লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে গরু আনতে গেলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে সবুজ (২৫) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। পরে বিএসএফ ওই যুবকের মরদেহ ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে জানা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে ৮৬৪ ও ৮৬৫ নম্বর পিলারের মাঝামাঝি ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সবুজ পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পচাভা-ার গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
বিজিবি ও এলাকাবাসী জানায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা থানার ফুলকাডাবরী গ্রামের খালপাড়া এলাকার বিপরীতে বাংলাদেশের জগতবেড় ইউনিয়নের পচাভা-ার সীমান্ত এলাকা। বুধবার গভীর রাতে উভয় দেশের সীমান্তের প্রধান পিলার ৮৬৪ নম্বরের ৫ নম্বর উপপিলারের কাছ দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের ৮ থেকে ১০ জন গরু পারাপারকারী গরু আনা-নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাংলাদেশি গরু পারাপারকারীরা ভারতীয় অংশের প্রায় ৩০ গজ অভ্যন্তরে চেনাকাটা সীমান্ত এলাকায় যায়। সেখানে ভারতের ১৬৯ কোচবিহার রাণীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের চেনাকাটা ক্যাম্পের টহলদলের সদস্যরা তাদের দেখে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে বাংলাদেশি যুবক সবুজ ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
বিষয়টি জানতে পেরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৬১ ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) শমসেরনগর ক্যাম্পের কমান্ডার ও টহলদল ঘটনাস্থলে যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চেনাকাটা ক্যাম্পের বিএসএফ কমান্ডারকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেয় শমসেরনগর বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার।
পরে সকালে ঘটনাস্থল সীমান্তের পাশে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী পতাকা বৈঠক হয়। এতে ভারতের চেনাকাটা কোম্পানি কমান্ডার ও বাংলাদেশের শমসেরনগর কোম্পানি কমান্ডারসহ উভয় দেশের ১০ জন করে সদস্য বৈঠকে অংশ নেন।
জগতবেড় ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য অহেদ আলী বলেন, শমসেরনগর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার রাত সাড়ে ৩টায় আমার মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে বলেনÑ বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি একজন গরু পারাপারকারী মারা গেছে। আপনি ঘটনাস্থলের কাছে আসেন। আমি অসুস্থ, এ জন্য যাইনি। সকালে সবুজদের বাড়িতে গিয়েছি, বাড়িতে তার মা, স্ত্রী কেউ নেই।
এ ব্যাপারে বিজিবি ৬১ ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) শমসেরনগর কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার কামাল উদ্দিন বলেন, বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকে গুলি করে বাংলাদেশি যুবক নিহতের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং মরদেহ ফেরত চাওয়া হয়েছে।
বিএসএফ জানিয়েছে, থানা পুলিশের কাছে মরদেহ দেওয়া হয়েছে, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দেওয়া হবে। এ ঘটনায় ওই সীমান্তে উভয় দেশের ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

