওয়াতে হয়। এবং এই ঘাস খাওয়ার পর গরুর উজ্জ্বলতা ও গঠন ভালো হয় বলে তারা জানান। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, নেপিয়ার ঘাস বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এ ঘাস একবার চাষ করার পর কয়েক বছর ধরে ফলন পাওয়া যায়। এ ঘাস সব ধরনের মাটিতেই জন্মে। তবে বেলে দোআঁশ মাটিতে এর ফলন সবচেয়ে বেশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আল মামুন হাসান বলেন, বর্তমানে প্রায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ হচ্ছে। এ ঘাস ৪ ফুট থেকে সাড়ে ৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সরকার এনায়েত কবির বলেন, উপজেলায় প্রায় ৫০০ গরু খামার রয়েছে এবং ওইসব খামারিরা নেপিয়ার ঘাস চাষ করছেন। তিনি বলেন, নেপিয়ার ঘাস গরুর জন্য স্বাস্থ্যসম্মত। তাই খামারিরা গোখাদ্য হিসেবে নেপিয়ার ঘাস ব্যবহার করছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন