ঢাকা সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫

বেনাপোল-শার্শায় চড়া সবজির বাজার

বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ০১:৪৩ এএম

যশোরে বেনাপোল-শার্শায় শীতের আমেজ শুরু হলেও এখনো চড়া সবজির বাজার। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ ও পেঁয়াজ। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ভোক্তারা। তাদের দাবি, বাজারে স্বস্তি ফেরাতে নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। গতকাল রোববার বেনাপোল ও শার্শার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নানা কারণে দাম ক্রমেই বাড়ছে। শীতকালীন বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

পাইকারি সবজি বিক্রেতা মুজিবর রহমান বলেন, ‘আগাম শীতকালীন সবজি কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাজারে আছে এবং কিছুদিন আগে দাম কমতেও শুরু করেছিল। কিন্তু মাঝে বৃষ্টিপাতে অনেক ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে। তাই শীতকালীন বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে।’

খুচরা বিক্রেতা ফরহাদ আলী বলেন, পাইকারিতে দাম বেশি থাকায় খুচরায়ও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি এবং সার্বিক বাজার অস্থিরতার কারণে সবজির দাম এখনো স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরছে না।

বাজারে প্রতি কেজি পাতাকপি ৫০ টাকা, ফুলকপি ৭০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, ধনেপাতা ৩০০ টাকা, কচু ৫০ টাকা, ঢ্যাঁঢ়শ ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৪০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৪০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, পটোল ৩০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা ও পেঁপে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ প্রতি পিস ৩০-৪০ টাকা, প্রতি আঁটি পালং শাক ২৫ টাকা, লালশাক ২০ টাকা এবং প্রতি হালি লেবু ২০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। সপ্তাহ ব্যবধানে পেঁয়াজ ও রসুনের দামও বেড়েছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা এবং রসুন ১৪০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির ঊর্ধ্বমুখী দামে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোক্তারা। জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ক্রেতা বলেন, শীত মৌসুমের শুরুতে সাধারণত সবজির দাম হাতের নাগালে থাকে। কিন্তু চলতি বছর পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। দামে কোনো কমতির লক্ষণ নেই। আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলানো দিনদিন কঠিন হয়ে পড়ছে। সবজির পাশাপাশি মাছের দামও ক্রেতাদের কপালে নতুন করে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।

তবে মাছ বিক্রেতা জয় মৎস্য ভান্ডারের মালিক বিকাশ দেবনাথ বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ কম। সে কারণে গত কয়েক মাস ধরেই মাছের দাম বাড়তি। সহসা দাম কমার কোনো লক্ষণও নেই। অপর মাছ বিক্রেতা আবুল ফিসের মালিক আবুল হোসেন বলেন, মাছ কম থাকলে স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়ে যায়। শীত শুরু হওয়ায় মাছ ধরার পরিমাণ কমে গেছে, আর তার প্রভাব স্পষ্টভাবে পড়েছে বাজারে। বাজারে প্রতি কেজি পাবদা ৩৮০ টাকা, শিং ৪৪০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ টাকা, রুই ২৬০-৩৭০ টাকা, সিলভার কার্প ১৬০-২০০ টাকা এবং তেলাপিয়া ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ছোট চিংড়ি ৬০০ টাকা, বড় চিংড়ি ৮০০-১০০০ টাকা, কৈ ৪০০-৬০০ টাকা, চিতল ৬০০-৭০০ টাকা, বোয়াল ৭৫০-৯০০ টাকা ও আইড় ৭০০-৮০০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। আর ৩০০-৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতিকেজি ইলিশ ৬৫০-১৪০০ টাকা, চন্দনা ইলিশ ৩০০ টাকা, বড় কাতলা ৪৫০ টাকা, ভেটকি ৬৫০ টাকা, সামুদ্রিক পোমা ৪০০ টাকা, টুনা ৪০০ টাকা এবং ভাঙ্গুর ৬৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দেশি পুঁটি, টাকি, বাইনসহ বিভিন্ন ছোট মাছ ৪০০-৮০০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে কক মুরগি কেজিপ্রতি ২৫০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০-২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস এক হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে মিনিকেট চালের কেজি ৮০-৯০ টাকা, বাংলামতি ৮০ টাকা, চিনিগুঁড়া ১৫০ টাকা, নাজিরশাইল ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মসুর ডাল কেজিপ্রতি ১২২-১২৫ টাকা, আর আমদানি কার ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকায়।